Yamaha Banner
Search

2017-01-30
history-of-bajaj-pulsar

সূর্য আমি, ঐ দিগন্তে হারাব, অস্তমিত হব, তবু ধরনীর বুকে চিহ্ন রেখে যাব।
চন্দ্র আমি ঐ রাতকে জাগাবো, ধরণী ঘুমিয়ে যাবে তবু স্বপ্নকে জাগিয়ে যাবো ।
বৃষ্টি আমি অঝর ধারায় ঝরে যাবো, ধরণী শুকিয়ে যাবে তবু সবুজ হয়ে রবো ধরণীর পরে ।
ঢেউ আমি ঐ সমুদ্রে হারিয়ে যাবো, দৃষ্টির অন্তরালে চলে যাবো, তবু নাবিকের চোখের স্বপ্ন হয়ে ভেসে রবো ।
বিহঙ্গ আমি ঐ নীল আকাঁশের নীলীমায় হারিয়ে যাবো, ক্লান্তিতে নয় ভাবুকের চোখে দূর পরাভূত হবো ।
নিদ্রা আমি ঐ অবচেতনে তলিয়ে যাবো, তবু পরম শক্তিতে জাগ্রত হবো ।



ইন্ডিয়ান মোটরসাইকেল জগতে এক পরাক্রমশালী সাম্রাজ্যের অধিপতির নাম হলো বাজাজ। বাজাজ ছিল মূলত স্কুটার তৈরিতেই পারদর্শী। ইটালিয়ান ভেস্পার সাথে মিলে তারা বেশ কিছু জনপ্রিয় মডেল উপহার দিয়েছে। ৯০ এর দশকের প্রথম দিকে ইন্ডিয়াতে মোটরসাইকেলের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। হিরো হোন্ডা ইতোমধ্যেই তাদের অবস্থান শক্ত করে নিয়েছে। বাজাজ বিপদ টের পেয়ে কাওয়াসাকির সাথে জোট বাধে ৯০ এর আগেই। Bajaj KB 100 RTZ বা ফোর স্ট্রোকের Kawasaki Bajaj 4S Champion ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়তাও পায়। কিন্তু ৯০ এর শেষের দিকে কাওয়াসাকির সরাসরি সাহায্য ছাড়াই তারা প্রথম যে মডেল বাজারজাত করে তা ছিল Bajaj BYK ১০০ সিসির ফোর স্ট্রোক বাইক। বাইকটি এক কথায় প্রত্যাখ্যাত হয় ক্রেতাদের কাছে আর বাজাজ “কাওয়াসাকি” ছাড়া অচল এমন সমালোচনার মুখে তাদের পড়তে হয়।

ঠিক এই সময়ই ২০০১ সালে জন্ম নেয় বাজাজ পালসার বাইকটি। জন্মের অল্প সময়ের মধ্যেই বাইকটি তার গলায় সুপার স্টার এর তকমা ঝুলিয়ে নেয়। পালসার যে, সে সময় শুধু বৈচিত্র্যপূর্ন পারফরমেন্স বাইক ছিল তাই নয়. বরং টেকনোলোজি আর ফীচারের দিক দিয়েও ছিল অনন্য। ইন্ডিয়ার মাটিতে তৈরি হওয়া বাইকটি ছিল ইন্ডিয়ার সক্ষমতায় সময়ের থেকে এক ধাপ এগিয়ে। সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিয়ে বাজাজ প্রমান করতে সক্ষম হয়েছিল তারা পারে পথ প্রদর্শক হতে। এখানে পাঠকে “পথ প্রদর্শক” শব্দ দুটির উপরে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার অনুরোধ করছি, কারণ আমরা যখন পালসার নিয়ে আলোচনা করবো তখন পাঠক দেখতে পাবেন পালসার, ইন্ডিয়ান বাইক ইন্ড্রাস্ট্রিতে ‘হোম মেইড ইন্ডিয়ান’ বাইকগুলির জন্য কিভাবে নতুন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছিল। পালসারে এমন এমন ফীচার আর টেকনোলজি ব্যবহার করা হচ্ছিল যা ‘মেইড ইন ইন্ডিয়া’ বাইকের জন্য ছিল দূরের হাতছানি। পর্বর্তিতে হোম মেইড ইন্ডিয়ান বাইকগুলি ; পালসারের দেখানো পথে হাটতে বাধ্য হয়েছিল।


২০০১ থেকে ২০১৬ এই ১৬ বছরে পালসারের মুল মডেলের তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি। তবে ভিন্ন ভিন্ন ইঞ্জিন শক্তির বেশ কিছু মডেল বাজাজ উপহার দিয়েছে। আর এই মডেলগুলি যে একই সেগমেন্টের প্রতিযোগী বাইক থেকে কোন অংশে বিন্দু মাত্র কম না তা তাদের জনপ্রিয়তা দেখেই বুঝা যায়। আসলে পালসার জীবন্ত কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছে। আজ থেকে ১০০ বছর পরেও যদি ইন্ডিয়ান মোটরসাইকেল ইন্ড্রাস্ট্রির ইতিহাস লেখা হয় , বাজাজ পালসারের নাম সবার আগে উঠে আসবে। তখন হয়তো পালসার সগর্বে বলবে –

“সূর্য আমি, ঐ দিগন্তে হারাব, অস্তমিত হব, তবু ধরনীর বুকে চিহ্ন রেখে যাব... ঢেউ আমি ঐ সমুদ্রে হারিয়ে যাবো, দৃষ্টির অন্তরালে চলে যাবো, তবু নাবিকের চোখের স্বপ্ন হয়ে ভেসে রবো ”।


তবে হ্যা একথা অস্বীকার করার উপায় নাই তাদের প্রতিযোগী জাপানী বাইকের থেকে পালসার এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে জাপানীদের গঠন শৈলী, ইঞ্জিন ফিনিশিং সব দিক থেকেই । তবে একথাও স্বীকার করতে হবে জাপানী বাইকের পরে যদি ইন্ডিয়াতে কারো নাম আসে তবে তা বাজাজের পালসার।

