বাইকের সিলিন্ডার! সিঙ্গেল সিলিন্ডার! ডাবল সিলিন্ডার! কী বাইকার বন্ধুরা নামগুলো চেনা লাগছে না? কিন্তু জানেন কি, যে বাইকের সিলিন্ডার আসলে কী? সমস্যা নাই আমাদের সাথেই থাকুন এবং আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ুন কারন আজ আমরা টিম মোটরসাইকেলভ্যালী আলোচনা করবো বাইকের সিলিন্ডার নিয়ে। তো চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
সকল জ্বালানী দ্বারা চালিত ইঞ্জিনে সিলিন্ডার হয়ে থাকে। সিলিন্ডারের মধ্যেই ইঞ্জিনের প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন হয়। আর এই প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে ইঞ্জিনে এক বা একের অধিক সিলিন্ডার থাকে। আজ আমরা শুধু মোটর বাইকের সিলিন্ডার নিয়ে আলোচনা করব।
সিঙ্গেল সিলিন্ডার:
১. ইঞ্জিনে একটি মাত্র সিলিন্ডার থাকবে এবং পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে ওই সিলিন্ডারের মধ্যে।
২. ৮০-৫০০ সিসি পর্যন্ত বাইকে এই সিঙ্গেল সিলিন্ডার থাকে।
৩. সিঙ্গেল সিলিন্ডার তৈরির খরচও কম আবার এই ইঞ্জিন তৈরি করাও সহজ।
৪. মাইলেজ বেশ ভালো পাওয়া যায়।
ডাবল সিলিন্ডার:
১. এখানে দুইটি সিলিন্ডার থাকে ইঞ্জিনের মধ্যে।
২. ইঞ্জিনের প্রক্রিয়াগুলো আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যাকটি সিলিন্ডারে সম্পন্ন হয়ে শক্তি উৎপাদন করে।
৩. ৫০০+সিসির বাইকগুলোতে এই ডাবল সিলিন্ডার যুক্ত ইঞ্জিন থাকে।
৪. বেশি সিসি হবার কারনে বাইকগুলোর ইঞ্জিনের কম্পন কমাতে এবং স্মুথ পারফরম্যান্স পেতে সিঙ্গেল সিলিন্ডারের বদলে ডাবল সিলিন্ডার স্থাপন করা হয়।
সিঙ্গেল আর ডাবল সিলিন্ডারের পার্থক্য: বাইকের সিসি বেশি হলে সেই ইঞ্জিনে শক্তিও বেশি প্রয়োজন। কিন্তু সিঙ্গেল সিলিন্ডার সেই শক্তি উৎপন্ন করতে কিছুটা সময় নেয়। এতে বাইকে কম্পন শুরু হয় আর ইঞ্জিন পারফরম্যান্স তেমন ভালো পাওয়া যায় না। কিন্তু সেই যায়গাই ডাবল সিলিন্ডার থাকলে ১ম সিলিন্ডার শক্তি প্রদান করার সাথে সাথে ২য় টির শক্তিও জেনারেট হয়ে যায়। যার কারনে ইঞ্জিনে ভাইব্রেশন হয় না। কিন্তু বলে রাখা ভালো যে, সিঙ্গেল আর ডাবল সিলিন্ডার থেকে একই পরিমান শক্তি জেনারেট হয়।
সাধারনত আমাদের দেশের মোটরসাইকেলগুলোর ইঞ্জিনে সিঙ্গেল সিলিন্ডার যুক্ত থাকে। কিন্তু বাইরের দেশের হাই সিসির বাইকগুলোর ইঞ্জিনে ডাবল সিলিন্ডার থাকে। এই সিঙ্গেল সিলিন্ডার এবং ডাবল সিলিন্ডার এর পার্থক্য বুঝতে হলে আপনাকে আরও জানতে হবে ইঞ্জিন কীভাবে কাজ করে।
প্রত্যেকটি ইঞ্জিনে ৪ টি স্ট্রোক থাকে। একেকটি স্ট্রোকের কাজ ভিন্ন। ইঞ্জিনের চারটি স্ট্রোক হলো:- ১. Suction, ২. Compression, ৩. Expansion, and ৪. Exhaust. এবার এই ৪টি স্ট্রোক এর কাজ বণনা করা যাক।
১.
Suction Stroke: এই স্ট্রোকে বায়ু এবং জ্বালানির মিশ্রণের চার্জ সিলিন্ডারের ভিতরে নেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পিস্টন সিলিন্ডারের মাথা থেকে নিচের দিকে অগ্রাসন হয়।
২.
Compression Stroke: Suction Stroke এর প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবার মাধ্যমে এই স্ট্রোকে বায়ু এবং জ্বালানির মিশ্রনের চার্জ সংকুচিত হয়।
৩.
Expansion Stroke: এই স্ট্রোকটি পাওয়ার স্ট্রোক নামেও পরিচিত। এই স্ট্রোকে সংকুচিত চার্জ জ্বলিত হয় যা সিলিন্ডারের ভিতরে উচ্চ গরম গ্যাস তৈরি করে। এবং এই কারনে এই গ্যাস পিস্টনকে সিলিন্ডারের মাথা থেকে নিচের দিকে ঠেলে দেয় যার কারনে গরম গ্যাসগুলি সিলিন্ডারের মাথা থেকে নিচের দিকে প্রসারিত হয়।
৪.
Exhaust Stroke: এটি সম্পূর্ণ চক্রের শেষ ধাপ। যা তাপ প্রত্যাখ্যান প্রক্রিয়া হিসাবে পরিচিত। এই স্ট্রোকে, পিস্টনকে সিলিন্ডারের নিচ থেকে ওপরের দিকে সরিয়ে সিলিন্ডার থেকে গরম গ্যাস বের করে দেওয়া হয়। এই গ্যাসই হলো ইঞ্জিনের শক্তি যার দ্বারা ইঞ্জিন রান হয়।
বাইকের ইঞ্জিন প্রক্রিয়া এই ৪টি স্ট্রোকের দ্বারা সঞ্চালিত হয় সিলিন্ডারের মধ্যে। যদি একের অধিক সিলিন্ডার ও থাকে তবে একইভাবে প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন হয় প্রত্যাকটি সিলিন্ডারের মধ্যে।