দাম বাড়বে সংযোজিত মোটরসাইকেলের
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সিকেডি মোটরসাইকেলের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বেঁধে দেওয়া সময়ের আগে যন্ত্রাংশ উৎপাদনে বাধ্যবাধকতা আরোপ করায় গভীর সংকটে পড়বে মোটরসাইকেল সংযোজন শিল্প। এ শিল্পের বিদ্যমান সুবিধা নির্দিষ্ট সময়ের আগে তুলে নেওয়ায় উৎপাদনে যাওয়া বাধাগ্রস্ত হবে। একই সঙ্গে সম্পূর্ণ বিযুক্ত অবস্থায় (সিকেডি) আমদানি করা মোটরসাইকেলের দাম বাড়বে। এ জন্য সিকেডি মোটরসাইকেল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মোটরসাইকেল সংযোজন শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলার অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএএমএ) জানায়, প্রস্তাবিত বাজেট বিকাশমান এ শিল্পের বিনিয়োগকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়, এনবিআর ও বিডার যৌথ অনুমতিতে দুই বছরের জন্য শুল্ক ও কর সুবিধা দিয়ে ২০১৬ সালে এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এক বছরের মাথায় এসব সুবিধা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে জাতীয় উৎপাদন উপস্থিত করতে চেসিসসহ একাধিক নির্দিষ্ট যন্ত্রাংশ উৎপাদনের শর্তে ৫ শতাংশ হারে কাঁচামাল ও ১৫ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক দিতে হবে, যা আগে উভয় ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ ছিল। তবে আগে থেকে থাকা রেয়াতি হারে আমদানি সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। আমদানি করা সিকেডি মোটরসাইকেলের ওপর সম্পূরক শুল্ক হার ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে যন্ত্রাংশ আমদানির পর দেশে সংযোজন করা মোটরসাইকেলের দাম গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বেড়ে যাবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের ৯০ শতাংশ মোটরসাইকেল ক্রেতার অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে। এতে ৬৫০ কোটি টাকার মোটরসাইকেল কেনাবেচায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বেচাকেনা কমে গেলে বাজার সংকুচিত হবে। এতে ছোট বাজারে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হবেন উদ্যোক্তারা।
টিভিএস অটো বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার রায় সমকালকে বলেন, সরকার দুই বছরের সময় বেঁধে দিয়ে উৎপাদনে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছিল; কিন্তু তা বাস্তবায়নের ছয় মাসের মাথায় তুলে নেওয়া হয়েছে। এতে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে তা পালনে ব্যর্থ হলে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক দিতে হবে। এতে বিপাকে পড়বে নতুন করে বিনিয়োগে আসা কোম্পানিগুলো। তিনি বলেন, মোটরসাইকেল শিল্পের টেকসই উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। কারণ বড় বিনিয়োগ পরিকল্পনা করে অনেকে বিনিয়োগ করেছেন। অনেক কোম্পানি বাজার সম্প্রসারণের পাশাপাশি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এখন সরকারের এমন সিদ্ধান্ত হলে বাজার ও কর্মসংস্থান সংকুচিত হবে।
(সমকাল)