আমরা এই আর্টিকেলে বাজাজ পালসারের জন্ম থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত একটা সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরবো ইনশাল্লাহ। সাথে থাকুন আর উপভোগ করুন একটা জীবন্ত কিংবদন্তীর ইতিহাস।







২০০১ সাল: পালসার ১৫০ এবং পালসার ১৮০


bajaj-pulsar-150 180



আমরা আগেই বলেছি পালসারের জন্ম হয় ২০০১ সালে। আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সে সময়ে কম সিসির সাধারন কমিউটার বাইকের প্রচলন ছিলো ইনডিয়াতে। তুমুল জনপ্রিয় হিরো হোন্ডা সিবিজেড 150 সিসি এন্ট্রি লেভেল স্পোর্টস বাইকের আগমন ঘটে। তরুনরা লুফে নেয় সে বাইক। বিপরিতে বাজাজ অটো পালসার ১৫০ সিসি বাইকের পর্দা উন্মোচন করে। বাইকটির ডিজাইন শৈলী এমন ছিল যে এক নজর দেখেই আপনার মনে হবে এটি একটি পেশীবহুল মেশিন । সেই সময় ইন্ডিয়ান বাইক ইন্ড্রাস্টিতে এমন পেশী বহুল এন্ট্রি লেভেল পারফর্মেন্স বাইক এতো চমৎকার দামে দ্বিতিয়টি ছিল না। এমন ডিজাইনের বাইক প্রেমিরা বাইকটি নিতে একটুও দ্বিধা করেনি।

পালসার নামের যে বাইক জন্ম নিল ২০০১ সালে তার ইঞ্জিন ছিল ১৫০ সিসি, ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, এয়ার কুল, ম্যাক্সিমাম পাওয়ার আউট পুট ছিল ১৩ বিপিএইচ । বাজাজ পালসার ছিলো ইন্ডিয়ার প্রথম মোটরসাইকেল যার সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক লাগানো ছিলো। সে সময় ১৫০ সিসির এন্ট্রি লেভেল পারফর্মেন্স বাইকে যা ছিলো একটা প্রিমিয়াম ফীচার। মানুষ সে সময় উচ্চ ক্ষমতার বাইকেই এই ধরনের ফীচার দেখে অভ্যস্থ্ ছিল।

বাইকটির অন্যান্য ফিচারের মধ্যে ছিল অপশনাল ইলেকট্রিক স্টাটার, সিঙ্গেল টোন হর্ন, ১৮ লিটার ফুয়েল ট্যাঙ্ক, ক্লাসিক গোল হেডল্যাম্প, সাইড স্ট্যান্ড ইনডিকেটর, টেকনোমিটার সাথে হুইলবেস ছিলো ১২৬৫ মিমি ।

পালসার ১৫০ সিসি বাজারজাত করার অল্প কিছু দিন পরেই ইন্ডিয়ান আর্মি পালসার ১৫০ সিসির ১৫০০ ইউনিট এর অর্ডার দেয় বাজাজ অটোর কাছে। এই প্রথম ইন্ডিয়ান আর্মি মোটরসাইকেল সাপ্লাইয়ের জন্য দেশীয় কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্ডার দেয়। পালসারের জন্য এটি ছিল একটা বিশাল অর্জন। এমন একটা প্রশংশা পত্র যা পালসারের ধাত, তেজস্বিতা, এর ক্ষমতা যেনো উচ্চস্বরে ঘোষণা করে। এই প্রশংশা পত্র যেনো পালসারের ইঞ্জিনে জেট ফুয়েল ঢালার মতো হলো। কারণ পালসারের ডিজাইন মানূষকে মুগ্ধ করলেও বাজাজের নিজস্ব ইমেজের কারনেই মানুষের মনে কিছুটা দ্বিধা ছিল। কারণ কাওয়াসাকি থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে তাদের BYK 100 বাইক ছিল যাচ্ছেতাই খারাপ। বাজাজ এবার আর এই ভুল করেনি, এবার তারা পালসারের ডিজাইন আর ইঞ্জিন দুই ক্ষেত্রেই বিশ্ব মান বজায় রাখে। পালসারের ইঞ্জিন এর জন্য টোকিওর এক নামি কোম্পানির রিসার্স ও ডেভেলপমেন্ট উইনিটের সাহায্য নিয়েছিলো। তাই পালসার যে শুধু দেখতেই পেশীবহুল ছিল তা নয় এর ইঞ্জিন ছিল শক্তিশালী টেকসই আর বিশ্বস্ত।

পালসার ১৫০ তুমুল জনপ্রিয় হবার অল্প কয়েক মাস পরেই বাজাজ, পালসারের আরো শক্তিশালী ভারশন পালসার ১৮০ সিসি বাজারে আনে। দেখতে হুবহু পালসার ১৫০ সিসির মতো। বাজাজ ছোট্ট কোন কসমেটিক পরিবর্তনও ১৮০ সিসির বাইকে আনে নাই। এই বাইকের সর্বোচ্চ পাওয়ার আউটপুট ছিল ১৫ বিপিএইচ। বাইকটির ফিচারের মধ্যে ছিল ইলেকট্রিক স্টার্টার, ডুয়েল টোন হর্ন। এই দুটি বাদ দিলে বাকি ফিচার পালসার ১৫০ সিসির অনুরুপ ছিল। দুই বাইকেই ছিল ফাইভ স্পীড গিয়ার বক্স।







