বাংলাদেশে পথচলার দুইচাকার কিংবদন্তী মোটরসাইকেল হিসেবে যদি কোন মোটরসাইকেলকে উল্লেখ করতে সেক্ষেত্রে অবশ্যই সবার উপরের দিকে নাম দিতে হবে বাজাজের বিখ্যাত মডেল সিরিজ “পালসারকে”। এই একটা মডেল শুরু থেকে নিয়ে এখন পর্যন্ত সকল শ্রেনীর বাইকারের মন জয় করে এসেছে তার আকর্ষনীয় এগ্রেসিভের মধ্যে মার্জিত লুক নিয়ে।
বলা বাহুল্য যে শুরুর দিকে পালসারের আকার বিশেষত ফুয়েল ট্যাংকারের আকার নিয়ে সবার অভিযোগ থাকার প্রেক্ষিতে প্রথম মডেল ছাড়া আর কোন মডেলেই সেই আকার দেওয়া হয়নি। পক্ষান্তরে পরবর্তীতে যে ডিজাইন এবং ডাইমেনশন দেওয়া হয় তা পালসারকে একরকম কালজয়ী একটা বাইকে পরিনত করে।
বর্তমান বাজারে পালসারের বিপরীতে কথা বলার বাইকার তেমন নেই বললেই চলে কারন পালসারের পারফরমেন্স, ফিচারস, আউটলুক, কালার কম্বিনেশন কোথাও অভিযোগ করার জায়গা নেই। আবার এই একই মডেলের আবার সিরিজে বিভক্ত হয়ে তার মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভার্সন হলো “বাজাজ পালসার ১৫০ টুইন ডিস্ক”।
২০০১ থেকে ২০২০ এই ১৯ বছরে পালসারের মুল মডেলের বেশ খানিকটা পরিবর্তন হয়েছে। একইসাথে ভিন্ন ভিন্ন ইঞ্জিনের বেশ কিছু মডেল বাজাজ থেকে বাইক প্রেমীরা পেয়েছে। আর প্রতিটা মডেল পালসার সেগমেন্টের প্রতিটা বাইকের প্রতিযোগি বাইকের জন্য সমান ভারী। আসলে পালসারকে জীবন্ত কিংবদন্তীতে ভুষিত করলে কোনকিছুই বেশি বলা হবে না আর আজ থেকে ১০০ বছর পরেও যদি ইন্ডিয়ান মোটরসাইকেল ইন্ড্রাস্ট্রির ইতিহাস লেখা হয় তখন হয়তো বেশ কিছু বাজাজ পালসারের দেখা মিলতেও পারে।
আমরা টিম মোটরসাইকেলভ্যালী বাজাজ পালসার রেগুলার মডেলের সর্বশেষ ভার্শন বাজাজ পালসার ১৫০ টুইন ডিস্কের এখন পর্যন্ত বহু সংখ্যক ক্রেতা এবং ব্যবজারকারীর মতামত তুলে ধরেছি যাথেকে আপনি বাজাজ পালসার টুইন ডিস্কের ব্যাপারে কাংক্ষিত সকল তথ্যই পাবেন তারপরেও আপনাকে সহজে জানানোর জন্যে আজকে আমরা তুলে ধরছি বাজাজ পালসার ১৫০ টুইন ডিস্কের ভাল এবং মন্দ সকল দিকসমুহ যা আমদের কাছে থাকা ব্যবহারকারীদের তথ্য পর্যালোচনা আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
বাজাজ পালসার টুইন ডিস্কের সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিকসমুহঃ
1. সবকিছুর আগে ক্রেতারা বা ব্যবহারকারীরা এই বাইকের যে আকর্ষনীয় বিষয়টা আমাদের বলেন তা হলো এই মোটরসাইকেল অসাধারন ডিজাইন এবং আউটলুক। তারা বলেন এতে এগ্রেসিভ একটা ভাব অবশ্যই আছে যা সাধারন মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা বেশিরভাগ সময় অপছন্দ করে কিন্তু পালসার টুইন ডিস্কে এই ব্যাপারটা এমনভাবে সাজানো হয়েছে যা সবাই ভাল বলতে বাধ্য হবে।
