ক্রুজার বাইকের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো আরামের সাথে বাইক রাইডিং। বাজাজের Avenger সিরিজটি আইকনিক অর্থাৎ প্রতিটি বাইকই দেখতে প্রায় একই রকম। কাওয়াসাকির Eliminator ক্রুজারটির ব্যপক সাফল্যে আগ্রহী হয়ে বাজাজ ২০০৫ সালে তাদের নিজস্ব প্রোডাক্ট Avenger সিরিজের সুচনা করে। প্রথম বাইকটি ছিলো ১৮০সিসি।এর পরে ২০০ এবং তারপরে ২২০সিসি বাইক নিয়ে আসে এই সিরিজে। সিসি বাড়ানোর পাশাপাশি বাইকের গুনগত মানও বৃদ্ধি করা হয়।
Bajaj Avenger 150 Street তাদের Avenger সিরিজে সর্বশেষ সংযোজন। ইনডিয়াতে এটিকে সবচেয়ে কম সিসি ইনজিনের কম দামের ক্রুজার বলা হচ্ছে, এবং Avenger সিরিজে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বাইক। কম মূল্য, অল্প সিসি এবং জনপ্রিয় মডেল ১৮০/২০০/২২০ এর সাথে সম বৈশিষ্ট্যের ডিজাইন বাইকটিকে তরুনদের পছন্দের শীর্ষে রেখেছে। বাজাজ মুলত তরুনদের টার্গেট করে এই বাইকটি প্রস্তুত করেছে।
ইনজিন: ১৪৯ সিসির শক্তিশালী ইনজিনটি ১৪.৩ BHP শক্তি এবং ১২.৫Nm টর্ক তৈরী করতে পারে। ইনজিনটি টুইন স্পার্ক, ২ ভাল্ব, এক সিলিন্ডার বিশিষ্ট এয়ার কুলড DTS-i ইনজিন। ব্যবহার করা হয়েছে বড় আকৃতির এয়ারফিল্টার। ৫গিয়ারে বাইকটি সর্বোচ্চ ১১০কিমি/ঘন্টা পর্যন্ত গতি তুলতে সক্ষম।
গঠন: ২১৭৭মিমি/৮০১মিমি/১০৭০মিমি আয়তনের বাইকটির সীট হাইট ৭২৫মিমি। মাঝারী হাইটের যেকোন বাইকারের জন্য আদর্শ উচ্চতার বাইক। আর সাধারন ক্রুজার নীচু সীট হাইটেরই হয়ে থাকে, তাই সীট হাইটটি যথেষ্ট সুবিধাজনক। ১৪৮০মিমি লম্বা হুইলবেইজ এবং ১৪৮কেজি ওজনের বাইকটি আরামদায়ক রাইডের জন্য পারফেক্ট।
জ্বালানী ট্যাংক: ১৪লিটার ধারনক্ষমতা সম্পন্ন লম্বা এবং প্রসস্ত জ্বালানী ট্যাংকটিতে রিজার্ভ থাকে ৩.৪ লিটার। জরুরী মুহুর্তে লম্বা পথ পাড়ি দেবার জন্য যথেষ্ট। পূর্ণ ট্যাংক জ্বালানি নিয়ে নির্ভাবনায় ৬০০+কিমি পথ পাড়ি দেয়া সম্ভব।
সাসপেনশন: যে কোন ধরনের রাস্তায় এবং ব্রেকিং এর জন্য সামনে এবং পেছনে রয়েছে কার্যকরী সাসপেনশন সিস্টেম। সামনে ব্যবহার করা হয়েছে টেলিস্কপিক এবং পেছনে টুইন শক সাসপেনশন। ব্যালেন্স, ব্রেকিং এবং কমফোর্টে পুর্নমাত্রায় কার্যকর।
ব্রেক: Bajaj Avenger 150 এ সামনে ব্যবহার করা হয়েছে ২৪০মিমি ডিস্কব্রেক এবং পেছনে ১৩০মিমি ড্রাম ব্রেক। নরম সাসপেনশন, চওড়া টায়ার, লম্বা হইলবেইজ থাকার কারনে ব্রেকিং যথেষ্ট ভালো।
হুইল ও টায়ার: বাইকটিতে ১২স্পোক বিশিষ্ট এলয় হুইল ব্যবহার করা হয়েছে। সামনে ১৭ ইঞ্চি এবং পেছনের হুইল ১৫ ইঞ্চি। পর্যাপ্ত গ্রীপ সহ চওড়া টায়ার রয়েছে। টায়ারের সাইজ সামনে ৯০/৯০ এবং পেছনে ১৩০/৯০।
ইন্সট্রুমেন্ট কনসোল: ক্লাসিক বৈশিষ্ট্যের ক্রুজারের সাথে মানানসই গোলাকৃতি এনালগ কনসোল ব্যবহার করা হয়েছে। যেখানে রয়েছে গজ মিটার, ট্রীপ মিটার রয়েছে, ট্রীপ বাটন, অডোমিটার।
হেডলাইট: সামনের ক্রোম করা গোলাকৃতি হেডলাইটে ব্যবহার করা হয়েছে ৬০ওয়াট বাল্ব যা ১২ভোল্ট বিদ্যুতে চলে এবং সুতীব্র এবং উজ্বল আলো রাতের অন্ধকার ভেদ করে পথ দেখাতে যথেষ্ট শক্তিশালী।
হ্যান্ডেলবার: আরামদায়ক রাইডের জন্য Bajaj Avenger 150 Street এ রয়েছে ক্রুজারসুলভ হ্যান্ডেলবার যা সীট থেকে খুব সহজেই ব্যবহার করা যায়। বামপাশে রয়েছে হর্ন, টার্নিং ইনডিকেটর সুইচ, হেডলাইটের হাই-লো বীম সুইচ এবং পাসিং সুইচ। ডানপাশে রয়েছে ইনজিন কিল এবং ইলেক্ট্রিক স্টার্ট সুইচ।
সীট: সুপ্রশস্ত নীচু আরামদায়ক চালকের সীট সহ পেছনে লম্বা পিলিয়ন সীট রয়েছে। এই সিরিজের অন্যান্য বাইকের মতো পিলিয়নের ব্যাকরেস্ট না থাকলেও উচু গ্র্যাববার রয়েছে।
Bjaja Avenger 150 Street কেন কিনবেন?
যদিও ক্রুজার বাইক মুলত ব্যবহার হয় আরামের সাথে দীর্ঘপথ পাড়ি দেয়ার জন্য। আর তাই ক্রুজারের সাধারনতই শক্তিশালী ইনজিন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই বাইকটি বাজাজ ক্রুজারের সবচেয়ে কম সিসি ব্যবহার করা হয়েছে যা আমাদের মতো দেশে ব্যবহারের জন্য আদর্শ। কেননা দীর্ঘ পথ পাড়ি দেবার জন্য পথ যেমন আমাদের নেই, তেমনি একাধিক বাইক কেনার বিলাসিতা করাও আমাদের জন্য সম্ভব নয়, তাই একই বাইকে ক্রুজার এবং কমিউটারের সুবিধা বাইকটি কাজে দিবে। স্টাইল, ইনজিনের ক্ষমতা ও পারফরমেন্স সব মিলিয়ে বাইকটি দামের সর্বোচ্চ ব্যবহার হবে বলেই আশা করা যায়।