২০০৩ সাল : বাজাজ পালসার ১৫০ ( DTS-i UG-1) এবং বাজাজ পালসার ১৮০ ( DTS-i UG-1)

bajaj-pulsar-150-dts-i-ug1


২০০১ সালে পরপর বাজারে আসা পালসার ১৫০ এবং পালসার ১৮০ এর প্রথম আপগ্রেড করা হয় ২০০৩ সালে। কসমেটিক এবং মেকানিক্যাল উভয় ক্ষেত্রেই বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয় উভয় বাইকেই। যদি আমরা কসমেটিক পরিবর্তনের কথা বলি তবে আমরা দেখতে পাই নতুন এই মডেলে পুরাতন সাদামাটা গোল হেড ল্যাম্পের পরিবর্তে চমৎকার বিকিনি ফ্রেমিং হেডল্যাম্প যুক্ত করা হয় । হেড ল্যাম্প উইনিটে উপরের দুই কোনে দুটি পাইলট ল্যাম্প যুক্ত করা হয়। যা এখন পর্যন্ত ১৫০ সিসির বাইকে অপরিবর্তিত আছে।

উভয় বাইকেরই হুইলবেসে পরিবর্তন আনা হয়। আগে যা ছিল ১২৬৫ মিমি. নতুন মডেলে করা হয় ১৩২০ মিমি । এই অতিরিক্ত হুইলবেসের কারণে বাইক যাতে স্ট্যাবিলিটি না হারায় সে জন্য উভয় বাইকেরই কিছু ওজন বাড়ানো হয় । আগে যেখানে শুধু পালসার ১৮০ তে টুইন টোন হর্ন সংযুক্ত ছিল এবার উভয় বাইকেই এই ফিচার যুক্ত করে দেয়া হয়। প্রথম বারের মতো উভয় বাইকেই ট্রিপ মিটার (trip meter) যুক্ত করা হয়

আসুন এবার দেখে নেই নতুন এই ভারশনে খোলসের ভিতরে বাইক দুটিতে কি কি পরিবর্তন আনা হয়েছিল। Pulsar 150 DTS-i আগের আগের মতোই ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, এয়ার কুল, ১৫০ সিসির ইনজিন । তবে নতুন এই মডেলে সর্বোচ্চ পাওয়ার আউট পুট ১৪ বিপিএইচ করা হয়। তবে ইঞ্জিনে সব থেকে বড় যে পরিবর্তন আনা হয় তা হল সুপ্রসিদ্ধ ও জনপ্রিয় Digital Twin Spark Ignition (DTS-i) প্রযুক্তি। যদিও এই প্রযুক্তি নতুন না, বিশ্বের অনেক নামি দামি ব্রান্ড এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিন্তু ইন্ডিয়াতে এই প্রথম। এর ফলে আগের মডেলের একটি স্পার্ক প্লাগের পরিবর্তে ইঞ্জিনে এখন দুটি স্পার্ক প্লাগ সংযুক্ত হয়। এর ফলে ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি ইঞ্জিনের পার্ফরমেন্সেও ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হল।

পালসার ১৫০ DTS-i এর মতো পালসার 180 DTS-i ও ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, এয়ার কুল ১৮০ সিসির ইনজিন। তবে এবার সর্বোচ্চ পাওয়ার আউট পুট করা হল ১৫ বিপিএইচ থেকে ১৬ বিপিএইচ । পালসার ১৫০ DTS-i মতো এখানেও DTS-i টেকনোলোজির ব্যবহার করা হল।







২০০৫ সাল: বাজাজ পালসার ১৫০ ( DTS-i UG-2) এবং বাজাজ পালসার ১৮০ ( DTS-i UG-2)


bajaj-pulsar-150-dts-i-ug2



দুই বছর পরে সাল ২০০৫, পালসারে আবার পরিবর্তন আনা হয়। ইতোমধ্যে পালসার এর উভয় বাইকই তাদের জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে গিয়েছে। নতুন এই পরিবর্তনে বাজাজের উদ্দেশ্য ছিল পালসারকে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করে তোলা।
গত বারের মতো এবারও কিছু কসমেটিক এবং মেকানিক্যাল পরিবর্তন আনা হয়। কসমেটিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পালসারে ১৭ ইঞ্চি এলয় হুইল যুক্ত করা হয়। Hero Honda Karizma এর পরে পালসার হল ইন্ডিয়ার দ্বিতীয় বাইক যাতে এলয় হুইল লাগানো হয়। তবে Pulsar 180 DTS-i এটি স্ট্যান্ডার্ড ফিচার হিসাবে থাকলেও Pulsar 150 DTS-i এটি ছিল অপশনাল। পালসারের উভয় মডেলেই প্রথম বারের মতো Gas charged hydraulic coil springs সাসপেনশান যুক্ত করা হয়। মজার ব্যাপার হল ইন্ডিয়ান কোন বাইকে পালসারই প্রথম যাতে এই ফীচার যুক্ত করা হয়।

বাজাজ; পালসারের নতুন এই ভার্শনে কিছু ডাইমেনশানগত পরিবর্তনও আনে। উভয় বাইকেরই উচ্চতা ১২ মিমি কমিয়ে আনা হয়, ফুয়েল ট্যাঙ্ক ক্যাপাসিটি আগে যেখানে ১৮ লিটার ছিল কমিয়ে তা পনের লিটার করা হয়। এই প্রথবারের মতো Pulsar 150 DTS-i এবং Pulsar 180 DTS-i বাইক দুটিকে দূর থেকে দেখে আলাদা ভাবে চেনা সম্ভব হল । না অন্য কোন পরিবর্তনের জন্য না, আসলে Pulsar 180 DTS-i এর ইনজিন ও এলয় রিম গ্রের এর পরিবর্তে কালো কারা হল যেখানে Pulsar 150 DTS-i এর ইনজিন আগের মতোই গ্রে রাখা হল।

Pulsar 150 DTS-i এবং Pulsar 180 DTS-i এর ইঞ্জিনে তেমন কোন পরিবর্তন আনা হল না, শুধু অল্প কিছু শক্তি বাড়ানো হল। Pulsar 150 DTS-i এর সর্বোচ্চ পাওয়ার আউট পুট করা হল ১৩.৫ বিপিএইচ যা আগে ছিল ১৩ বিপিএইচ এবং Pulsar 180 DTS-i এর সর্বোচ্চ পাওয়ার আউট পুট করা হল ১৬.৫ বিপিএইচ যা আগে ছিল ১৬ বিপিএইচ।








