দেশের বাজারে ১২৫ সিসি সেগমেন্টটা অনেক কম্পিটিটিভ একটা সেগমেন্ট। ১২৫ সিসির একটি বাইক কেনার পিছনে অনেকগুলো কারণ থাকে। আপনি যদি সাধ্যের মধ্যে ভালো মাইলেজ সুলভ বাইক চান যেটি প্রত্যহ যাতায়াতের জন্য ভালো সার্ভিস দিবে এবং আপনার লং ট্যুরও তেমন দেওয়ার দরকার পড়েনা; তাহলে আপনি ১২৫ সিসির কোন বাইক নির্ব্দিধায় কিনতে পারেন।
বাজারে ১২৫ সিসির অনেক ভ্যারাইটির বাইক পাওয়া যায়। এটিও বিরাট একটি প্লাস পয়েন্ট। আপনি স্পোর্টস,নেকড,কাস্টম যেকোন টাইপের বাইক এই সেগমেন্টে পাবেন। বেশিরভাগ রাইডারই ১২৫ সিসি বাইকের ফুয়েল ইকোনোমি পছন্দ করেন। ছোটখাটো ইন্জিন থাকা সত্ত্বেও আপনি আপনার পছন্দের স্টাইলের বাইক এই সেগমেন্টে পাবেন। তবে আপনি যদি লং জার্নিতে যাওয়ার প্ল্যান থাকে, স্পেশালি ট্যুরের প্ল্যান থাকে এবং বিভিন্ন জিনিস আপনার বহন করতে হয় তাহলে এই বাইকগুলো আপনার না কেনাই ভালো হবে। এই বাইকগুলোর পাওয়ার আউটপুট বেশি থাকে না এবং বেশী স্পিডে এই বাইকগুলোতে তেমন স্ট্যাবিলিটি পাওয়া যায়না।
১২৫ সিসি বাইকের সুবিধা
তুলনামূলক কম ফুয়েল লাগে
সহজে মেইনটেইন করা যায়
একটু নিন্মমানের রাস্তাতেও ভালোভাবে ম্যানেজ করা যায়
প্রত্যহ ছোটখাটো দূরত্ব অতিক্রমের জন্য ভালো
১২৫ সিসি বাইকের অসুবিধা
ইন্জিন তুলনামূলক ছোট, এটা অনেকটা ছোট হার্ট থাকার মতো। সুতরাং এই বাইকে লং ট্রিপ হাই স্পিডে দেওয়া যায়না।
আপনার যদি প্রতিনিয়ত লম্বা দূরত্ব অতিক্রম করা দরকার হয় তাহলে এই বাইকগুলো না কেনাই ভালো।
যেহেতু এই বাইকগুলো ওজনে হালকা এজন্য মাঝে মাঝে বড় বাহনগুলো ওভারটেক করলে যে ফোর্সটা আসে সেটির জন্য বাইক ভারসাম্যহীন হতে পারে। এজন্য বাইকটিকে ভালোভাবে ম্যানেজ করতে হয়।
মোটরসাইকেল ভ্যালী নির্বাচিত সেরা ৫ টি বাইক:
বিভিন্ন রাইডারের বাইক কেনার পিছনে বিভিন্ন প্রায়োরিটি সেট করা থাকে। সুতরাং আপনি আপনার বাইকে কি কি দিক প্রাধান্য দিয়ে নিবেন সেটি আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। যদিও এই সেগমেন্টের বাইকগুলো দাম বিবেচনায় ব্যাপক সার্ভিস দিয়ে থাকে তবুও কাস্টমারদের কাছে প্রধান বিষয়টিই থাকে বাইকগুলো কতটা ভ্যালু ফর মানি। এই রেঞ্জের কাস্টমাররা তাদের বাইকে ভালো ডিজাইন, মানানসই পারফরম্যান্স, বেশি মাইলেজ এবং লেটেস্ট ফিচারের একটা ব্যালেন্সড বাইক সহনীয় দামে দেখতে চান। তবে এই প্রাইসে কোম্পানি গুলোকে কিছু জায়গায় ছাড় দিয়েই বাইক ম্যানুফ্যাকচার করতে হয়।
তাই এই সেগমেন্টে সেরা বাইক চয়েস করা আসলেই কষ্টসাধ্য।
