সাধারনত ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী মোটরসাইকেল এর বৈশিষ্ট্য আলাদা হয়ে থাকে। ট্যুরিং মোটরসাইকেল বলতে এমন মোটরসাইকেলকে বোঝায় যেগুলা এমন ভাবে তৈরী করা হয় যার দ্বারা কোনো রকম অসুবিধা ছাড়া দীর্ঘ যাত্রা করা যায়। এই মোটরসাইকেল অন্যান্য মোটরসাইকেলগুলো থেকে একটু ভিন্ন হয়ে থাকে এর বৈশিষ্ট্যর কারনে। দূরে যাত্রার ক্ষেত্রে সব রকম সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয় এই ট্যুরিং মোটরসাইকেলে। চলুন আজ আমরা ট্যুরিং মোটরসাইকেল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বাইক স্টাইল
এই বাইকগুলো অন্যান্য বাইক থেকে আলাদা হয়ে থাকে এর ক্লাসিক স্টাইল এবং আরামদায়ক লুক এর কারনে। এই বাইকগুলো একটু বড় হয়ে থাকে। এই বাইকের হ্যান্ডেল বার, সিটিং পজিশন, ফুয়েল ট্যাংক ক্যাপাসিটি সম্পর্কে জানবো।
•হ্যান্ডেল বার: ট্যুরিং বাইকের ক্ষেত্রে হ্যান্ডেলবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। হ্যান্ডেলবার সিটিং পজিশনের সাথে মিল রেখে সিলেক্ট করা হয়। সাধারনত ট্যুরিং বাইকগুলোতে ক্রুসার এবং চ্যাম্পস টাইপের হ্যান্ডেলবার ব্যবহার করা হয়। এই হ্যান্ডেলবার লম্বা এবং চালকের দিকে এগিয়ে থাকে, এতে চালক আরামের সাথে হ্যান্ডেল ধরে রাখতে পারে পিঠ সোজা রেখেই। এইধরনের হ্যান্ডেলবার চালকের আরামকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
•সিটিং পজিশন: আপনি যখন দীর্ঘ সময়ের জন্য রাইড করার পরিকল্পনা করছেন, তখন আরামকে অগ্রাধিকার দেওয়া অপরিহার্য। ট্যুরিং মোটরসাইকেলগুলোর সিটিং পজিশন হ্যান্ডেলবারের সাথে মিল রেখে স্থাপন করা থাকে। দীর্ঘ দূরত্বের রাইডগুলির জন্য একেবারে আরামের প্রয়োজন, অন্যথায় আপনি যতদূর চান ততদূর ভ্রমণ করতে পারবেন না। আর সেভাবেই ট্যুরিং বাইকে সিট স্থাপন করা থাকে।
•স্টোরেজ: দীর্ঘ দূরত্বের রাইডগুলিতে বেশ কয়েকদিন বাইরে থাকা লাগে। আর বাইরে থাকার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সাথে রাখা জরুরী। আর এইসব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সাথে রাখার জন্য ট্যুরিং বাইকগুলোতে আলাদা স্পেস দেয়া থাকে। এতে করে বেশ কয়েকদিনের জন্য সব রকম জিনিসপত্র নিয়ে যাত্রা করা যায়।
•প্যাসেঞ্জার কমফোর্ট: ট্যুরিং বাইক রাইডারের জন্য কেবল আরামদায়ক হওয়াই গুরুত্বপূর্ণ নয়, আপনি যদি একজন যাত্রীর সাথে ভ্রমণ করেন তবে তারাও এই যাত্রা আরামদায়ক হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ট্যুরিং বাইকগুলি সাধারণত একজন যাত্রী থাকার জন্য তৈরি করা হয়, তাই আপনি নিশ্চিন্তে একজন সঙ্গী সাথে নিতে পারেন কারন একা দীর্ঘ দূরত্বে যাত্রা করা সবসময় আদর্শ নয়।
•আবহাওয়া সুরক্ষা: ট্যুরিং বাইকগুলোতে মুখ এবং বুকে বাতাসের চাপ কমাতে উইন্ডশীল্ড দেয়া থাকে। এতে আপনার ক্লান্তি, পিঠে ব্যথা এবং হাতের চাপ কিছুটা কমে। উইন্ডশীল্ড বায়ুর ধাক্কা রোধ করে যা আরামদায়ক যাত্রার জন্য জরুরী।
ইঞ্জিন
ট্যুরিং বাইকের ইঞ্জিন শক্তিশালী হয়ে থাকে। যার কারনে এই বাইকগুলো কোন বিরতি ছাড়ায় দীর্ঘক্ষন যাত্রা করতে সক্ষম। সাধারনত বাংলাদেশে এভেইলেবল ট্যুরিং বাইকগুলোতে ম্যাক্স পাওয়ার থাকে ১৪-১৮bhp/৮০০০-১০০০০rpm আর ম্যাক্স টর্ক থাকে ১৪nm/৭৫০০rpm। যার কারনে এই বাইক থেকে বেশ ভালো ইঞ্জিন পারফর্মেন্স পাওয়া যায়।
•ফুয়েল ট্যাংক: দূরে যাত্রার ক্ষেত্রে বাইকে তেল থাকা আবশ্যক। সব জায়গায় তেল নাও পাওয়া যেতে পারে। সেজন্য ট্যুরিং বাইকগুলোর তেলের ট্যাংক বেশ বড় দেওয়া থাকে এতে প্রয়োজনীয় পরিমান তেল নিয়ে নিশ্চিন্তে যাত্রা করা যায়।
•মাইলেজ: অন্যান্য বাইকের মতোই এই বাইকের মাইলেজ পাওয়া যায়। এসব বাইকের মাইলেজ হয়ে থাকে 40-45kmpl।
•ব্রেকিং সিস্টেম:দূরে যাত্রার ক্ষেত্রে ব্রেকের দিকে লক্ষ্য রাখতে হয়। রাস্তায় বিভিন্ন ঘটনা ঘটতে পারে সে কারনে বাইকের ব্রেক সিস্টেম ভালো হওয়া জরুরী। ট্যুরিং বাইকগুলোতে অন্যান্য বাইকের মতোই ডাবল ডিক্স ব্রেক দেওয়া থাকে তবে কিছু কিছূ বাইকে এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করা থাকে।
•টায়ার:এবার আসা যাক ট্যুরিং বাইকের টায়ার এর বিষয়ে। দূরে যাত্রার সময় রাস্তা সব সময় ভালো হয় না। কোন কোন রাস্তা ভাঙ্গা আবার কোন রাস্তা কাঁদা। এসব কিছু মোকাবিলা করার জন্য ট্যুরিং বাইকগুলোতে ক্রুসার বাইক টায়ার ব্যবহার করা থাকে যা অনরোড এবং অফরোডে চলতে সক্ষম।
স্পেশাল ফিচার: অন্যান্য বাইকের তুলনায় ট্রুরিং বাইকগুলোতে কিছু স্পেশাল ফিচার এ্যড করা থাকে। যেমন- জিপিএস, অডিও সিস্টেম, ইউএসবি চার্জিং ইত্যাদি।
বাংলাদেশে ট্যুরিং বাইকের সংখ্যা একেবারেই সামান্য। বর্তমানে বাংলাদেশে তিনটি বাইক আছে যেগুলোকে আমরা ট্যুরিং বাইক বলতে পারি। এই তিনটি ট্যুরিং বাইক সম্পর্কে