২০০৬ সাল : বাজাজ পালসার ১৫০ ( DTS-i UG-3) এবং বাজাজ পালসার ১৮০ ( DTS-i UG-3)

bajaj-pulsar-150-dts-i-ug3

মাত্র এক বছরের মাথাতেই বাজাজ পুনরায় পালসারের আপগ্রেডে হাত দেয়। এবার ব্যাপক কসমেটিক পরিবর্তন আনা হয়। সত্য বলতে কি জন্মের পরে এবারই প্রথম পালসারকে এক নতুন রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হয়। বাইকের ইঞ্জিনে বিন্দু মাত্র পরিবর্তন না এনে শুধু এক্সটেরিওর স্টাইলিং এ পরিবর্তন করে পালসারকে আরো বড় আরো এগ্রেসিভ করে তোলা হয়।

উভয় বাইকেরই ফ্রন্ট ফেইস রি-ডিজাইন করা হয়। হেড লাইট ইউনিটের পাইলট ল্যাম্পকে আরো সুস্পষ্ট করা হয়। বাজাজ তাদের এই রি-ডিজাইন হেড ল্যাম্প ইউনিটের নাম দিলো ‘wolf eyed headlamp’। বাইকে প্রথম বারের মতো back-lit switchgear এবং clear lens turn indicators যুক্ত করা হল সামনে ও পেছনে উভয় দিকেই। Back-lit switchgear এর মাধ্যমে পালসারে এখন রাতের বেলাতেও ইনডিকেটর সুইচ গুলি সুস্পষ্ট ভাবে দেখা সম্ভব হল। পার্ফর্মেন্স বাইকে এটা একটা গুরুত্বপূর্ন ফীচার। সাইড ইন্ডিকেটরে কার এর মতো ইনবিল্ড সেলফ ক্যান্সেলিং ফিচার যুক্ত করে দেয়া হল। এর ফলে টার্ন নেয়ার পরে বাইকের হ্যান্ডেল সোজা করার সাথে সাথে সাইড ইন্ডিকেটরগুলি আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে।

ফুয়েল ট্যাঙ্ক, ফ্রন্ট ফেন্ডার (মাড গার্ড), এবং সাইড বডি কাউল(Cowl) আগে যা ছিল তাই থাকলো। তবে বাইকের পেছনের অংশ সম্পূর্নই বদলে গেলো। Pointier long tailpiece এর জায়গায় এক জোড়া দৃষ্টি নন্দন উলম্ব LED tail lamps যুক্ত করে দেয়া হলো। পালসারই প্রথম ইন্ডিয়ান বাইক যাতে LED tail lamp লাগানো হয়েছিল। Rear fender নতুন করে সাজানো হল। এক্সট্রা একটা ফেন্ডার যুক্ত করে দেয়া হল। Pulsar 180 এর মতো Pulsar 150 DTS-i তেও এলয় হুইল এখন আর অপশনাল না রেখে স্টান্ডার্ড ফীচার করা হল।

রাইডার ককপিটেও ব্যাপক পরিবর্তন আনা হলো। পুরতন এনালগ ইনস্ট্রুমেন্টাল কনসোল প্যানেল পরিবর্তন করে আধুনিক পার্ট ডিজিটাল মিটার প্যানেল লাগানো হয় উভয় বাইকেই। মজার ব্যাপার হল 150 DTS-i এবং Pulsar 180 DTS-i এবারো প্রথম হল, কারণ পালসারই ইন্ডিয়ান প্রথম বাইক যাতে ডিজিটাল ডিসপ্লে স্পিডোমিটার, ফুয়েল গেজ। অডোমিটার এবং ট্রিপ মিটার লাগানো হয়। পালসারের এই মডেলে First gear shift light এবং এনালগ টেকনোমটার ছিল।

২০০৫ সালের আপগ্রেড ভার্শনের পরে কাস্টমারদের দাবীর পরি্প্রেক্ষিতে lower rpms এ বাইকের torque availability বাড়ায় বাজাজ। এর পাশাপাশি ইঞ্জিনের কিছু পরিশোধন এবং গিয়ার সিফট কোয়ালিটির পরিবর্তনের ফলে উভয় বাইকই যেনো রাইডারের হাতে পূর্বের থেকে অনেক বেশী জীবন্ত হয়ে উঠল।





২০০৭ সাল: বাজাজ পালসার ২০০ DTS-i

bajaj-pulsar-200-dtsi


২০০৭ সালে বাজাজ সিদ্ধান্ত নেয় পারফরমেন্স বাইক সেগমেন্টে পালসারকে তারা আরো উচুতে নিয়ে যাবে। প্রথমবারের মতো তারা Pulsar 200 DTS-i মডেল বাজারে আনে। ঠিক সেই সময় Naked motorcycle (Standards, also called naked bikes or roadsters,) সেগমেন্টে Pulsar 200 DTS-i প্রথম প্রডাকশান লাইন।

পালসার DTS-i এর বডি প্যানেল পুরোটাই Pulsar 180 DTS-i থেকে ধার নেয়া। অর্থাৎ হেডল্যাম্পের ডিজাইন, ফুয়েল ট্যাঙ্ক, সাইড ডিজাইন, সাথে পেছনের বডি প্যানেল ছিল ছোট ভাই Pulsar 180 DTS-i এর হুবহু অনুরূপ। তারা মূল ডিজাইন ঠিক রেখেছিল। তবে তারা বড় ভাইকে ছোট ভাই থেকে আলাদা করার জন্য কিছু কসমেটিক পরিবর্তন করেছিলো, যেমন smart tank shrouds, split seats, clip-on handlebars এবং split pillion grab rails। আমরা আগেই দেখেছি পালসার সিরিজের বাইক গুলি কোন না কোন ভাবে ইন্ডিয়ান মোটরসাইকেল ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য পথ প্রদর্শক হয়েছে অর্থাৎ এমন কিছু ফীচার যা পালসারই প্রথম ব্যবহার করা হয় এবং এর ব্যবহারিক সাফল্যের ফলে অন্যরাও তাদের মোটরসাইকেল তা সংযোজন করতে বাধ্য হয়। এবারও তার ব্যাতিক্রম হবে কেন। আসলে পালসার যখনই তাদের মডেলের ভার্সন আপগ্রেড করেছে মানুষ খুজেছে নতুন কি ফীচার যোগ হল। যেমন ইন্ডিয়ান মোটরসাইকেল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টিউবলেস টায়ার যোগ করা হল Pulsar 200 DTS-i এ। টায়ারটিও ছিল ছোট ভাই Pulsar 180 DTS-i থেকে অনেক চওড়া । পেছনের টায়ার ছিল 120/80 x 17 মাপের, যা বাইকটির ভিজুয়াল আপিলকে অনেক বেশী পেশী বহুল করে তুলেছিল।

