বাজাজ ডিস্কোভার ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল রিভিউ - সৈয়দ আলী

আমার পরিচয় আমি মোঃ সৈয়দ আলী। পেশায় আমি একজন দোকান ব্যবসায়ী। আমার মোটরসাইকেল এর নাম বাজাজ ডিস্কোভার ১২৫ সিসি। এটা আমার জীবনের ১ম বাইক। এই মোটরসাইকেলটি আমি তাহেরপুর বাজারের “রাব্বি এন্টারপ্রাইজ” নামক শোরুম থেকে কিনেছি। আমি ১ মাস আগে এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। এই ১ মাসে আমি প্রায় ৫০০ কিমি পথ চালিয়েছি। আমি সাধারণ যাতায়াতের জন্যই মূলত আমি এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। তবে আমি মোটরসাইকেল খুব কম চালাই। আমার প্রয়োজন ছাড়া কখনোই অপ্রয়োজনে মোটরসাইকেল চালাই না। আজকে আমার সাথে টিম মোটরসাইকেল ভ্যালীর সাথে সাক্ষাৎ হয়। তাদের মাধ্যমে আমি আমার মোটরসাইকেল এর রিভিউ প্রকাশ করতে পারায় খুব খুশি। এমন সুযোগ আমি আগে কখনো পাই নাই। এখন আমি আমার মোটরসাইকেল সম্পর্কে ভাল ও মন্দ সকল তথ্য সবার মাঝে শেয়ার করছি।

বাজাজ ডিস্কোভার ১২৫ সিসির মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভাল। এর ইঞ্জিনটা খুবই শক্তিশালী। এই মোটরসাইকেল এর বডির প্লাস্টিক গুলো অনেক মজবুত। আমি দেখেছি অল্প আঘাতে এগুলোর কিছুই হয় না। অর্থাৎ খুব সহজে এগুলো ফেটে যায় না বা ভেংগে যায় না। এর ইঞ্জিনের শব্দটাও চমৎকার। আমার এই মোটরসাইকেলটি দীর্ঘক্ষণ চালালেও ওভার হীট হওয় না। আগের ডিস্কোভার ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল এর ডিজাইনের সাথে বর্তমানের ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল এর অনেক ভিন্নতা রয়েছে। যেমন, এটিতে রয়েছে ডিজিটাল মিটার, এল ই ডি হেড লাইটসহ আরো কিছু নতুন ফিচারস। এই মোটরসাইকেল কিনার আগে সর্ব প্রথম আমি ডিজাইন পছন্দ করেছি। ডিজাইনটা বেশ নজরকড়া। আমি মনে করি এই বাইকের ডিজাইন দেখলে সকলের ভাল লাগবে এবং সকল বয়সের মানুষের সাথে এটি মানানসই। আমি শোরুমে এই মোটরসাইকেলটি মাত্র একবার দেখেই পছন্দ করেছি। এই মোটরসাইকেলটি অল্প কিছুদিন আগে বাজারে এসেছে। এই মোটরসাইকেলটি আমার আগে থেকে পছন্দ ছিল না। নতুন মডেল এবং প্রথম বাজারে এসেছে এটা ভেবেই কিনেছি। এছাড়া মোটরসাইকেলটির ডিজিটাল মিটারটি আমার একটু বেশিই পছন্দের মধ্যে পড়ে।

এই মোটরসাইকেল এর সিটিং পজিশন আমার খুব ভাল লেগেছে। এর সিটটা বেশ বড়। এছাড়া সিট নরম হওয়ায় সিটে বসে খুব আরামের সাথে আমি চালাতে পারি। তবে এই মোটরসাইকেল এর হ্যান্ডেলবারটি খুব কড়া ছিল। আমি কিছুদিন আগে সেটি সার্ভিসিং করিয়ে নিয়েছি। আমার হ্যান্ডেলবার ধরে চালানোর সময় হাতে ব্যথা করত। তবে এখন আর সেই সমস্যা হয় না। আমি হাই রোডে সর্বোচ্চ ৬৫ কিমি /ঘণ্টা গতি তুলেছি। এমন গতিতে চালিয়ে কোন সমস্যা বুঝতে পারি নাই।

