শিগগিরই দেশে চালু হচ্ছে পাঁচটি মোটরসাইকেল কারখানা। ডিসেম্বর ও আগামী বছরের জানুয়ারি নাগাদ এসব কারখানায় উৎপাদিত মোটরসাইকেল বাজারে আসতে পারে।
দেশে ভারতীয় বাজাজ ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনের কারখানা করছে উত্তরা মোটরস। জাপানের হোন্ডা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল কারখানা করছে বাংলাদেশ হোন্ডা লিমিটেড। এ ছাড়া ভারতীয় টিভিএস, মাহিন্দ্রা ও চীনা কিওয়ে ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনের কারখানাও করা হচ্ছে দেশে।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সঙ্গে দেখা করে গতকাল বুধবার মোটরসাইকেল শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা কারখানা করার এ তথ্য জানান। এ সময় তাঁরা আরও জানান, এসব কারখানা ছয় মাসের মধ্যে উৎপাদনে যাবে। অবশ্য পরে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে উৎপাদিত মোটরসাইকেল বাজারে আনতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।
অবশ্য উৎপাদনে যাওয়ার আগে মোটরসাইকেল শিল্পের প্রসারে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে বলেছেন তাঁরা। এর মধ্যে রয়েছে মোটরসাইকেলের নিবন্ধন ফি কমানো, মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকঋণের ব্যবস্থা করা, মোটরসাইকেলের সহযোগী শিল্প বা ভেন্ডরদের জন্য শিল্পপার্ক তৈরি ইত্যাদি।
শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলারস অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএএমএ) নেতারা শিল্প মন্ত্রণালয়ে আমির হোসেন আমুর সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় বিএমএএমএর সভাপতি ও উত্তরা মোটরসের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, বাংলাদেশ হোন্ডার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউশিরো ইশি ও অর্থ বিভাগের প্রধান শাহ মুহাম্মদ আশিকুর রহমান, টিভিএস অটো বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকে বিএমএএমএর নেতারা মোটরসাইকেল শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে "জাতীয় মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতি-২০১৮" প্রণয়নের জন্য শিল্পমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তাঁরা বলেন, এ নীতি প্রণয়নের ফলে দেশে উদীয়মান শিল্প খাত হিসেবে মোটরসাইকেল শিল্প আত্মপ্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যে এখানে কয়েক হাজার দক্ষ জনবল সৃষ্টির পাশাপাশি দেড় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এটি ১০০ কোটি ডলারের শিল্প খাতে পরিণত হবে।
মোটরসাইকেল উৎপাদক ও আমদানিকারকেরা জানান, ২০১৭ সালে দেশে ৩ লাখ ৮৭ হাজার মোটরসাইকেল বিক্রি হয়। প্রতিবছর বিক্রি ৩০ শতাংশের বেশি হারে বাড়ছে।
বাজাজের পরিবেশক উত্তরা মোটরস ট্রান্সএশিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে সাভারে নতুন কারখানা করছে। টিভিএসের কারখানা হচ্ছে ময়মনসিংহের ভালুকায়। ইতিমধ্যে তারা টঙ্গীর আউচপাড়ায় টিভিএস অটো বাংলাদেশ নামে যৌথ মালিকানাধীন একটি যন্ত্রাংশ সংযোজন কারাখানাও করেছে। হোন্ডা মোটর করপোরেশন মুন্সিগঞ্জে আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনে নতুন কারখানা করছে।
জানতে চাইলে হোন্ডা বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের প্রধান আশিকুর রহমান বলেন, দেশে ১১০ সিসির (ইঞ্জিন ক্ষমতা) একটি মোটরসাইকেলের দাম ১ লাখ টাকার নিচে নেমে এসেছে। কিন্তু নিবন্ধন ফি রয়ে গেছে ২১ হাজার টাকা। প্রতিবেশী দেশগুলোতে চার-পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে মোটরসাইকেল নিবন্ধন করা যায়।
সুত্র: প্রথম আলো