তবে খোলসের নিচে পরিবর্তন ছিল ব্যাপক। ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ২০০ সিসির ইনজিনের ম্যাক্সিমাম পাওয়ার আউটপুট ছিল ১৮ বিপিএইচ। ২০০ সিসির ইঞ্জিনকে ঠান্ডা রাখার জন্য অয়েল কুল টেকনোলোজি ব্যবহার করা হয়। এটাও ছিল লোকাল ইন্ডিয়ান মোটরসাইকেল ইতিহাসে প্রথমবার।






বাজাজ পালসার ২২০ DTS-Fi

bajaj-pulsar-220-dts-fi


Pulsar 200 DTS-i কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে তা তেমন জনপ্রিয় হয়নি। আসলে পালসার এতদিনে অন্যমাত্রায় পৌছে গিয়েছে। তাই এই ধরণের সুপার স্টারের সামান্য কমতিও বাইক লাভাররা মেনে নিতে পারেনি । এই অবস্থায় বাজাজ অটো সে বছরই এর আপগ্রেড ভার্সন বের করে Pulsar 220 DTS-Fi । তখন পর্যন্ত এটিই ছিল বাজাজের সব থেকে শক্তিশালী বাইক। এই নতুন ভার্সন পাসসারের এক নতুন অধ্যেয়ের সূচনা করে এবং জন্মের পরে প্রথমবারের মতো পালসারকে এক অন্যমাত্রা এনে দেয়। বাইকটি ক্ষমতার দিক দিয়ে এবং ভিজুয়াল অ্যাপিলের দিক দিয়ে Pulsar 200 DTS-i এর উপরে ছিল। এর পাশাপাশি আগের সব গুলি পালসার যেখানে ছিল ন্যাকেড সেখনে Pulsar 220 DTS-Fi ছিল সেমি-ফেয়ার্ড (semi-faired) মোটরসাইকেল।

Semi-fairing এর পাশাপাশি বাইকটিতে পূর্ববর্তী পালসারের যে এক্সট্রা ফিচার যোগ করা হয়, যে কসমেটিক পরিবর্তন আনা হয় তা পরবর্তি সময়ে “মেড ইন ইন্ডিয়া “ বাইকগুলিতে এক নতুন দিগন্তের উম্মোচন করে। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ছিল Projector headlamp , rear disc brake এবং fairing mounted mirrors যা ছিল ইন্ডিয়ার তৈরি বাইকগুলির মধ্যে প্রথম। বডি প্যানেল ছিল Pulsar 200 DTS-i অনুরূপ। অর্থাৎ 220 DTS-Fi এও ছিল split pillion grab rails, split seats এবং clip-on handlebar। পার্ট ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট কনসোল প্যানেলকে আরো আধুনিক ও বুদ্ধিদীপ্ত করা হয়, যোগ করা হয় engine temperature, engine oil level এবং battery indicator ।

ইনজিন ছিল ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ২২০ সিসির। ইনডিয়াতে প্রথমবারের মতো কার্বুরেটর ফিড ইঞ্জিনের বিপরিতে এই বাইকে ফুয়েল ইঞ্জেক্টেড ইনজিন ব্যবহার করা হয়। ইনজিনের ম্যাক্সিমাম পাওয়ার আউট পুট ছিল ১৯.৫ বিপিএইচ। বুঝতেই পারছেন এই স্পেসিফিকেশান আর ফিচার সমৃদ্ধ Pulsar 220 DTS-Fi ছিল বাইক প্রেমিদের কাছে খুব কাংখিত একটা বাইক।






সাল ২০০৯: বাজাজ পালসার ১৫০ ( DTS-i UG-4) এবং বাজাজ পালসার ১৮০ ( DTS-i UG-4)

bajaj-pulsar-150-ug-4

পালসার পরিবারের ছোট দুই সদস্যকে কিন্তু বাজাজ অটো ভুলে যায়নি। ২০০৯ সালে বাজাজ ১৫০ এবং ১৮০ সিসির পালসারে চতুর্থবারের মতো কিছু কসমেটিক এবং মেকানিক্যাল পরিবর্তন আনে। বাইক দুটিকে আরো আকর্ষর্নীয় এবং সজিব করে তুলে এর মাধ্যমে।

উভয় মোটরসাইকেলেই যে কসমেটিক পরিবর্তন আনা হয় তা হল fuel tank shrouds , বাইকের ইনজিন সাইলেন্সার আর হ্যান্ডেল বার সব খানেই ব্যাক থিম, ফুয়েল ট্যাঙ্কে পালসারের 3D logo এর পাশাপাশি লাইটিং এর সব কিছুই DC ইলেকট্রিক সিস্টেমের আওতায় আনা হয়।

অন্য কসমেটিক পরিবর্তনের মধ্যে ছিল split seats , clip-on handlebars , split pillion grab rails , পেশীবহুল ফ্রন্ট ফর্ক (meatier front forks), নতুন ধরণের রেয়ার সুইং আর্ম (শক আপ ধরে রাখার হাতল বিশেষ) এবং মোটা পেছনের চাকা। এগুলি সবই Pulsar 200 DTS-i এর আদলে করা হয়। যেখানে শুধু Pulsar 180 DTS-i এর টেকনোমিটারের ব্যাক গ্রাউন্ড ছিল সাদা এখন Pulsar 150 DTS-i একই ব্যাকগ্রাউন্ড করা হল।

