মোটরসাইকেল চালানোর শুরুটা হয় ১০ বছর আগে থেকে। এযাবৎ আমি ৪ টা মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছি। সর্বশেষ ব্যবহার করছি Bajaj Avenger 150 Street. একজন ব্যবসায়ী হয়েও এই বাইকটি আমার খুবই পছন্দের। এটি একটি আরামদায়ক বাইক। আজকে আমি আমার ব্যবহৃত Bajaj Avenger 150 Street ক্রুজারটির ভালো ও মন্দ কিছু দিক তুলে ধরবো আমার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা থেকে। যারা এই মোটরসাইকেলটির ভালো-মন্দ সম্পর্কে জানতে চান আশা করি আমার অভিজ্ঞতা হয়তো কিছুটা হলেও আপনাদের সাহায্য করবে। বাইকটি আমি দেড় মাস আগে কিনেছি এবং এযাবৎ প্রায় ৭০০ কিমি পথ চালিয়েছি কোন সমস্যা ছাড়াই। এই মোটরসাইকেলটি সম্পর্কে বলতে হলে প্রথমেই বলতে হয় এর ডিজাইনের কথা। বাজাজের প্লাটিনা, ডিস্কোভার এবং এভেন্জার সিরিজগুলোর প্রায় প্রতিটি সিরিজ মডেলগুলো দেখতে প্রায় একই রকম। তবে এই ক্রুজার মোটরসাইকেলে রয়েছে লম্বাকৃতি ফুয়েল ট্যাংক, গোলাকৃতি হেডলাইট, পেছনের থেকে সামনের চাকা কিছুটা উচু। লং রাইডের উপযোগী আরামদায়ক রাইডিং পজিশন এবং নরম সীট। এছাড়া এর লম্বা হুইলবেজ এবং চাকাগুলো মোটা। যারা ক্রুজার মোটরসাইকেল পছন্দ করেন তাদের এই মোটরসাইকেলটি এক দেখাতেই ভালো লেগে যাবে। যেটা আমারও হয়েছিলো। বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেম খুবই উন্নত।
ভাল দিকঃ
- ডিজাইন সুন্দর।
- সিটিং পজিশন অনেক বড় এবং আরামদায়ক।
- সাসপেনশন গুলো খুব ভাল।
- হেড লাইটে পর্যাপ্ত আলো হয়।
- যে কোন যাতায়াতে ভাল অনুভূতি পাই।
- মাইলেজ ভাল।
- ইঞ্জিন পারফর্মেন্স চমৎকার।
- ব্রেকিং সিস্টেম উন্নত।
মোটরসাইকেলটি পছন্দের কারণ?
এই মোটরসাইকেলটির গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং এর আউটলুক দেখে আমার পছন্দ হয়। এগুলো আমার কাছে আনকমন মনে হয়েছে।
ডিজাইনের পরে স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে ইনজিনের কথা। মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন খুব শক্তিশালী। এটি ৫টি গিয়ার বিশিষ্ট বাইক। মোটরসাইকেলটি শহরের মধ্যে চলাচলে আমার কাছে যথেষ্ট আরামদায়কই মনে হয়েছে। দূরের পথে যাবার এখনও সুযোগ হয়ে ওঠে নাই, কিন্ত আমি আশা করি হতাশ করবে না। বাংলাদেশের মতো রাস্তায় চলার জন্য ক্রুজারটির ইঞ্জিন যথেষ্ট শক্তিশালী এবং কার্যকরী। যদিও ক্রুজার বাইক মুলত ব্যবহার হয় আরামের সাথে দীর্ঘপথ পাড়ি দেয়ার জন্য। আর তাই ক্রুজারের সাধারনতই শক্তিশালী ইঞ্জিন রয়েছে।
বাইকটির পারফরমেন্স এবং আরামের কথা বললে একটি কথা বলতেই হয়। বাংলাদেশে বাজাজ পালসার জনপ্রিয় অনেকগুলো কারনে তার মধ্যে অন্যতম হলো তাদের প্রায় প্রতিটি মোটরসাইকেল আরামদায়ক। বাজাজ এভেন্জার তার ব্যতিক্রম নয়। নরম গদিযুক্ত সামনের নীচু সীট, রাইডিং পজিশন অসাধারন অনুভুতি এনে দেয়। ক্রজারসুলভ উচু হ্যান্ডেল রাইডে আরামের পাশাপাশি আত্নবিশ্বাস জোগায়। এর সামনের এবং পেছনের উভয় সাসপেনশনই নরম এবং আরামদায়ক। বাজাজের সাসপেনশনের কোয়ালিটি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। যারা বাজাজের মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছেন তারা জানেন বাজাজের সাসপেনশন অন্য যে কোন বাইকের থেকে সেরা। হেডলাইটের আলো রাতের রাইডের জন্য যথেষ্ট।
মাইলেজ সিটিঃ ৪০ কিমি।
মাইলেজ হাইওয়ে ৪৮ কিমি।
যেহেতু আমাদের দেশে দূরের পথ পাড়ী দেবার মতো রাস্তা এবং সুযোগ নেই বললেই চলে। তাই ক্রুজারের পাশাপাশি কমিউটার বাইকও দরকার যেটি বাজাজ এভেন্জার এ রয়েছে। লম্বা হুইলবেজের কারনে শহরের ভীড়ে চালাতে সামান্য কষ্ট হলেও বাকি সুবিধাগুলো এই কষ্ট ভুলিয়ে দেবে। তাই বাইকটি এখন পর্যন্ত সন্তুষ্ট নিয়েই ব্যবহার করছি। আমি বলবো, ক্রুজার এবং কমিউটারের সংমিশ্রনে টেকসই এবং কম জ্বালানী খরচের ক্রুজার কেনার কথা যদি ভেবে থাকেন তাহলে চোখ বন্ধ করে Bajaj Avenger 150 Street কিনতে পারেন। আমার মতো আপনিও সন্তুষ্ট নিয়ে ব্যবহার করবেন এটি নিশ্চিত করেই বলতে পারি। স্টাইল, ইনজিনের ক্ষমতা ও পারফরমেন্স সব মিলিয়ে বাইকটি দামের সর্বোচ্চ ব্যবহার হবে বলেই আশা করা যায়।