মধ্য বয়সে এসে আজও মোটরসাইকেলের সিটে বসলে তারুন্যের উন্মাদনা অনুভব করি। কিশোর বয়স থেকেই মোটরসাইকেলের প্রতি ভালোলাগা রয়েছে। যদিও সে সময় মোটরসাইকেলের সহজলভ্যতা ছিলো না। পরিচিতজনের মোটরসাইকেল পেলেই সেটি নিয়ে চালানো নেশার মতো ছিলো। কলেজ এবং ভার্সিটি লাইফে ব্যপকভাবে মোটরসাইকেল ব্যবহারের সুযোগ ঘটে। পড়াশোনা শেষে কর্মজীবনে এসে শুরু সময়টি মোটরসাইকেল নিয়েই কাটিয়েছি। সম্প্রতি ব্যবহার করছি বাজাজ এভেন্জার ১৫০ স্ট্রীট ক্রুজারটি।
আমি এম এ সবুর। রাজশাহীর স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান জমজম হসপিটাল লিমিটেড এ সিইও হিসেবে কর্মরত আছি। আমার ব্যবহৃত বাজাজ এভেন্জার ক্রুজার মোটরসাইকেলটি আমার সুযোগ্য বড় সন্তান তাহান মুফাররিদ নাবিল কিনেছে। মোটরসাইকেলটি মুলত আমিই ব্যবহার করি। বিগত কয়েকমাস ব্যবহারের আলোকে ক্রুজারটির ভালো-মন্দ যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি তা আপনাদের কাছে শেয়ার করবো।
ছোটবেলার ভালো লাগা এবং পরবর্তিতে কর্মজীবনে হরেক রকমের মোটরসাইকেল চালানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেগুলোর অধিকাংশই ছিলো সাধারন চলাচলের কমিউটার বাইক। এভেন্জার সেগুলোর থেকে একটু ভিন্নধর্মী, যাকে বলে ক্রুজার। বাজাজের প্রতিটি মোটরসাইকেলের ডিজাইনই রুচীসম্মত। তাই যেকোনো বয়সের মানুষের সাথে সহজেই মানিয়ে যায়। এই মোটরসাইকেলটির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বাইকটি আমার ছেলেকে যেমন মানায় তেমনি আমার ব্যক্তিত্বের সাথেও যায়। সুন্দর রংএর সাথে মানানসই হাল্কা গ্রাফিক্স আমার কাছে বেশ রুচীশীল বলেই মনে হয়। ক্রুজারটির লম্বা হুইলবেজ, আরামদায়ক নীচু সীট আমার কাছে ভালো লাগে।
আমার বয়সের সাথে স্পীড মানায় না, যদিও তরুন বয়সে অনেক স্পীডে মোটরসাইকেল চালাতাম। যেহেতু মোটরসাইকেলটি নিয়ে শহরের মধ্যেই বেশি যাতায়াত হয়ে থাকে সেহেতু স্পীডের প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু এর ইনজিনটি বেশ শক্তিশালী এবং স্মুথ। নিজের প্রয়োজনে তানোর সহ বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়েছে। দূরের রাস্তায় ইনজিনটি যথেষ্ট ভালো সার্ভিস দেয়।
জ্বালানি খরচও বেশ সাশ্রয়ী বলেই আমি মনে করি। লিটারে ৪০-৪৫কিমি পথ পাড়ি দিতে পারে। ১৫০সিসি ক্রুজার হিসেবে এটি বেশ ভালো বলেই আমি মনে করি।
মোটরসাইকেলটির সিটিং পজিশন খুবই চমতকার। দীর্ঘক্ষন বসলেও কষ্ট হয় না। হ্যান্ডেলবার এবং বার এ থাকা সুইচগুলোর মান যথেষ্ট ভালো। হেড লাইটের ফোকাস বেশ দূর পর্যন্ত স্পষ্ট আলো দিয়ে থাকে। সাসপেনশনগুলো মানসম্মত এবং কার্যকর। খারাপ রাস্তায় সেভাবে ঝাকুনি বোঝা যায় না। তবে বাইকটি লম্বা থাকায় শহরের মধ্যে চলাচলে কিছুটা কষ্টকর।বিশেষ করে যেসব রাস্তায় জ্যাম বেশি থাকে সেখানে চলাচলে কিছুটা সমস্যাই বটে। আরেকটি সমস্যা ফেস করি, সকালে সেল্ফ স্টার্টটি ঠিকমতো কাজ করে না।
পরিশেষে আমি একথাই বলবো আমি বাইকটি ব্যবহার করে এখন পর্যন্ত সন্তুষ্ট। যারা স্পীডের তুলনায় আরাম বেশি পছন্দ করেন তারা নিশ্চিন্তে এই মোটরসাইকেলটি নিতে পারেন। আমি মনে করি হতাশ হবেন না।