আমাদের দেশে বর্তমানে সিসি লিমিট হচ্ছে ১৬৫সিসি পর্যন্ত। একটা সময় ছিল যখন আমাদের দেশে সিসি লিমিট ছিল ১৫০সিসি। তখন অনেক কোম্পানি তাদের ১৫০সিসির বাইক বাজারে নিয়ে এসে ছিলো। বাংলাদেশ সরকার যখন ১৬৫সিসি পর্যন্ত সিসি লিমিট করল তখন অনেকগুলো কোম্পানির বাইক বাংলাদেশের বাজারে এসেছে। যে সকল বাইকের ১৬০ বা ১৬৫সিসি ভেরিয়েন্ট রয়েছে সেগুলো সবগুলোই বাংলাদেশের মার্কেটে এখন পাওয়া যাচ্ছে। খেয়াল করলে দেখা যাবে যে আমাদের দেশে ১৫০ থেকে ১৬৫সিসি বাইকের চাহিদা তরুণ প্রজন্মের কাছে একটু বেশি কারণ কোম্পানি চেষ্টা করে যে ১৫০ থেকে ১৬০সিসির মধ্যে বাইক গুলো ভালো মানের ফিচারস এবং আকর্ষণীয় ডিজাইন করা। কোম্পানির বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বাইকগুলো বাজারে নিয়ে আসে। আজকে আমরা টিম মোটরসাইকেলভ্যালী আপনাদের সাথে সেরা ১৬৫ সিসি বাইক নিয়ে আলোচনা করব। আমরা যে তথ্য গুলো আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করব সেগুলো আমাদের ওয়েব সাইটে সম্মানিত ইউজার রিভিউ দাতারা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন এবং আমরা টিম মোটরসাইকেলভ্যালী আপনাদের জন্য চেষ্টা করেছি সেরা ১৬৫সিসি বাইক তুলে ধরতে। কোন কোন ১৬৫সিসির বাইক আমাদের দেশে রয়েছে সেগুলো কেমন, তাদের ফিচারস কি কি আছে ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
Lifan KPR 165R Carburetorলিফান কেপিআর সিরিজ বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয়। ১৫০সিসির মধ্যে কম বাজেটে এরকম স্পোর্টস বাইক অন্য কোনো ব্র্যান্ডের খুব কমই দেখা যায়। লিফান গ্রাহকদের নিশ্চিত করে সেরা মান এবং সেরা বাজেট। ১৫০ সিসি লিফান কেপিআর দিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করার পর লিফান বাংলাদেশের বাজারে সরবরাহ করে ১৬৫সিসি লিফান কেপিআর বাইক। বাইকের অনেক গুলো ভেরিয়েন্ট রয়েছে তার মধ্যে কার্বুরেটর ভেরিয়েন্ট আমাদের ব্যবহারকারীরা বেশি পছন্দ করেছেন এবং ব্যবহারকারীরা সবাই সন্তুষ্ট। লিফান কেপিআর ১৬৫ কার্বুরেটর বাইকে ব্যবহার করা হয়েছে ১৬৫সিসি সিঙ্গেল সিলিন্ডার, 4-stroke, লিকুইড গোল্ড ইঞ্জিন যার ম্যাক্স পাওয়ার ১৬.৮বিএইচপি @৮০০০ আরপিএম এবং ম্যাক্স টর্ক ১৬.৮ এনএম @৬৫০০ আরপিএম। লিফান দাবি করে যে ইঞ্জিন থেকে মাইলেজ পাওয়া যাবে ৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার। আমাদের সম্মানিত ইউজাররা এই বাইক থেকে মাইলেজ পাচ্ছেন বর্তমানে ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটার। আরও যে ফিচারস গুলো রয়েছে তেল ধারণ ক্ষমতা ১৪ লিটার, ডাবল ডিস্ক ব্রেকিং, ডিজিটাল ও এনালগ মিটার, সামনে ৯০/৯০-১৭ এবং পেছনে ১৩০/৮০-১৭ সেকশনের টায়ার।