2. অসাধারন ইঞ্জিন পারফরমেন্স পালসারের শুধু টুইন ডিস্কের না বরং পালসার সিরিজের আরেকটি অসাধারন বৈশিষ্ট তবে এই বৈশিষ্ট সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই কাছের কারও পালসার ব্যবহার করতে হবে অথবা নিজের পালসার নতুন কেনার পর কিছুদিন ব্যবহার করলেই এই সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের থেকে পালসারের ইঞ্জিন পারফরমেন্সের পার্থক্য বুঝতে পারবেন যার ব্যাপারে আমাদের কাছে তথ্য দেওয়া সকলেই একমত।
3. যেহেতু এই মডেল হলো টুইন ডিস্ক, তাই কন্ট্রোল নিয়ে কারও কোনরকম অভিযোগ নেই বরং সবাই এদিক দিয়ে অনেক সন্তুষ্ট। যেকোন অবস্থায়, যেকোন রাস্তায়, যেকোন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখলে খুব সহজেই এই বাইকের ওপর নিয়ন্ত্রন রাখা সম্ভব বলেই সবাই মত দিয়েছেন।
4. অন্যদিকে টুইন ডিস্ক আগের পালসারের থেকে অনেক বেশি আরামদায়ক। স্প্লিট সিটিং পজিশন হউয়ার কারনে দুইজনের বেশি তিনজন নেওয়ার কোন সুযোগও নাই। একইসাথে এই পালসারের সাসপেনশন রোড এবং অফ রোড দুই জায়গাতেই বেশ ভাল সাপোর্ট দিয়ে থাকে। এই বাইকে অনেক আপডেট টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে যা চলার পথে বেশ ভাল গ্রিপ দেয়।
অন্যদিকে বাজাজ পালসার টুইন ডিস্ক মডেলের খারাপ দিক নিয়েও আমাদের অনেক তথ্য জানিয়েছেন এই বাইক ব্যবহারকারীরা। তার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হলঃ
1. ইন্সটল দেওয়া হেডলাইটটাকে কোনভাবেই ভাল বলতে পারেনি আমাদের বেশিরভাগ তথ্যদাতা। কিছুদিন এই হেডলাইট ব্যবহার করার পর প্রায় সকলেই বদলে নিয়েছেন।
2. ইঞ্জিন পারফরমেন্স অবশ্যই ভাল তবে নতুন অবস্থায় ইঞ্জিনটা অনেক বেশি গরম হয় যা কোনভাবেই কারও কাছে স্বাভাবিক মনে হয় না আর এই সমস্যাটা শুধু দেখা যায় নতুন পালসার ১৫০ টুইন ডিস্কে সাথে বেশি গতিতে অনেকে ভাওব্রেশন ফিল করেছেন অনেকেই।
3.ব্যাটারীর স্থায়ীত্ব এবং ক্ষমতা অর্থাৎ ব্যাটারীর মান নিয়েও বেশিরভাগ তথ্যদাতার অসন্তুষ্টি রয়েছে।
সর্বোপরি ভাল এবং খারাপের তুলনামুলক আলোচনা করলে আমরা দেখতে পায় যে বাজাজ পালসার ১৫০ টুইন ডিস্কের খারাপ দিকে যে সমস্ত বিষয়গুলা এসেছে তা খুবই নগন্য এবং আপনি যদি নিরপেক্ষভাবে বাজাজ পালসার টুইন ডিস্ককে বিচার করেন তবে এই সমস্যাগুলাকে আপনার কাছে স্বাভাবিক বলেই মনে হবে।
কারন হিসেবে আমরা বলতে পারি যে, দাম অনুযায়ী এই সেগমেন্টের প্রতিটা বাইকেই কিছু না কিছু সমস্যা আমরা পাবো। সেদিক দিয়ে আপনি আপনার জন্যে বাইক কিনতে চাইলে বাজাজ পালসার টুইন ডিস্ক মনে কোন সংকোচ না রেখেই কিনতে পারবেন।