বাইকটিতে মেকানিক্যাল পরিবর্তন বরাবরের মতো শুধু ইনজিন পাওয়ার বৃদ্ধির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলো। Pulsar 150 DTS-i এর বিপিএইচ বাড়িয়ে 14 হল এবং Pulsar 180 DTS-i এর বিপিএইচ বাড়িয়ে করা হল ১৭।

এই দুই মডেলের আপগ্রেডের পাশাপাশি বাজাজ অটো স্লো সেলিং Pulsar 200 DTS-i এর উৎপাদন বন্ধ করে দিল।






বাজাজ পালসার ১৩৫ এলএস

bajaj-pulsar-135ls

২০০৯ সালে বাজাজ অটো পালসারের ইনজিন ক্ষমতা কিছু কমিয়ে এবং ব্যাপক কসমেটিক পরিবর্তন এনে Pulsar 135 LS নামে এক নতুন সদস্য পালসার পরিবারে যোগ করে। এর ফলে পালসার পরিবার শুধু পারফরমেন্স সেগমেন্টেই না এখন ১৫০ সিসির নিচে কমিউটার সেগমেন্টেও তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করে। বরাবরের মতো বাজাজ এই নতুন বাইকেও এমন কিছু টেকনোলজিক্যাল ফিচার যোগ করে যা ইন্ডিয়ার মাটিতে তৈরি হওয়া বাইকে ছিল প্রথবারের মতো।

যদিও Pulsar 135 LS ছিল ১৫০ সিসি কমিউটার সেগমেন্টের থেকে দুর্বল বাইক কিন্তু পালসারের রক্ত প্রবাহিত হওয়া এই বাইক পাওয়ার আর ক্ষমতার ছিল ব্যতিক্রম। বাইকটিকে পালসারের ট্রেড মার্ক ডিজাইন থেকে সম্পুর্ন আলাদা করা হয়। অন্যান্য পালসার বাইকের তুলনায় ছিল স্লিম এবং কমিউটার সেগমেন্টের অনান্য বাইকের তুলনায় ব্যাতিক্রম।

যে লক্ষণীয় কসমেটিক পরিবর্তন বাইকটিতে আনা হয় তা হলো সম্পুর্ন নতুন একটা হেডল্যাম্প, ফুয়েল ট্যাঙ্কের দুই পাশে সুচালো স্রাউড (pointy shrouds), স্প্লিট পিলিওন গ্র্যাবরেইল, ক্লিপ অন হ্যান্ডেল বার, স্প্লিট সিট, পার্ট ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্টাল কনসোল, এলুমিনিয়াম নাম্বার প্লেট হোল্ডার, এলইডি ট্রেল ল্যাম্প এবং রিয়ার টায়ার হাগার (rear tyre hugger)

Pulsar 135 LS এর ইনজিন ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ১৩৫ সিসির। ম্যাক্সিমাম পাওয়ার আউট পুট ১৩.৫ বিপিএইচ। তবে অনন্য যে টেকনোলজিকাল ফিচার এই বাইকের ইঞ্জিনে যোগ করা হয় তা হলো, ইঞ্জিনে দুইটি ভাল্ভের পরিবর্তে চারটি ভাল্ভের সংযোজন। এই টেকনোজজি ছিল ইন্ডিয়ার মাটিতে তৈরি হওয়া কোন বাইকে প্রথম বারের মতো।






সাল ২০১০: বাজাজ পালসার ১৫০ ( DTS-i UG-4.5)

bajaj-pulsar-150-ug-4-5


২০১০ সালে বাজাজ UG-4 Pulsar 150 DTS-i এর সামান্য কিছু পরিবর্তন করে Pulsar 150 DTS-i UG-4.5 ভার্সনটি বাজারে আনে। এবারই প্রথম Pulsar 150 DTS-I একক ভাবে কোন পরিবর্তন আনা হল। এর আগে প্রতিবারই Pulsar 150 DTS-i এবং Pulsar 180 DTS-i একসাথে পরিবর্তন আনা হত।

Pulsar 150 DTS-i UG-4.5 এই ভার্সনে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য কসমেটিক পরিবর্তন চোখে পড়ে না, ক্লিপ অন হ্যান্ডেল বারের সংযোজনের মধ্যেই কসমেটিক পরিবর্তনের কাজ সেরে নেয় বাজাজ। অন্যদিকে মেকানিক্যাল পরিবর্তনের মধ্যে ইনজিন পাওয়ার কিছু বাড়ানো হয়। নতুন এই ভার্শনে ম্যাক্সিমাম পাওয়ার আউট পুট ১৪ বিপিএইচ থেকে ১৫ বিপিএইচ করা হয় । ইনজিন একই থাকে ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার , এয়ার কুল ১৫০ সিসি।






বাজাজ পালসার ২২০এফ ( DTS-i) এবং বাজাজ পালসার ২২০এস ( DTS-i)

bajaj-pulsar-220f


২০১০ সালে বাজাজ তার ২২০ সিসির সেমি ফেয়ার্ড (semi-faired) পালসারকে জটিলতা মুক্ত করে আরো কারিগরি সক্ষম করে তোলার জন্য ব্যায়বহুল ফুয়েল ইঞ্জেকশান সিস্টেম থেকে প্রচলিত কারবুরেটর ফুয়েলিং সিস্টেমে নিয়ে আসে। এই পরিবর্তনের মাধ্যেমে বাইকের নতুন নাম দেয়া হয় Pulsar 220F DTS-i । অন্য যে পরিবর্তন আসে তা হল কালো রং এর ক্লিপ অন হ্যান্ডেল বার এবং ফেয়ারিং এর সাইডে F ব্যাজ। এই বাইকেও একটা নতুন টেকনিক্যাল ফিচার যোগ করা হয় যা হোম মেড ইন্ডিয়ান বাইকে আগে কখন করা হয়নি তা হল সব চেয়ে বড় কার্বুরেটরের ব্যবহার। তাছাড়া ইনজিনের ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন করে আরো পরিশোধিত এবং শক্তিশালী করা হয়। ম্যাক্সিমাম পাওয়ার আউট পুট ১৯.৫ থেকে ২১ বিপিএইচ করা হয়। এর ফলে বাইকের সর্বচ্চ গতিবেগ হয় ১৪০ কিমি / ঘন্টা। এর মাধ্যেমে Pulsar 220F DTS-i সে সময়ে ‘the fastest Indian’ টাইটেল নিজের ঝুড়িতে নিয়ে নেয়।

