মোটরসাইকেল বাজারে নাটকীয় ঘটনার সুত্রপাত ঘটায় হোন্ডা। তাদের প্রায় প্রতিটি মডেলের দাম অবিশ্বাস্যভাবে কমিয়ে দেয়। বিগত কিছুদিন থেকে এটিই ছিলো বাংলাদেশের মোটরসাইকেল জগতের আলোচিত বিষয়। বলা যায় পুরো মোটরসাইকেল কমিউনিটি থমকে যায়। খুশির ঝিলিক দেখা যায় ক্রেতাদের মুখে।
মোটরসাইকেল মার্কেটে দ্বিতীয় চমক নিয়ে হাজীর হয় সুজুকি। জনপ্রিয় এই জাপানিজ ব্রান্ডটি বাংলাদেশে তাদের জিক্সার সিরিজ দিয়ে ইতমধ্যেই ১৫০সিসি সেগমেন্টে নিজেদের একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরী করে নিয়েছে। স্টাইলিশ ডিজাইন এবং জাপানিজ প্রযুক্তির কারনে ক্রেতাদের মাঝে আগ্রহ এবং আস্থা সব সময়েই রয়েছে। প্রায় প্রতিটি মোটরসাইকেলের দাম কমিয়ে তারা ক্রেতাদের চাহিদা পূরনে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলো বলেই আশা করা যায়।
প্রশ্ন হচ্ছে এর পরে কারা মোটরসাইকেল দাম কমাবে? প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে হলে এখন অন্যদেরকেও দাম কমাতে হবে। আগামিতে কারা দাম কমাচ্ছে এটি জানার আগে আসুন সংক্ষেপে জেনে নেই কেনো দাম কমছে?
দেশীয় শিল্প বিকাশে বাংলাদেশ সরকার কাচামাল আমদানীর উপরে শুল্কহার কমানোর প্রেক্ষিতে মুলত এইদাম কমার সুযোগ তৈরী হয়েছে। অর্থাৎ যে সকল প্রতিষ্ঠান তাদের পন্য সরাসরি আমদানী না করে বাংলাদেশে কাচামাল এনে দেশেই পন্যগুলো তৈরী করবে তাদেরকে সুবিধাপ্রদানের স্বার্থে কাচামাল আমদানীর উপরে ট্যাক্স কমানো হয়েছে। কাজেই যারা তাদের পুরো মোটরসাইকেল বা যন্ত্রাংশ দেশেই প্রস্তুত করবে তাদেরকে কাচামাল আ্মদানীতে ট্যাক্স দিতে হবে কম। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো মোটরসাইকেলের দাম কমানোর সুযোগ পাচ্ছে। দেশে কর্ম সংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে একই সাথে দেশের প্রযুক্তিগত ধারনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বলা যায় এটি সরকারের একটি সুদূরপ্রসারী শিল্পবান্ধব সিদ্ধান্ত। উপকৃত হবে দেশ, লাভবান হবেন ক্রেতারা।
আগামিতে কারা এই দাম কমানোর তালিকায় থাকছে? পরিচিত সবগুলো কোম্পানীই এই তালিকাতে রয়েছে যেমন হিরো, বাজাজ, টিভিএস, ইয়ামাহা এবং ওয়াল্টন। আগে বা পরে এই ব্রান্ডের মোটরসাইকেলের দাম কমার ঘোষনা আসছে। প্রতিষ্ঠান ভেদে এবং তাদের মডেল ভেদে ৫০০০ থেকে শুরু করে ৪৫০০০ টাকা পর্যন্ত ছাড়ের সম্ভবনা রয়েছে। এর বাইরে যেসকল ব্রান্ড রয়েছে তারাও তাদের এক বা একাধিক বাইকে বিভিন্ন পরিমানের ছাড় দিবে। বলা যায় ২০১৭ সাল হবে বাইক ক্রেতাদের বছর।
দীর্ঘদিন থেকেই বাংলাদেশের ক্রেতাদের মাঝে একটি আক্ষেপ ছিলো বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের দাম বেশি। বিশেষকরে পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে তুলনা করলে তাদের তুলনাতে ৩গুন বেশি দাম দিয়ে ক্রেতাদের মোটরসাইকেল কিনতে হতো। সরকারের বর্তমান গৃহিত নীতির কারনে আশা করা যায় প্রতিটি মোটরসাইকেলের দামই যথেষ্ট পরিমানে কমে যাবে। আগামি বছর ২০১৭ সালটি মোটরসাইকেল বাজার কিছুটা অস্থির থাকবে মুলত দাম কমাকে কেন্দ্র করে। তবে ঘটনা যেটি্ই হোক সর্বাংশেই ক্রেতারা লাভবান হবেন এটি সুনিশ্চিত।