বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত প্রাচ্যের ক্যামব্রিজ খ্যাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে রাজশাহী শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহার প্রাণের বিনিময়ে স্বাধিকার সংগ্রামের ইতিহাসে যুক্ত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর সামনে রয়েছে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা এর সমাধি।প্রায় ৭৫৩ একর বা ৩০৪ হেক্টর এলাকাজুড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৫টি উচ্চতর গবেষণা ইন্সটিটিউট, ৯টি অনুষদের অধীনে ৫৬টি বিভাগে বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে অনেক প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ ও ভাস্কর্য । রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইট দিয়ে ঢুকলে প্রথমেই চোখে পড়বে সাবাস বাংলাদেশ ভাস্কর্য যেটা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক। তার একটু সামনে গেলেই প্রশাসনিক ভবন-১ এর সামনেই রয়েছে ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহার সমাধি তার ঠিক ডান পাশে তাকালে দেখা যাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ জয়ন্তির স্মারক সুবর্ণ জয়ন্তি টাওয়ার। এই সুবর্ণ জয়ন্তি টাওয়ার এর সামনে রয়েছে অত্যান্ত সুন্দর প্যারিস রোড যেটা বাংলাদেশের অন্যান্য সব সুন্দর রাস্তাগুলোর মধ্যে একটি। এই প্যারিস রোড সবচেয়ে সুন্দর লাগে বৃষ্টি শেষে পড়ন্ত বিকেলে। প্যারিস রোডে রয়েছে পুরোনো আমলের বড় বড় গাছপালা এই প্যারিস রোডে বাইক নিয়ে যাওয়ার অনুভূতি অন্যরকম। এছাড়াও রয়েছে শহীদ মিনার কমপ্লেক্স এটি প্রশাসনিক ভবন-২ এর সামনে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে শহীদ মিনার অবস্থিত। যেখানে রয়েছে রাবি শহীদ মিনার, শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা দুটি মুরাল ও উন্মুক্ত মঞ্চ। উল্লেখ্য, এটি একটি ওয়াই ফাই জোন। শহীদ মিনারের সামনে রয়েছে সুন্দর বিশাল এলাকা জুড়ে মসজিদ । অন্যান্য সুন্দর মসজিদগুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদকে প্রথম সারিতে রাখা যাবে। এদিকে আরও রয়েছে বিদ্যার্ঘ যেটা মুক্তিযুদ্ধকালে শহীদ গণিত বিভাগের শিক্ষক হবিবুর রহমান স্মরনে "বিদ্যার্ঘ" স্মারকসৌধটি নির্মিত হয়। এটি শহীদ হবিবুর রহমান হল চত্বরে অবস্থিত|। স্ফুলিঙ্গ অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বপাশে শহীদ শামসুজ্জোহা হল প্রাঙ্গণে অবস্থিত। বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে একটু দূরে অবস্থিত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় যেতে হলে আপনাকে অবলম্বন করতে হবে । জিরো পয়েন্ট- তালাইমারী প্রধান সড়ক কিংবা রেলগেট- তালাইমারী প্রধান সড়ক। তালাইমারী মোড়ের একটু সামনেই রয়েছে রাজশাহী প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) । এই রুয়েটের সামনে কাজলা মোড় থেকেই ক্যাম্পাস শুরু। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্য রয়েছে কাজলা গেইট, প্রধান গেইট, বিনোদপুর গেইট ও চারুকলা গেইট। যে কোন একটি গেইট দিয়ে আপনি প্রবেশ করে ঘুরতে পারেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।