Lifan KPR 165R Carburetor বাইকের দাম ১,৯৯,০০০ টাকা।
Benelli 165Sবেনিলি বাংলাদেশে তাদের অবস্থান শক্তপোক্ত করে বেনিলি ১৫০ বাইক দিয়ে। এর পরে আসে বেনেলি ১৬৫এস। ফ্যাশনেবল ডিজাইন এবং লেটেস্ট ফিচারস এর দিক থেকে বেনেলিকে পিছনে ফেলে রাখা যায়না। নতুন বেনেলি ১৬৫এস বাইকটি ডিজাইন করা হয়েছে শহরাঞ্চলের ব্যাস্ত রাস্তাগুলির সাথে সাথে অন্যান্য যে কোন রাস্তার জন্য। সুন্দর, এবং লেটেস্ট ফিচার সম্বৃদ্ধ এই বাইকটির মাধ্যমে বেনেলি এক নতুন ধারার স্টাইলিশ বাইকের ধারণা দিয়েছে। এই বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৬৪.৭সিসি, সিঙ্গেল-সিলিন্ডার, ফোর-স্ট্রোক, ফোর-ভালভ, ওয়াটার কুলিং ইঞ্জিনের সাথে যোগ হয়েছে ইএফআই, ৩ স্পার্ক প্লাগ বিশিষ্ট এসওএইচসি সিস্টেম যা ইঞ্জিনকে তীব্র কর্মক্ষমতা প্রদান করে।।এই ইঞ্জিনটি ১৪০ কিলোওয়াট @ ৭০০০ আরপিএম ম্যাক্স টর্ক এবং ১৩.৩ এনএম @ ৯৫০০ আরপিএম ম্যাক্স পাওয়ার সরবরাহ করতে সক্ষম। আমাদের সম্মানিত ইউজাররা মাইলেজ পাচ্ছেন বর্তমানে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটার।
Benelli 165S বাইকের দাম ২,২৫,৫০০টাকা।
FKM Street Fighter 165 SFএফকেএম জার্মানী একটি ব্র্যান্ড। বাংলাদেশের বাজারে যে কয়েকটি তাদের বাইক রয়েছে তাদের মধ্যে একটি হল এই এফকেএম স্ট্রীট ফাইটার ১৬৫এসফ। এফকেএম এর বাংলাদেশের একমাত্র পরিবেশক হচ্ছে স্পীডোজ লিমিটেড। স্পীডোজ লিমিটেড বাংলাদেশের বাইক প্রেমীদের কাছে খুবই পরিচিত একটি ব্র্যান্ড। বাইকটিতে আধুনিক ডিজাইন দেওয়া হয়েছে যা বাজারে বিদ্যমান অন্যান্য বাইকের থেকে ডিজাইনের দিক দিয়ে কিছুটা হলেও ভিন্নতা প্রকাশ পায়। সামনের কালো এলয় রিম থেকে শুরু করে পেছনের হলুদ এলয় রিম পর্যন্ত রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। এফকেএম ব্যবহার করেছে ১৬৪সিসির এয়ারকুল্ড, ৪ স্ট্রোক, সিংগেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন যা ম্যাক্স পাওয়ার ১৫ বিএইচপি @৮০০০ আরপিএম এবং ম্যাক্স টর্ক ১৪.৫ এনএম @ ৭৫০০ আরপিএম সরবরাহ করে। এফকেএম কোম্পানী দাবি করে যে তাদের এই বাইকটির টপ স্পীড ১২০কিমি প্রতি ঘণ্টা এবং ৪৫ কিমি প্রতি লিটারে মাইলেজ সরবরাহ করতে পারবে। আমাদের সম্মানিত ব্যবহারকারীরা এই বাইক থেকে মাইলেজ পাচ্ছেন ৩৫ থেকে ৪০ কিমি প্রতি লিটার।
FKM Street Fighter 165 SF বাইকের দাম ১,৮৯,৯০০ টাকা।
