আমার পেশাগত প্রয়োজনেই একটা মোটরসাইকেলের দরকার মনে হয়েছিল আর এমন একটা মোটরসাইকেল যা দিয়ে দীর্ঘ পথ এবং দীর্ঘক্ষন পথ চললেও আমার বা আমার মোটরসাইকেলের কোন ক্লান্তি আসবে না। আমি আমার আশপাশে খেয়াল করে দেখতাম যে আমার মত একই প্রয়োজনে যারা বাইক ব্যবহার করে তাদের বেশিরভাগই বাজাজের বাইক ব্যবহার করে তাই আমি একদিন বাজাজের শোরুমে যায় এবং আমার প্রয়োজন অনুযায়ী ১০০সিসি থেকে ১২৫সিসির বাইক গুলা খেয়াল করি। ১২৫সিসির যে বাইক ছিল তার কালার আমার পছন্দ হয় নি, একথা জানালে শোরুম থেকে আমাকে জানানো হয় যে ১১০সিসি আর ১২৫সিসির মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। তাছাড়া আমার বাজেটেরও কিছুটা সমস্যা ছিল। শোরুমে সেসময় ডিস্কভার ১১০ ডিস্ক মডেলটা ছিল আমার পছন্দের রঙ্গেরটা।
তাই আমি আর গভীরভাবে কোনকিছু চিন্তা না করে ১১০সিসির ডিস্কভার কিনে নিই, আমার কাছে যার বয়স প্রায় ১০ মাস আর এখন পর্যন্ত আমি বাইকটা চালিয়েছি ১৩০০০ কিলোমিটার। আমি আগেই উল্লেখ করেছি যে আমার পেশাগত প্রয়োজনে আমার মোটরসাইকেল দরকার ছিল, সে একই প্রয়োজনে আমাকে প্রতিদিন ৩০-৩৫ কিলোমিটার বা তার দিগুন কোন কোন দিন তিনগুন দুরুত্বও অতিক্রম করা লাগে।
স্বভাবিকভাবেই চালাতে গিয়ে আমি আমার বাজাজ ডিস্কভার ১১০ ডিস্ক বাইকটাতে কিছু সমস্যা বুঝতে পেরেছি যা আমি ক্রমান্বয়ে উল্লেখ করছিঃ
প্রথমত, ব্যাটারী ডাউন হয়ে গিয়েছিল, পরে আমি তা বদলে নিয়েছি। প্রথম ১০ মাসেই আমাকে ব্যাটারীতে হাত দিতে হবে এমনকি তা বদলে ফেলতে হবে তা আশা করিনি।
চেইনে সমস্যাটা গুরুতর, খুব বিরক্তিকর। যতদুর আমি শুনেছি বাজাজের এই সমস্যা কমন। তাদের প্রতিটা মডেলেই নাকি চেইনে সমস্যা দেখা দেয়।
চলতি পথে পিক আপ একটু কমবেশি হলেই চলতি অবস্থাতেই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই সমস্যাটা শুরুতে ছিল না, যত সময় যাচ্ছে সমস্যাটা বেশি দেখা দিচ্ছে।
নতুন করে হর্নে সমস্যা হচ্ছে, ঠান্ডা লেগে গেলে মানুষ যেমন শব্দ করে ঠিক সেরকম শব্দ বের হচ্ছে হর্ন থেকে।
প্রথম ৩৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আমি মাইলেজ পেয়েছিলাম ৬৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার কিন্তু তার পর থেকে মাইলেজ কমতে থাকে। আমি বর্তমানে মাইলেজ পাচ্ছি সর্বোচ্চ ৫৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার। আমার জানা মতে মাইলেজ কমে যাওয়ার কথা না বা কমলেও এতটা কমে যাবে এটা কেউই আশা করে না।
অন্যসবার থেকে আমার মোটরসাইকেলটা একটু বেশি চালানো হয়ে থাকে তবে আমি এখন পর্যন্ত একদিনে একটানা চালিয়েছি ১৭৫ কিলোমিটার আর সর্বোচ্চ গতির কথা বলতে গেলে আমি প্রায়ই উঠায় ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা।
আসলে বাজাজ বাংলাদেশের অনেক পুরনো এবং সুপরিচিত একটা মোটরসাইকেল ব্রান্ড আর তাদের প্রায় প্রতিটা মডেলই স্ববৈশিষ্ঠের জন্য প্রয়োজন মাফিক কাস্টমারের কাছে সমাদৃত। মুলত তাদের সুনামের কারনেই তৃনমুল পর্যায়ে বাজাজের বাইকের এত চাহিদা কিন্তু বাইক ব্যবহার করতে যেয়ে যদি মাত্র ১০ মাসের মাথায় এই ধরনের সময়াগুলা নজরে আসে তাহলে ভরসার জায়গাটা নষ্ট হয়।
আমি আশা করবো বাজাজ এই ব্যাপার গুলার দিকে আন্তরিক দৃষ্টি দিবে আর কাস্টমার সন্তুষ্টির ব্যাপারটাকে আরও জোরালো ভুমিকা নিয়ে খেয়াল করবে।