2023-01-31
Views: 168
ছোট সোনা মসজিদ
ছোট সোনামসজিদ ‘সুলতানি স্থাপত্যের রত্ন’ বলে খ্যাত। মসজিদের প্রধান প্রবেশ পথের উপরিভাগে স্থাপিত একটি শিলালিপি অনুযায়ী জানা যায় জনৈক মজলিস-ই-মাজালিস মজলিস মনসুর ওয়ালী মুহম্মদ বিন আলী কর্তৃক মসজিদটি নির্মিত হয়। শিলালিপিতে নির্মানের সঠিক তারিখ সম্বলিত অক্ষরগুলি মুছে গেছে। তবে এতে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ এর নামের উল্লেখ থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, মসজিদটি তার রাজত্বকালের (১৪৯৪-১৫১৯) কোন এক সময় নির্মিত। পুরো মসজিদের অলংকরণে মূলত পাথর, ইট, টেরাকোটা ও টাইল ব্যবহার করা হয়েছে। এদের মাঝে পাথর খোদাই এর কাজই বেশি। মসজিদের সম্মুখভাগ, বুরুজসমূহ, দরজা প্রভৃতি অংশে পাথরের উপর অত্যন্ত মিহি কাজ রয়েছে, যেখানে লতাপাতা, গোলাপ ফুল, ঝুলন্ত শিকল, ঘণ্টা ইত্যাদি খোদাই করা আছে। খিলানগুলোতেও পাথর খোদাই এর অলংকরণ রয়েছে। ক্রেইটন ও কানিংহামের বর্ণনা থেকে জানা যায়, একসময় বাইরের দিকে পুরো মসজিদটির উপর সোনালি রঙের আস্তরণ ছিল, মতান্তরে কেবল গম্বুজগুলোর ওপর। গম্বুজগুলোর অভ্যন্তরভাগ টেরাকোটা সমৃদ্ধ। প্রাচীন এই স্থাপত্যটি রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। বিভাগীয় শহর রাজশাহী থেকে ৮৫ কিমি পশ্চিমে ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ৩৫ কিমি উত্তরে অবস্থিত। যারা বাইক নিয়ে এই স্থাপত্যটি দেখতে যেতে চান তাদের জন্য প্রথমেই রাজশাহী-চাঁপাই হাইওয়ে ধরে যেতে হবে। রাজশাহী শহর থেকে আপনি কোর্ট স্টেশন মোড় পার হয়ে পাবেন কাশিয়াডাঙ্গা মোড়। এরপর ২৮ কিমি সামনে গোদাগাড়ি গোল চত্তর। গোদাগাড়ি গোল চত্তরের আগেই মিলবে কসবা, হরিপুর বাজার, বিজয়নগর মোড়, রাজাবাড়ি হাট ও গোপালপুর বাজার। এখানকার মিষ্টি বেশ জনপ্রিয়। গোদাগাড়ি গোল চত্তর পার হয়ে সোজা সামনে গেলেই বাসুদেবপুর মোড় ও রাজারামপুর মোড়। সেখান থেকে ৫ কিমি সামনে গিয়ে পড়বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিশ্বরোড মোড়। বিশ্বরোড মোড় থেকে সোনামসজিদ ৩৫ কিমি পথ। বিশ্বরোড মোড় থেকে হাতের বাম দিকের পি টি আই বিশ্বরোড ধরে সামনে গেলে শান্তির মোড় এরপর মহানন্দা ব্রিজ ও বারঘরিয়া বাজার। এটাই সোনা মসজিদ যাবার রাস্তা। এই রাস্তার অপর নাম নওয়াবগঞ্জ-শিবগঞ্জ সড়ক। এই রাস্তায় পড়বে মহারাজপুর, রাণীহাটি বাজার, শিবগঞ্জ, কানসাট। কানসাটে রয়েছে বড় আমের বাজার। কানসাট পার হয়ে ১০ কিমি সামনে গেলেই মেইন রাস্তার ডান পাশে প্রাচীন এই স্থাপত্যটি অবস্থিত। এছাড়াও এটি বাংলার রাজধানী গৌড়-লখনৌতির ফিরোজপুর কোয়াটার্স এর তাহখানা কমপ্লেক্স থেকে অর্ধ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং সোনা মসজিদ স্থলবন্দর জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। বর্তমানে সোনা মসজিদ প্রাঙ্গণে একটি পার্ক গড়ে ওঠেছে। এছাড়াও মূল মসজিদের উত্তর দিকে একটি দিঘি রয়েছে, এককালে এতে বাঁধানো ঘাট ছিল।