মোটরসাইকেল শিল্পখাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণ করার উদ্যোগ নেবে শিল্প মন্ত্রণালয়। বিষয়টি বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে খুব শিগগিরই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠককালে শিল্পমন্ত্রী এ কথা জানান। ভার্চুয়াল মাধ্যমে আজ এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিমিহিকো কাতসুকি। বাংলাদেশের মোটরসাইকেল শিল্পের সম্ভাবনা ও সমস্যা নিয়ে উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের হেড অফ ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্শিয়াল শাহ মুহাম্মদ আশেকুর রহমান এফসিএ।
এসময় বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান মোঃ রইছ উদ্দিন, পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশিকুর রহমান, বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের উপদেষ্টা ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব জামাল আবু নাসের চৌধুরীসহ শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনলাইনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড পক্ষ থেকে দেশে মোটরসাইকেল শিল্পের সম্ভাবনা এবং এই শিল্পের টেকসই বিকাশের পথে অন্তরায়গুলো তুলে ধরা হয়। বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতার উত্তরণ ঘটিয়ে উদীয়মান মোটরসাইকেল শিল্পের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের যৌক্তিক নিবন্ধন ফি নির্ধারণ, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে শুল্ক ও কর নির্ধারণে টেকসই নিয়ম এবং প্রবিধান অনুসরণ, এই শিল্পের সুবিধার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জারিকৃত এসআরও ১৫৫ সংশোধন করে নতুন কিছু অত্যাবশ্যকীয় কাঁচামালে শুল্ক সুবিধা প্রদান, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি রোডম্যাপ তৈরি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় মোটরসাইকেল ক্রেতাদের জন্য রিটেইল ফাইন্যান্সিং চালু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি জনগণের ক্ষমতা দ্রুত বাড়ছে। এর ফলে গ্রাম- শহর নির্বিশেষে সর্বত্র মোটর সাইকেলের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বিশাল চাহিদার কথা বিবেচনা করে এ শিল্পখাতে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। এ শিল্প খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
মোটরসাইকেল নিবন্ধন ফি যৌক্তিক পরিমাণে নির্ধারণের বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট পলিসি ২০১৮ প্রণয়ন করেছে। এর আওতায় উপমহাদেশের অন্যান্য দেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিবন্ধন ফি নির্ধারণের কাজ চলছে। দ্রুত এর সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। দেশে মোটরসাইকেল শিল্পের কার্যকর বিকাশে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি রোডম্যাপ তৈরির কাজও দ্রুত শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।
শিল্পমন্ত্রী মোটরসাইকেল ক্রেতাদের সুবিধার্থে রিটেল ফাইন্যান্সিং চালুর বিষয়ে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে পরামর্শ দেন। ব্যাংক-ক্লায়েন্ট সম্পর্কের ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। সুত্র-ভোরেরকাগজ