সমসাময়িক পরিস্থিতিতে দেশের চলমান বাজারে সবচাইতে ব্যবসাসফল পন্যগুলোর মধ্যে মোটরবাইক অন্যতম। এই পরিস্থিতির জন্য করোনাকালীন সামাজিক দূরত্ব এবং নানান বিধি-নিষেধ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে তা বলাই যায়। মূলত এসময় থেকেই সাধারন মানুষ গনপরিবহনের বিকল্প খোঁজা শুরু করে আর চাহিদার শীর্ষে চলে আসে মোটরবাইক। তারও পুর্বে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই খাতের শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে শর্তসাপেক্ষে ব্যাবসায়ীদের সরকারের পক্ষ থেকে কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়াতে দাম কমে আসে মোটরবাইকের এবং সম্প্রসারিত হয় বাজার। আর দেশী বিদেশী প্রায় সব ধরনের আমদানীকারক এবং প্রস্তুতকারকদের দেশের ভেতরেই উৎপাদন শুরু করার ফলে কোম্পানীগুলোও দাম কমায় তাদের মোটরবাইকগুলোর। তাই সব ধরনের ক্রেতাদের হাতের নাগালে চলে আসে সেসব। আর ব্যাক্তিগত বাহন হিসেবে বিপুল জনপ্রিয়তা পায় মোটরবাইক।
তবে বর্তমানে মোটরবাইক কেবল আর প্রয়োজনীয়তার গন্ডিতে আবদ্ধ নেই। বিপুল জনপ্রিয়তার কারনে এটি এখন পরিনত হয়েছে হালের ক্রেজে। মোটরবাইক কমিউনিটি কেন্দ্রিক নানান কর্মকান্ড এখন হরহামেশাই চোখে পড়ে। যা দেশে নতুন করে প্রিমিয়াম সেগমেন্টের মোটরবাইক এর চাহিদা বৃদ্ধি করেছে। এই সেগমেন্টে ভাল পারফর্মেন্স, সেরা লুক, আর নানান সুরক্ষামুলক বৈশিষ্ট নিয়ে ক্রেতাদের পছন্দের ব্র্যান্ড হচ্ছে ইয়ামাহা। এ সি আই মটরস্ এর হাত ধরে অফিসিয়ালি দেশে আসছে ইয়ামাহার বেশ কিছু আকর্ষনীয় মডেল যা সন্তুষ্টি যোগাচ্ছে ক্রেতামহলে। তবে এবারের বাজেটের পর দাম বাড়ছে সব ধরনের মোটরবাইকের। আর, ইয়ামাহার ক্ষেত্রেও হয়তো তার ব্যাতিক্রম হবে না। এই মুল্যবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে কিছু যৌক্তিক কারন।
প্রথমত, বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতির ফলে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক সংকট। এর ফলে বর্তমানে দেশীয় বাজারে প্রায় সব দিক থেকেই চলছে ভারসাম্যহীন অবস্থা। ডলারের বিপরীতে টাকার মান নিম্নমুখী হওয়ার ফলে যে কোন আমদানী নির্ভর পন্যের জন্য গুনতে হতে পারে বাড়তি টাকা। আর মোটরবাইক শিল্প এখনও অনেকটাই আমদানী নির্ভর। মে, ২০১৯ থেকে গাজীপুরের শ্রীপুরে ইয়ামাহার ফ্যাক্টরী স্থাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে উৎপাদন শুরু করে এ সি আই মটরস্। তবে সেটা CKD পদ্ধতিতে হবার কারনে সকল যন্ত্রাংশের জন্য আমদানীর উপর নির্ভরশীল। ডলার দরবৃদ্ধির ফলে সেসব আমদানী করতে হচ্ছে বাড়তি দামে। আর প্রিমিয়াম সেগমেন্ট এর মোটরবাইক Yamaha R15 V3, Yamaha XSR 155, Yamaha MT15 ইত্যাদি মডেলগুলো CBU ইউনিট আকারে সম্পুর্ন প্রস্তুত হয়ে আসছে বিদেশ থেকে। এ বিষয়ে এ সি আই মটরস্ এর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আরও জানা গিয়েছে, ডলার রেট বৃদ্ধি এবং আমদানী শুল্ক বৃদ্ধির যে আভাস পাওয়া গিয়েছে তা যদি পরিবর্তিত না হয় তবে বিভিন্ন মডেল ভেদে ৫% পর্যন্ত দাম বাড়ছে ইয়ামাহা মোটরবাইকের। তবে অনেকেই ভাবছেন দেশের অর্থনীতির ক্রান্তিকালে এই খাত একটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। বাজারে দিন দিন যে হারে এই প্রিমিয়াম সেগমেন্টের মোটরবাইক এর চাহিদা বাড়ছে তাতে আপাতদৃষ্টিতে অনেকেই ভাবছেন কিছুটা মুল্যবৃদ্ধির পরেও এই দিকে ক্রেতাদের আকর্ষণে ঘাটতি হবে না।