তবে আপনাদের জন্য মোটরসাইকেল ভ্যালি এই সেগমেন্টে প্রাইস টু পারফরম্যান্স,মাইলেজ,ডিজাইন, ব্র্যান্ড ভ্যালু,সার্ভিসিং ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় সেরা ৫ টি বাইক নিয়ে এসেছে।
এঁদের মধ্যে আপনার প্রায়োরিটির বিবেচনায় আপনি আপনার জন্য সেরা বাইকটি বেছে নিন।
বাজাজ ডিস্কভার ১২৫:
বাজাজ ডিস্কভার ১২৫ বাইকটির জানুয়ারি ২০২৩ এ বাংলাদেশে দাম ১৫৩,০০০.০০ টাকা। এই বাইকটি মূলত জনপ্রিয় তাদের রিজনেবল প্রাইস এবং ওভারঅল সার্ভিসের জন্য । বাংলাদেশে বাজাজের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শো-রুম আছে এজন্য এভেইলিবিলিটিও অন্য যেকোন কোম্পানির চেয়ে ভালো। এই বাইকের ভালো দিকগুলো হল:
১. ভালো ব্যালেন্স
২.শক্তিশালী ইঞ্জিন
৩.এক্সেলেন্ট ব্রেকিং
৪.ইফেক্টিভ সাসপেনশন
৫.বেশী ওজন না
খারাপ দিক:
১.লং ড্রাইভের জন্য ভালো না।
২.বেশি স্পিডে ভাইব্রেশন পাওয়া যা
৩. চেইন লুজ
৪.সেল্ফ স্টার্টে সমস্যা
মতামত: আপনি যদি পারফরম্যান্স, মাইলেজ এবং সার্ভিসিং কে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু অথবা লেটেস্ট স্টাইলিশ ডিজাইন আপনার কাছে মুখ্য বিষয় না হয় তাহলে আপনি নিঃসন্দেহে বাজাজ ডিস্কভার ১২৫ সিসি বাইকটি নিতে পারেন।
হোন্ডা শাইন এসপি:
হোন্ডা শাইন এসপি বাইকের দাম বাংলাদেশের বাজারে ১৪৪,৫০০.০০ টাকা।এই বাইকটির ভালো ইঞ্জিন এবং স্টাইলিশ ডিজাইন রয়েছে।এই বাইকটি ১২৫ সিসির বেশিরভাগ বাইক থেকে দেখতে সুন্দর।এই বাইকটির ভালো দিকগুলো হল:
১. সিটিং পজিশন,ভালো কাঠামো এবং হ্যান্ডেলবার মিলে বাইকটির জন্য পারফেক্ট ব্যালেন্স তৈরি করে।
২.ইন্জিন পারফরম্যান্স স্মুথ
৩.ফ্রন্ট এবং রেয়ারের ব্রেকিং সিস্টেম যথেষ্ট ভালো
৪. কম মেইনটেনেন্স খরচ
খারাপ দিক:
১. ওয়েট ব্যালান্সে সমস্যা
২. বড় দূরত্বের জন্য ভালো না
৩.বডি প্যানেলের তুলনায় টায়ার সেকশন যথেষ্ট ছোট
মতামত:
আপনি যদি এডভ্যান্সড টেকনোলজি এবং স্টাইলিশ ডিজাইনকে প্রাধান্য দেন তাহলে এই বাইকটিকেও আপনি নিতে পারেন।
হিরো গ্ল্যামার:
হিরো গ্ল্যামার বাইকটির প্রাইস দেশের বাজারে ২০২৩ এর জানুয়ারিতে ১১৮,৭৪০.০০ টাকা। এই বাইকটি ওভারঅল ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে এবং এর ডিজাইনটিও বোল্ড।
এই বাইকটির ভালো দিকগুলো হল:
১.ভালো মাইলেজ
২.বাজেট কেন্দ্রীক
৩. সুন্দর বিল্ড কোয়ালিটি
৪.ইফেক্টিভ সাসপেনশন
খারাপ দিক:
১. হাই স্পিডে ভাইব্রেশন সমস্যা
২.সেল্ফ স্টার্টে সমস্যা
৩.চিকন রেয়ার টায়ার
মতামত: আপনি যদি বিল্ড কোয়ালিটি, বাজেট এবং মাইলেজ নিয়ে চিন্তিত হন তাহলে এই বাইকটিও আপনার জন্য ভালো চয়েস হবে।