মোটরসাইকেলটির সাসপেনশন গুলো নরম হওয়াতে খারাপ রাস্তা বা কাচা রাস্তাতে চালালেও খুব বেশি পরিমাণে ঝাঁকুনি অনুভব করি না। এর ব্রেক মোটামুটি ভাল। তবে ডিস্ক ব্রেক থাকলে কন্ট্রোল করতে আরো বেশি সুবিধা হত। এছাড়া এই মোটরসাইকেল এর চেন খুব দ্রুত লুজ হয়ে যায়। আমি ১ম মাসেই এক বার সেটি সার্ভিসিং করিয়ে নিয়েছি। আমি রাতে মোটরসাইকেলটি চালিয়ে বুঝতে পেরেছি যে, হেড লাইটে প্রচুর পরিমানে আলো হয়। এর সুইচ গুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি এগুলো ব্যবহার করে আমাকে কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। এর লুকিং গ্লাস থেকে আমি পিছনের দৃশ্য পরিষ্কার দেখতে পাই। এছাড়া মোটরসাইকেলটিতে সেল্ফ থাকায় আমি একটু বেশিই খুশি। এর ব্যাটারির কোয়ালিটিও বেশ মজবুত। মোটরসাইকেলটির চাকার গ্রিপ গুলো ভাল হবার কারনে এটি খুব কম স্লিপ করে। হাই স্পীডে চালালেও আমি ভাল ভাবেই এটি কন্ট্রোল করতে পারি। এই বাইকটি মোটামুটি আরামদায়ক।

বর্তমানে আমি আমার মোটরসাইকেল থেকে ভাল মাইলেজ পাচ্ছি। আমি যদিও তেল একুরেট মেপে দেখি নাই, তবে আমি মনে করি শোরুম থেকে কিনার সময় যেমন মাইলেজ এর কথা বলেছিল তেমনই মাইলেজ পাচ্ছি। তাই এটা নিয়ে আমার তেমন মাথা ব্যাথা নেই। মোটরসাইকেলটি থেকে আমি ভাল পারফরমেন্স পেলেই খুশি। আমি এ যাবত এক দিন সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে তারা আমার সাথে ভাল ব্যবহার করেছে। তারা আমার কাজটিই আগে করে দিয়েছে। আমি সেখানে বড় কোন সমস্যা নিয়ে যাই নাই। শুধু মাত্র চেন টাইট করা এবং বাইকের ঘাড় লুজ করার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। এছাড়া তারা আমার মোটরসাইকেল এর অল চেক আপ করে দিয়েছেন। সেখানকার পরিবেশটা আমার কাছে অনেক সুন্দর লেগেছে। সার্ভিসিং সেন্টার নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই।

অন্যান্য ব্যান্ডের ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল এর তুলনায় বাজাজ ডিস্কোভার ১২৫ সিসির এই মোটরসাইকেলটির দাম অনেক বেশি। মোটরসাইকেলটির সকল পারফরমেন্স বিবেচনা করে দামটা আর একটু কমানো উচিৎ বলে মনে করি। দাম কম হলে এই মোটরসাইকেলটি আরো অধিক হারে বিক্রয় হবে। কেননা, এটি দেখতে আকর্ষণীয়, ডিজাইন ভাল, তেল খরচও কম। এই মোটরসাইকেলটি যে কেউ দেখলেই তার পছন্দ হবে বলে মনে করি। সেজন্য কোম্পানির উচিৎ দামটা আর একটু কমানো। দাম কমার সাথে সাথে এই মোটরসাইকেল এর চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে এবং বিক্রয়ের হার দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে। পরিশেষে আর একটি কথা বলতে চাই, এই মোটরসাইকেল অনুযায়ী সঠিক অয়েল ব্যবহার করলে খুব সহজে ইঞ্জিনে কোন প্রকার সমস্যা দেখা দিবে না বলে আমি মনে করি। এই মোটরসাইকেলটি আমার কাছে যথেষ্ট ভাল লেগেছে। যারা ১২৫ সিসির মধ্যে মোটরসাইকেল কিনার কথা ভাবছেন তারা এর ভাল দিক গুলো বিবেচনা করে এই মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

All BAJAJ bike price in bd

Bajaj Discover 125 Drum