একই সাথে বাজাজ একই বাইকের ন্যাকেড ভার্সনও বাজারে এনেছিলো Pulsar 220S DTS-i (‘S’ মানে ‘streetfighter’). এই ভার্সনে কোন মেকানিক্যাল পরিবর্তন ছিল না । Pulsar 220F DTS-i এবং Pulsar 220S DTS-i ইনজিন এক। কসমেটিক পরিবর্তনের মধ্যে সেমি ফেয়ারিং এবং প্রজেক্টর হেড লাইটের স্থলে বিকিনি ফেয়ারিং ও হ্যালোজেন হেড ল্যাম্প যুক্ত হয় ।







সাল ২০১২: বাজাজ পালসার ২০০এনএস

bajaj-pulsar-200ns

মাঝে দুই বছরের বিরতি । সাল ২০১২ । পালসার পরিবারে নতুন সদস্যের জন্ম হয় Pulsar 200NS ভার্সনের মাধ্যমে। পরিবারের অনান্য সদস্যার থেকে সম্পুর্ন আলাদা এই মডেল ডিজাইন ও ফিচারের দিক থেকে ভিজুয়াল এপিল ছিল স্ট্রিট ফাইটার এর।

বাইকের ডিজাইনে ছিল চুড়ান্ত এগ্রেসিভ ভাব। টেকনোলজি এবং ফিচারের দিক থেকে বাইকটি ছিল বাজাজ পরিবারের জন্য শোকেসের মতো। ট্রিপল স্পার্ক প্লাগ(পালসার পরিবারের প্রথম তিনটি স্পার্ক প্লাগ যুক্ত হয়), সিক্স গিয়ার বক্স, লিকুইড কুল, ইঞ্জিনে চারটি ভাল্ভ, অধিক মোটা চাকা, সামনে ও পেছনে উভয় চাকাতেই পেটেল ডিস্ক ব্রেক (petal disc brakes) , মনো শক সাস্পেনশান। পার্ট ডিজিটাল ইনস্ট্রুমেন্ট কনসোলে বড় ধরণের পরিবর্তন আনা হয়। বুঝতেই পারছেন এই সমস্ত পরিবর্তনের মাধ্যমে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে চেহারা পুরোটাই বদলে যায় Pulsar 200NS এর।

Pulsar 200NS এর ইনজিন ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, লিকুইড কুল ২০০ সিসি। ম্যাক্সিমাম পাওয়ার আউট পুট ২৩.৫ বিপিএইচ বাইকটিকে পালসারের সবচেয়ে শক্তিশালী সদস্যে পরিণত করেছিল। এই বাইকটি বাজারে আনার মধ্যে দিয়ে পালসার পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যু ঘটে। সদস্যটি হল Pulsar 200S DTS-i.




সাল ২০১৩: ডুয়েল টোন পালসার

bajaj-pulsar-dual-tone

২০১৩ সাল ছিল পালসার পরিবারের উৎসবের বছর। নতুন রঙ্গে রাঙ্গানোর বছর। সজীবতার বছর। পালসারের প্রতিটি সদস্যকেই ডুয়েল টোন পেইন্ট দিয়ে রং করা হয়। Pulsar 135 LS, Pulsar 150 DTS-i, Pulsar 180 DTS-i, Pulsar 220F DTS-i এবং Pulsar 200NS. কেউ বাদ যায়নি। তবে সমালোচকরা বলে থাকেন মূলত বয়ো:বৃদ্ধ Pulsar 150 DTS-i, Pulsar 180 DTS-i এর বয়স লুকানোর চেষ্টা করেছে বাজাজ এই রং করার মাধ্যেমে।





সাল ২০১৫: বাজাজ পালসার আরএস২০০

bajaj-pulsar-rs200


সাল ২০১৫। পালসারের প্রতিদ্বন্দী এখন Yamaha, Honda এবং KTM এর মতো নামী ব্রান্ডের বাইকগুলি। বাজাজ প্রস্তুতি নিচ্ছিল অনেক দিন থেকেই। বহু প্রতিক্ষিত Pulsar RS200 বাইকটিকে তারা পরিচয় করিয়ে দেয় এবছর পালসারের নতুন সদস্য হিসাবে।

অত্যান্ত জমকালো ডিজাইনের এই বাইকটি পালসার পরিবারের প্রথম সদস্য যা ছিল Fully faired । বাইকটি তৈরিতে প্লাটফর্ম হিসাবে ধরা হলেও Pulsar 200NS বাইকটি থেকে ডিজাইনের দিক থেকে সম্পূর্নই আলাদা পাশাপাশি কয়েকটি নতুন ফীচার যোগ করা করা হয়। যেমন ফুয়েল ইঞ্জেকশান, ফুল ফেয়ার্ড, টুইন প্রজেক্টর হেড ল্যাম্প, এলইডি টার্ন ইন্ডিকেটর, এবং অপশনাল এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম।

ইনজিন হুবহু Pulsar 200NS এর ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, লিকুইড কুল, ২০০ সিসি। তবে কিছু পাওয়ার বাড়ানো এবং ফুয়েল ইঞ্জেকশান এর মাধ্যেমে কিছুটা পার্থক্য রাখা হয়। ম্যাক্সিমাম পাওয়ার আউট পুট ২৪.৫ বিপিএইচ যেখানে Pulsar 200NS এর ২৩.৫ বিপিএইচ। এর মাধ্যমে বাইকটি হয়ে ওঠে তখন পর্যন্ত পালসারের সবচেয়ে শক্তিশালী সদস্য।