ইয়ামাহা স্যালুটো এসই
ইয়ামাহা স্যালুটো এসই বাইকটির বাংলাদেশের বাজারে জানুয়ারি ২০২৩ দাম ১৪০,০০০.০০ টাকা। এই বাইকটি মূলত তার মাস্কুলার ডিজাইন, পাওয়ারফুল ইন্জিন এবং লেটেস্ট টেকনোলজি ব্যবহারের জন্য জনপ্রিয়। এই বাইকটির ভালো দিকগুলো হল:
১.শক্তিশালী ইন্জিন পারফরম্যান্স
২.পারফেক্ট গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স
৩.কমফোর্টিবিলিটি
৪.ইফেক্টিভ ব্রেকিং
৫.হাই স্পিডে ভালো ব্যালেন্স
খারাপ দিক:
১.তুলনামূলক স্লো এক্সেলেরেশন
২.খারাপ হেডল্যাম্প
৩.চিকন রেয়ার টায়ার
৪.সিটিং পজিশন একটু বেশী উঁচু
মতামত: আপনি যদি ব্র্যান্ড ভ্যালু খুঁজে থাকেন তাহলে ইয়ামাহা স্যালুটো বাকি সব বাইক থেকে আলাদা। এর ডিজাইনটিও ইউনিক এবং আকর্ষণীয় লাগে। এটি ভালো মাইলেঝও দিয়ে থাকে। সুতরাং মাইলেজ, ডিজাইন এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু আপনার প্রধান বিষয় হলে ইয়ামাহা স্যালুটো আপনি চোখ বন্ধ করে নিতে পারেন।
টিভিএস স্ট্রাইকার:
টিভিএস স্ট্রাইকার বাইকটির দাম জানুয়ারি ২০২৩ এ ১২৮,৬৩২.০০ টাকা। এই বাইকটি ভালো পারফরমেন্স দিয়ে থাকে। এটিরও মাস্কুলার ডিজাইন রয়েছে যা সকল শ্রেণীর মানুষের কাছেই ভালো লাগে। এই বাইকটির ভালো দিকগুলো হল:
১.সলিড ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি
২.কমফোর্টেবল সিটিং পজিশন
৩.শক্তিশালী ইন্জিন
৪.কন্ট্রোল এবং ব্রেকিং যথেষ্ট ভালো
৫.কম মেইনটেনেন্স খরচ
খারাপ দিক:
১.মাইলেজ খুব একটা ভালো না
২. চেইন সেট ল্যুজ হয়ে যায়
৩. উচ্চগতিতে ভাইব্রেশন হয়
৪.ওয়েট ডিস্ট্রিবিউশন ভালো না
মতামত: আপনার যদি মাইলেজ নিয়ে কোন সমস্যা না থাকে এবং ডিজাইন এবং পারফরম্যান্সই প্রধান বিষয় হয় তাহলে আপনি এই বাইকটি নিতে পারেন।
এখানে ১২৫ সিসির আরোও কিছু বাইক আছে এই বাইকগুলোও দেখতে পারেন।
মাইলেজে সেরা বাইকগুলো:
Hero Ignitor 125 - 62 Km\L
Hero Glamour- 60 KM\L
Hero Glamour BS4- 55 KMPL
Bajaj Discover 125- 55 KMPL
Honda CB Shine SP- 60 KMPL
Yamaha Saluto SE- 65 KMPL
Runner Turbo v2- 50 KMPL
TVS Stryker-- 49 KMPL
স্পোর্টস সেগমেন্টে বাইক:
KTM RC 125 Bike Price in BD- Tk 487,000.00
Suzuki GSX 125 Tk 141,950.00
Yamaha R125
Kawasaki Z125 ABS
Race GSR 125
Race Hyosung GT125
Race Hyosung GTR 125
KTM Duke 125
KTM RC 125
Kawasaki Z125 PRO
Kawasaki Ninja 125
Keeway RKS 125
Kawasaki Z125
Aprilia RS4 125
পরিশেষে আমরা বলতে চাই যেখানেই যান না কেন, হেলমেট ব্যবহার করুন। হ্যাপি রাইডিং।