GPX Demon GR165Rথাইল্যান্ডের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড জিপিএক্স সদ্য বাংলাদেশের বাজারে তাদের বাইক নিয়ে এসেছে যার নাম জিপিএক্স ডিমোন জিআর ১৬৫আর। এই বাইকটি টার্গেট করে নিয়ে আসা হয়েছে স্পোর্টস বাইক লাভারগনদের জন্য। সামনে থেকে শুরু করলে দেখা যায়, এর ডুয়াল স্প্লিট হেডল্যাম্প এবং লম্বাকার উইন্ড শীল্ডটি এই বাইকটিকে সম্পূর্ন স্পোর্টস বাইকের ধারণা দেয়। মাঝের অংশের দিকে তাকালে এই বাইকের বিশালাকার ফুয়েল ট্যাঙ্কার যা স্টাইলিশ কীট দ্বারা আবদ্ধ, সেই সাথে স্পোর্টি স্প্লীট সীট এই বাইকটিকে আকর্ষনীয় করে তুলেছে। প্রশস্ত ডিস্ক ব্রেক, স্পোর্টি এক্সহস্ট, প্রশস্ত র্যাডিয়াল টায়ার সবকিছুই চোখ ধাঁধানো। ইঞ্জিনে রয়েছে, ১৬৪.৪সিসি ৪-স্ট্রোক, ১ সিলিন্ডার, ২ ভালভ, এসওএইচসি ইঞ্জিন সেই সাথে লিকুইড কুলিং সিস্টেম এবং উন্নত EFi টেকনোলোজি। এই ইঞ্জিনটি ১৭.৮ বিএইচপি @ ৯০০০ rpm সর্বোচ্চ শক্তি এবং ১৬.০এনএম @ ৬৫০০ rpm সর্বাধিক টর্ক উৎপাদন করতে পারে। এই পাওয়ারের সাথে বাইকটি ৪ সেকেন্ডে ০-৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতি উঠাতে সক্ষম। এই বাইক থেকে আমাদের সম্মানিত ইউজাররা মাইলেজ পেয়েছেন ৩৮ থেকে ৪২ কিমি প্রতিলিটার।
GPX Demon GR165R বাইকের দাম ৩,৫৯,৯০০ টাকা।
Runner Bolt 165Rরানারের সব থেকে বড় বিষয়, তারা হচ্ছেন স্বদেশী বাইক প্রস্তুত কারক। রানার চেষ্টা করে থাকে তাদের বাইকের মানের সাথে দামের সংমিশ্রণ রাখতে। রানার বোল্ট ১৬৫আর হচ্ছে রানারের জনপ্রিয় একটি বাইক। এই বাইকের স্পেশাল ফিচারস হিসেবে রয়েছে ডুকাটি স্টাইল বডি ফ্রেম, Upside-down সাস্পেনশন, আকর্ষনীয় আধুনিক ফিচারস, সর্বাধিক সুবিধসহ সুলভ মূল্য, সামনের চাকায় বড় ডিস্ক প্লেট, স্টাইলিশ Under body একশস্ট পাইপ, টিউবলেস টায়ার, ডুয়াল ডিস্ক ব্রেক। ১৬৫সিসি বোল্ট আর বাইকের জন্য রানার সেরাটি দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এই বাইকটি ১৬৪.৭৪সিসি সিঙ্গল সিলিন্ডার ৪স্ট্রোক এয়ার কুলড ইঞ্জিনের সাথে নিয়ে আসা হয়েছে, যা ১৩.২ বিএইচপি @ ৭৫০০ আরপিএম সর্বাধিক শক্তি এবং ১৪এনএম @ ৭৫০০ আরপিএম। রানার দাবি করে থাকে এই বাইকটি ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা সর্বোচ্চ গতি তুলতে সক্ষম। সামনের টায়ার ১০০ / ৮০-১৭ এবং পেছনের টায়ার ১৩০ / ৭০-১৭। এই বাইক থেকে আমাদের ইউজার রিভিউ দাতারা মাইলেজ পেয়েছেন ৩৫ থেকে ৪০ কিমি প্রতিলিটার।
Runner Bolt 165R বাইকের দাম ১,৬৯,০০০ টাকা।
