Yamaha Banner
Search

তাহখানা কমপ্লেক্স

2023-02-01
Views: 201

তাহখানা কমপ্লেক্স


তাহখানা পারসিয়ান শব্দ যার আভিধানিক অর্থ ঠান্ডা ভবন বা প্রাসাদ। গৌড়-লখনৌতির ফিরোজপুর এলাকায় একটি বড় পুকুরের পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত ভবন কাঠামোটি ঐতিহ্যগতভাবে তাহখানা নামে পরিচিত। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী তোহাখানা কমপ্লেক্স বা তোহাখানা অবস্থিত। ছোট সোনামসজিদ থেকে আধা কিলোমিটারেরও কম পথ। হাইওয়ে ধরে সোনামসজিদ আম বাজার পার হয়েই হাতের বাম দিকের রাস্তাটিই তাহখানা যাওয়ার রাস্তা। সোনামসজিদ আম বাজার গিয়ে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলে তাহখানা যাওয়ার রাস্তা বলে দিতে পারবে। ঐতিহাসিক বিবরণ থেকে জানা যায় যে এর নির্মাতা মুগল সুবাহদার শাহ সুজা (১৬৩৯-১৬৬০ খ্রিঃ)। শাহ সৈয়দ নেয়ামতউল্লাহর প্রতি ভক্তি নিদর্শনের উদ্দেশ্যে তাপনিয়ন্ত্রিত ইমারত হিসেবে এই তোহাখানা নির্মাণ করেন। গৌড়ের মত সুপ্রাচীন স্থাপত্যকর্ম তাহখানা ছাড়া অন্যত্র তেমন দেখতে পাওয়া যায় না। এর ছাদ এবং দেয়ালগুলো কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে তৈরি।মসজিদ এবং তাহখানা উভয়েই 'দাফে-উল-বালাহ' নামক জলাধারের পাশে অবস্থিত। দুটি বাধানো সিড়ি জলাধারের পানির নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত। মূল প্রাসাদের উত্তর পশ্চিম দিকে আরও দুটি ভবন রয়েছে। এদের মধ্যে নিকটস্থটি হলো তিন গম্বুজ বিশিষ্ট একটি মসজিদ এবং অন্যটি হলো বাঁধানো বারান্দা সহ একটি গম্বুজবিশিষ্ট সমাধি। ভবনগুলো প্রায় একই সময়ে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এদের একত্রে একটি কমপ্লেক্স হিসেবে বিবেচনা করা যায়। ভবনটি মূলত ইট দ্বারা নির্মিত। তবে দরজার চৌকাঠের জন্য কালো পাথর এবং সমতল ছাদের জন্য কাঠের বিম ব্যবহৃত হয়েছে। ভবনটিকে পশ্চিম দিক থেকে দেখলে একতলা বলে মনে হতে পারে, তবে পূর্ব দিক থেকে দ্বিতল বলেই মনে হয়। ঘরগুলি থেকে সৃষ্ট সুড়ঙ্গপথ প্রসারিত হয়ে জলাধারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেছে। ভবনের পশ্চিমে একটি হাম্মাম (গোসলখানা) রয়েছে যাতে পানি সরবরাহের জন্য রয়েছে অষ্টভূজাকৃতির একটি কূপ। প্রাসাদটি মূলত মুঘল স্থাপত্যের কারুকার্যের আদলে প্লাস্টার এবং সৌন্দর্যমণ্ডিত করা হয়েছে। তোহাখানা কমপ্লেক্সের ভেতরে আরো নাম না জানা অনেক সমাধি দেখা যায়। যাদের পরিচয় এখনো জানা যায় নি। তবে এদেরকে হযরত শাহ সৈয়দ নেয়ামতউল্লাহর খাদেম বা সহচর বলে ধারনা করা হয়।


Filter