বাংলাদেশের অতি সুপরিচিত মোটরসাইকেল ব্রান্ড ইয়ামাহা যার বাইক প্রিমিয়াম সেগমেন্টের বাইক লাভারদের পছন্দের শীর্ষে এবং ইয়ামাহার অন্যান্য বাইকগুলাও ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী পছন্দ তালিকায় শীর্ষে। এইদিক দিয়ে বলতে গেলে ১২৫সিসি সেগমেন্টে ইয়ামাহার অন্যতম সেরা একটি কমিউটার মোটরসাইকেল হলো ইয়ামাহা স্যালুটো ১২৫সিসি।
সাধারন প্রয়োজনে বা যাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনে পথের দুরুত্ব বেশি অতিক্রম করা লাগে, ব্রান্ড বিবেচনায় তারা ইয়ামাহা স্যালুটোকে পছন্দ তালিকায় সবার আগে রাখেন। এমনটাই জানিয়েছেন আমাদের নিকট ইয়ামাহা স্যালুটোর ১৭ জন ব্যবহারকারী।
আজকে আমরা ইয়ামাহা স্যালুটোর ১৭ জন ব্যবহারকারীর দৃষ্টিতে উক্ত বাইকের সাধারন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যার মধ্যে উল্লেখ থাকবে সবার দৃষ্টিতে থাকা ভাল, মন্দ এবং আরও ভাল হতে পারতো এমন সকল বিষয়সমুহ।
প্রথমত আলোচনা করা উচিত ইয়ামাহা স্যালুটোর ভালদিক সমুহ যা থেকে একজন সম্ভাব্য ক্রেতা কেন ইয়ামাহা স্যালুটো ১২৫সিসি কেনা উচিত তার ব্যাপারে একটা স্পষ্ট ধারনা পেতে পারেঃ
আমাদের তথ্যদাতারা সবাই যে বিষয়টা সামনে রেখে এই ইয়ামাহা স্যালুটো কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা হলো এই বাইকের ব্রান্ড ভ্যালু। ইয়ামাহা ব্রান্ডের ওপর ভরসাই ছিল তাদের এই বাউকটা কেনার প্রধান কারন।
কেনার পরে সবাই যে বিষয়টা নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট তা হলো ইয়ামাহা স্যালুটোর ইঞ্জিন পারফরমেন্স। এখানে আমাদের তথ্য প্রদানকারী ১৭ জন ব্যবহারকারী সবাই নির্বিঘ্নে স্বীকার করেছেন যে ইয়ামাহা তার সুনাম তাদের স্যালুটো মডেলেও অক্ষুন্ন রেখেছেন।
আরামের ব্যাপারটা ইয়ামাহা স্যালুটোর আরেকটি অসাধারন বৈশিষ্ট্য যার ব্যাপারে প্রতিটা ব্যবহারকারীই বলেছেন। কমিউটার বাইক হিসেবে বা দীর্ঘসময় ধরে বাইকের ওপর বসে থেকে কোনরকম ক্লান্তির অভিযোগ এখনও কেউ আমাদের জানায়নি।
ব্রেকিং এবং ব্যালেন্সিং এ ইয়ামাহা স্যালুটো এককথায় অসাধারন বলেই সবাই উল্লেখ করেছেন। সামনের চাকার ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনে ড্রাম ব্রেকের সমন্বয় স্যালুটোকে অসাধারন করে তুলেছে। অনেকের কাছেই এই বাইকটা ১২৫সিসির থেকেও ভালো ব্যালেন্স দেয় বলে মনে হয়েছে যা সত্যিই অবাক করার মত। অন্যদিকে উচ্চ গতিতেও কমবেশি সবাই ভালভাবেই নিয়ন্ত্রন করতে পারেন।
এছাড়া ব্যবহারকারী ভেদে অনেকেই ইয়ামাহা স্যালুটো ১২৫ এর আলাদাভাবে কিছু বিষয় আমাদের কাছে উপস্থাপন করে থাকনে তবে তার মধ্যে এই বিষয়গুলা কমবেশি সবার তথ্যের মধ্যেই আমরা পেয়েছি যা উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে যদি আমরা ব্যবহারকারীদের অভিযোগের দিকে নজর দিই তবে এক্ষেত্রেও সবার অভিযোগ কয়েকটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খাচ্ছে তারমধ্যে যেকয়েকটি বিষয় অন্যতম তা হলোঃ
হেডলাইট এবং এবং মিটার কনসোলের সেটআপ সবার কাছেই দুর্বল মনে হয়েছে। বিশেষত তাদের যারা স্যালুটো নিয়ে লম্বা যাত্রা করেন এবং বেশিরভাগ সময় উচ্চগতিতে বাইক চালান। উনাদের ভাষ্যমতে, স্যালুটোতে উচ্চ গতি উঠালেই হেডলাইট এবং মিটারের অংশটা এমনভাবে কাপাকাপি শুরু করে যেন মনে হয় এখনই খুলে পড়ে যাবে। হেডলাইটের আলোও যে খুব ভাল তাও না কারন বেশিরভাগ ব্যবহারকারী হেডলাইটের আলোর পরিমান নিয়ে অভিযোগ করেছেন।
ইঞ্জিন পারফরমেন্সে সবাই যেমন খুশি ঠিক তেমনই ধীর গতির এক্সেলেরেশন সবার মন খারাপেরও একটা কারন।
ইয়ামাহা স্যালুটোর ডাইমেনশন এবং ওজন অনুযায়ী এর পেছনের চাকা অনেকটাই চিকন বলে আমাদের জানিয়েছেন বেশিরভাগ ব্যবহারকারী যার কারনে গতি এবং মাইলেজ বেশ পাওয়া গেলেও গ্রিপিং এর সক্ষমতা অনেকাংশেই কমে যায়।
সিটিং পজিশনটা অনেকটাই উচু বলে মনে হয়েছে ব্যবহারকারীদের যা সাধারনত অন্যান্য কমিউটার বাইকে দেখা যায় না।
সমস্ত ব্যাপারগুলি নিয়ে সামগ্রীক বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পাবো ইয়ামাহা স্যালুটো ১২৫ এর সে সমস্ত বিষয়গুলা ব্যবহারকারীদের চোখে কটু মনে হয়েছে তা খুবই সাধারন হিসেবেই আমরা গন্য করতে পারি। তাছাড়া অনেক ব্যবহারকারীই এই সমস্ত ব্যাপারগুলাকে ইতিবাচকভাবেই দেখেছেন এবং কারন হিসেবে উল্লেখ করেছেন, দাম বিবেচনায় এই ধরনের বাইকে কিছু না কিছু সমস্যা থাকবে এটাই স্বাভাবিক একইসাথে একটি সাধারন মডেলের বাইক একসাথে সবার চাহিদা কোনদিনই পুরন করতে পারবে না।
তাই আপনি যদি কমিউটার সেগমেন্টের যেকোন বাইক কিনতে যান সেক্ষেত্রে আপনাকে ভাল এবং খারাপ সকল বিষয় মেনে নিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই সেগমেন্টের প্রতিটা বাইক তৈরি করা হয়ে থাকে সব ধরনের পথে চলার উপযোগী করে।