বাইক চালানোর নেশা আমার অনেক দিন আগের, ঠিক করে বলতে গেলে স্কুল লাইফ শেষ করে সেই ২০০৭ সালের পর থেকেই আমি পালসার ব্যবহার করতাম এবং সেই বাইকটা আমার অনেক সখের বাইক ছিল যেটা এই বছরের শুরুর দিকে চুরি হয়ে যায়। সত্যি করে বলতে গেলে আমি মানসিকভাবে অনেকটাই বিপর্যস্থ হয়ে গিয়েছিলাম আমার বাইকটাকে হারিয়ে কিন্তু যখন বাজাজ এভেঞ্জার ১৫০ স্ট্রীট বাইকটা বাজারে দেখলাম আমি মানসিকভাবে আরও প্রফুল্লতা ফিরে পেলাম নতুন বাইক নেওয়ার। বাজাজ কোম্পানী এমন একটা বাইক নিয়ে আসবে তা আমার ধারনাতে ছিল না তাই এই এভেঞ্জারের ব্যাপারটা আমার কাছে অনেকটা সারপ্রাইজের মতই ছিল। ঠিক সেই ব্যাপারটা মাথায় রেখে আমি এই বাইকটা বাজারে আসার পর কিনতে খুব বেশি দেরি করিনি। এই বাইকটা আমি গত প্রায় ৩ মাস যাবত ব্যবহার করছি এবং এই সময়ের মধ্যে আমি প্রায় ১৮০০ কিলোমিটার চালিয়েছি। এই অভিজ্ঞতার আলোকে আমার দেখা আমার বাইকের ভালকিছু দিক নিম্নরুপঃ
-এর কন্ট্রোলিংটা এককথায় অসাধারন যা নিয়ে আমাকে কখনই সমস্যায় পড়তে হয় নি
-সিটিং পজিশনটা ঠিক যেমন একটা ক্রুজার বাইকের হউয়া উচিত। আমি সারাদিন রাইড করলেও এই বাইক থেকে কোনরকম ক্লান্তি আসে না
-এর লুকটা অসাধারন যা বাংলাদেশে বিদ্যমান কোন বাইকের সাথে মিলে না আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল আমি খুব কম মানুষই দেখেছি যারা আমার বাইকেরদিকে তাকিয়ে দেখে না
-ইঞ্জিন পারফরমেন্স বেশ ভাল যা আমাকে একই রকম পারফরমেন্স দিয়ে যাচ্ছে এখন পর্যন্ত আবার কোনরকম ওভার হিটিং আমি এখন পর্যন্ত খেয়াল করতে পারি নি।
-এই বাইকে যে রঙ ব্যবহার করা হয়েছে আমার দৃষ্টিতে তা অত্যন্ত উন্নতমানের কারন এর চকচকে ভাবটা সবার নজর কাড়ে এবং আমার মনে হয় রঙ কোয়ালিটিটা সহজে নষ্ট হউয়ার না।বাকিটা সময় বলে দেবে।
-এছাড়াও এই বাইকে বেশ কিছু ভাল লাগার দিক রয়েছে
একইসাথে কিছু বিষয় আমাকে অনেকটাই বিড়ম্বনায় ফেলেছে এবং সেগুলামুলত এই বাইকের ওভার লুকিং এর কারনেও হতে পারে কিছুটা। এর মধ্যে রয়েছেঃ
-এর হেডলাইটের আলো অনেক কম যার কারনে রাতে বাইক চালাতে গিয়ে অনেক সময় আমাকে চরম বিরক্তি সহ্য করতে হয়। এই ব্যাপারটা নিয়ে অভিযোগ শুধু আমার না বরং এই বাইক যারা ব্যবহার করে তাদের সবারই আমি আশা করি যে কোম্পানী উক্ত ব্যাপারে সঠিক পদক্ষেপ নিবে।
-এর দামটা অনেক বেশি বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। ১৫০সিসির ক্রুজার লুকের বাইক এটি তাই বলে এত বেশি দাম এর ফিচার এবং পারফরমেন্সের সাথে মানায় না
অন্যদিকে যদি প্রশ্ন আসে যে ১৫০সিসি সেগমেন্টে আবার ক্রুজার বা সেমি ক্রুজার সেগমেন্টে আরও অনেক বাইক থাকার পরেও কেন আমি বাজাজ এভেঞ্জার ১৫০সিসি বাইকটা পছন্দ করলাম?
আমি আগেই উল্লেখ করেছি যে বাজাজেরবাইক আমি অনেক আগে থেকে পছন্দ করি শুধু তা ই না বরং আমি দীর্ঘদিন বাজাজ পালসার ব্যবহার করেছি এবং সেই থেকে বাজাজের প্রতি ভাল লাগা আছে। আর এভেঞ্জারের মত বাইকের লুক নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই কারন এমন লুক সম্পন্ন বাইক আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে খুব কম দেখা যায়।
এই বাইকের মাইলেজটা আমার কাছে কোনভাবেই ভাল মনে হয় নি কারন এই বাইকে ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে ১৫০সিসির কিন্তু আমি বর্তমানে মাইলেজ পাচ্ছি ৩৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার শহরে বাইক চালানোর সময় এবং প্রায় ৪০ কিলোমিটার প্রতি হাইওয়েতে বাইক চালানোর সময়। ক্রুজার হিসেবে মেনে নিলেও ১৫০সিসির একটি বাইক হিসেবে এমন মাইলেজ মেনে নেওয়াটা খুব কষ্টদায়ক।
অন্যদিকে আমার বাইকে যে প্লাস্টিকের অংশগুলা ব্যবহার করা হয়েছে তা বেশ ভাল বলেইমনে হয়। আমি এখনও আমার এই বাইক নিয়ে কোন ধরনের দুর্ঘটনা বা পড়ে যাওয়ার সম্মুখীন হয় নি যা থেকে আমি বুঝতে পারবো যে আসলেই প্লাস্টিকগুলা কতটা মজবুত।