Roadmaster Rapido 165 রোডমাস্টার রেপিডো ১৬৫ হচ্ছে আকর্ষণীয় ডিজাইনের একটি বাইক। রোড মাস্টার বাংলাদেশে এই প্রথম আকর্ষণীয় ডিজাইনের ধারণা নিয়ে এই রেপিডো বাইকটি বাজারজাত করেছে। এই বাইকের আকর্ষণীয় ডিজাইনের সাথে রয়েছে আকর্ষণীয় ইঞ্জিন ফিচারস সেই সাথে সহনীয় দাম তো রয়েছেই। ১৬৫সিসি এয়ার কুল্ড ইঞ্জিনের শক্তি অনেক বেশি। আমাদের সম্মানিত ইউজার রিভিউ দাতারা এই বাইকটির ডিজাইন সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেছেন। এই বাইক থেকে ইউজাররা মাইলেজ পাচ্ছেন ৩৫-৪০কিমি প্রতিলিটার গড়ে।
Roadmaster Rapido 165 বাইকের দাম ১,৮৪,৯০০ টাকা।
FKM Street Scrambler 165 SXএফকেএম ব্রান্ডের আরেকটি জনপ্রিয় বাইক হচ্ছে এফকেএম স্ট্রীট স্ক্রাম্বেলার ১৬৫এসএক্স। এই বাইকটির ডিজাইন ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অদ্বিতীয় এবং আকর্ষণীয়। যে কোন বাইক প্রেমি এই বাইকের ডিজাইন প্রথম দর্শনেই খুব পছন্দ করবেন। আমাদের দেশের বাজারে বাইকারদের ভিন্নধর্মী বাইকের স্বাদ দিতে এই বাইকটি এফকেএম বাজারজাত করেছে। বাইকের স্পেশাল ফিচারসহ রয়েছে ইউনিক ডিজাইন, সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম, ইলেক্ট্রিক্যাল এলিডি ফিচারস, মোবাইল কানেটিভিটি, এক্সজস্ট সাউন্ড ইত্যাদি। আমাদের সম্মানিত ইউজার রিভিউ দাতারা এই বাইক থেকে মাইলেজ পেয়েছেন ৩৮-৪৩ কিমি প্রতিলিটার। এফকেএম স্ট্রীট ফাইটার ১৬৫এসএফ ও এফকেএম স্ট্রীট স্ক্রাম্বেলার ১৬৫এসএক্স বাইকের ইঞ্জিন ফিচারস একই
FKM Street Scrambler 165 SX বাইকের দাম ১,৯৯,৯০০ টাকা।Generic Caferacer 165ccবাংলাদেশের বাজারে সেরা ক্যাফে রেসার বাইকের মধ্যে প্রথম সারির দিকে রয়েছে জেনেরিক ক্যাফে রেসার ১৬৫। এই বাইকের ডিজাইন সম্পুর্ন ক্যাফে রেসার বাইকের আদলে করা যার কারনে যারা ক্যাফে রেসার বাইক প্রেমি আছেন তারা এই বাইকটিকে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। ইঞ্জিনে ব্যবহার করা হয়েছে ১৬৪সিসি সিংগেল সিলিন্ডার, ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিন যা ম্যাক্স পাওয়ার ১৫বিএইচপি@ ৮০০০আরপিএম এবং ম্যাক্স টর্ক ১৪.৫ এনএম @ ৬০০০ আরপিএম সরবরাহ করে। আমাদের সম্মানিত ইউজার এই বাইক থেকে মাইলেজ পাচ্ছেন ৩৫ থেকে ৪০ কিমি প্রতিলিটার।
Generic Caferacer 165cc বাইকের দাম ১,৯৫,৯০০ টাকা।আমরা টিম মোটরসাইকেলভ্যালী আপনাদের সাথে এতক্ষন যে বাইকগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি সেই বাইকগুলো আমাদের দেশে জনপ্রিয় ১৬৫সিসির বাইক এবং এইসকল বাইকের চাহিদাও বেশি দেখা যায়। ১৬৫সিসির মধ্যে কোন কোন বাইক আমাদের সম্মানিত ইউজারদের কেমন মাইলেজ দিচ্ছে এবং তাদের ফিচারস ও দাম আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আমাদের এই আর্টিকেল আপনাদের জন্য সহায়ক হবে।