বাজাজ পালসার এএস১৫০ এবং বাজাজ পালসার এএস২০০

bajaj-pulsar-as150


বাজাজ Pulsar RS200 দিয়েই তাদের পারফরমেন্স বাইকের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয়নি বরং তাদের প্রতিদ্বন্দিদেরে সাথে পারফরমেন্স বাইকের সেগমেন্টে নেতৃত্ব ধরে রাখার জন্য একই বছর আর একটি সাপ্রাইজ দেয় পালসারের জমজ দুই ভাই Pulsar AS150 এবং Pulsar AS200 এর মাধ্যমে।

সত্য বলতে Pulsar AS200 হল পালসার Pulsar 200NS এর সেমি ফেয়ার্ড ভার্শন। অন্যদিকে Pulsar AS150 হল Pulsar AS200 এর কার্বন কপি শুধু পাওয়ার কম এই যা। উল্লেখযোগ্য ফিচারগুলি হল প্রজেক্টর হেড ল্যাম্প, উচু মাউন্টেড উইন্ড স্ক্রিন, perimeter frame এবং সম্পুর্ন আলাদা রেয়ার ফেন্ডার (rear fender)। অন্যদিকে Pulsar AS150 এর তুলনামূলক চিকন টায়ার আর কম পাওয়ারের ইনজিন এবং ফিচারের দুই একটা পরিবর্তন (যেমন লিকুইড কুলিং এবং পেছনের চাকার ডিস্ক ব্রেক) ছাড়া Pulsar AS200 এর থেকে তেমন কোন পার্থক্য নাই।

যদি ইনজিনের কথা বলেন তবে Pulsar AS200 এর ইনজিন ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, লিকুইড কুল ২০০ সিসির ইনজিন যেমনটি Pulsar NS200 এর আছে। ম্যাক্সিমাম পাওয়ার আউট পুট ২৩.৫ বিপিএইচ। অন্যদিকে Pulsar AS150 ইনজিন ফোর স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, লিকুইড কুল ১৫০ সিসির ইনজিন । ম্যাক্সিমাম পাওয়ার আউট পুট ১৭ বিপিএইচ ।




পরিশেষে
পালসার পরিবারের বংশগতি কি এখানেই থেমে থাকবে? মোটরসাইকেল ভ্যালীর এডিটর প্যালেন তা মনে করে না। কোন একটা বংশ বা গোত্র যখন খ্যাতির সাথে অনেক শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে দীর্ঘ সময় টিকে থাকে তখন তাকে নির্বংশ করা কঠিন। ‘পালসার ‘ এখন ইন্ডিয়ান মোটরসাইকেল জগতে কিংবদন্তী, জীবন্ত কিংবদন্তী। আমরা দেখেছি পালসারের কিছু মডেল প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, সমালোচিত হয়েছে; কিন্তু পরমুহুর্তেই নতুনরূপে, আধুনিক ফিচার আর টেকনোলজি দিয়ে বাইক প্রেমীদের মন জয়ে করে নিয়েছে। সমালোচকদের মুখ তারা বন্ধ করেছে আরো উন্নত, আধুনিক পালসারের জন্ম দিয়ে।



Bajaj-Pulsar-CS400

২০১৪ সালে Delhi Auto Expo তে পালসার সিএস৪০০(প্রোটোটাইপ) নামে বাজাজের নতুন পালসার প্রদর্শিত হয়। যেটি মুলত পালসার এনএস২০০ এর মুল থীমের উপরে ভিত্তি করেই ডিজাইন করা। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে বাইকটির নাম পরিবর্তন করে Domianar 400 নামে বাজাজ অটো ইনডিয়ার মোটরসাইকেল জগতে ৪০০সিসি সেগমেন্টে পা রাখলো। আমরা আগেই জেনেছি এটি পালসার এনএস২০০ এর প্লাটফর্মে তৈরী। অর্থাৎ এই পেশীবহুল দানবীয় বাইকটির শরীরে পালসারেরই জীন বহন করছে, যেটি বিএমডাব্লিউ, কেটিএম, হোন্ডা ইত্যাদি বিশ্বমানের বাইকের সাথে পাল্লা দিতে সক্ষম। এরমধ্যে দিয়ে পালসার তার বংশধারা আরো উন্নত, আরো শক্তিশালী সেগমেন্টের বাইকে স্থানান্তর করলো।
bajaj-dominar-400


... নিদ্রা আমি ঐ অবচেতনে তলিয়ে যাবো, তবু পরম শক্তিতে জাগ্রত হবো।


আসলে ইন্ডিয়ান মোটরসাইকেল ইন্ড্রাস্ট্রির ইতিহাস বাজাজ পালসারকে বাদ দিয়ে কোন মতেই লেখা সম্ভব হবে না।

Bike News

Yamaha Bike Price in Bangladesh December 2024
2024-12-21

Yamaha is the top brand in the premium bike market of Bangladesh because Yamaha is popular even among the root level bike love...

English Bangla
CFMoto Bike Prices in Bangladesh December 2024
2024-12-19

Very recently, CFMoto, one of the most famous motorcycle brands in China, was launched in Bangladesh, which is known all over ...

English Bangla
CFMoto officially launches its flagship 300cc sports bike in Bangladesh
2024-12-19

(Dhaka, December 19, 2024) - Global motorcycle brand CFMoto has officially launched its flagship sports bikes in the Banglades...

English Bangla
Yamaha is expanding its service range: Available at tourist points in border areas
2024-12-14

Yamaha has once again proven that it is ahead of any other motorcycle brand in providing the highest level of service to its c...

English Bangla
Top 5 Yamaha 150cc bike
2024-12-12

Lets see the bikes Yamaha FZS V4 Yamaha FZS V4 is an all-stylish, performance-oriented street motorcycle built for city...

English Bangla

Related Motorcycles

Filter