আমার পেশাগত এবং দৈনন্দিন কাজের তাগিদে ভাল মাইলেজ সমৃদ্ধ একটা মোটরসাইকেল দরকার ছিল। এইদিক দিয়ে আমাকে খুব বেশি সময় বা অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নেওয়া লাগে নি কারন আমাদের দেশে ভাল মাইলেজ সমৃদ্ধ অনেক মোটরসাইকেলই আছে বিশেষত ১০০সিসি থেকে ১২৫সিসির মোটরসাইকেল সবগুলাই ভালমানের কমিউটার এবং আমার উদ্দেশ্যের প্রয়োজনে সেরা মোটরসাইকেল।
তবে ব্রান্ডের দিক দিয়ে আমি বাজাজকে এগিয়ে রেখেছিলাম কারন আমার আশপাশের বেশিরভাগ বাইক ব্যবহারকারী বাজাজ ব্যবহার করে আর বাংলাদেশে বাজাজ ব্রান্ড দীর্ঘদিন থেকে সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছে। আরেকটা ব্যাপার আমার নজরে এসেছে তা হলো যাদের বেশি বেশি বাইক চালানো লাগে তারা বাজাজের বাইকটাই ব্যবহার করে।
এই বিষয়গুলা চিন্তায় নিয়ে আজ প্রায় ১৬ মাস হলো আমি বাজাজ প্লাটিনা ১০০কেএস মোটরসাইকেলটা ব্যবহার করছি আর এই ১৬ মাসে আমি বাইকটা চালিয়েছি প্রায় ১১,০০০ কিলোমিটার। ১৬ মাস একটা মোটরসাইকেলের খুব বেশি বয়স না হলেও ১১,০০০ কিলোমিটার একটা মোটরসাইকেলকে মোটামুটিভাবে বোঝার জন্যে যথেষ্ট বলেই আমি মনে করি।
এই মোটরসাইকেলটার বেশ কিছুদিক আমার নজরে এসেছে যা উল্লেখ করা প্রয়োজনঃ
-আমার মোটরসাইকেলটার গিয়ার শিফটিং স্মুদ না। আমাকে গিয়ার চেঞ্জ করতে হলে কয়েকবার চেষ্টা করতে হয় তারপরে কাজ করে। আমি ব্যাপারটা শোরুমে জানালে তারা কি যেন একটা পরিবর্তনের কথা বলেছিল।
-হেডলাইটের আলোটা লাল এবং দুর্বল যা রাতে চালাতে বেশ ভালই সমস্যা তৈরি করে। আমি মনে করি লাল আলোর হেডলাইটের দিন শেষ এখন সাদা এলইডি লাইট হলে খুব ভাল হয়।
-আমি প্রথম ৬ মাসে বেশ কয়েকবার গতি উঠিয়েছিলাম ৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা কিন্তু ৬ মাস পার হউয়ার পরে আমি একবারও ৮০ উপরে গতি চেষ্টা করেও উঠাতে পারিনি।
-আর মাইলেজ নিয়ে যেহেতু আমি বাজাজ ব্রান্ডের মোটরসাইকেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাই মাইলেজ নিয়ে বিস্তারিত বলতে গেলে আমি এখন সর্বোচ্চ মাইলেজ পাচ্ছি ৬০ কিলোমিটার প্রতি লিটার যেটা ফাকা হাইওয়েতে আর শহরের মধ্যে ৫০-৫৫ এর বেশি না। ১০০সিসির একটা মোটরসাইকেল থেকে যেখানে গড়ে ৬০ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পাওয়াটা স্বাভাবিক সেখানে আমি সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার মাইলেজ পাচ্ছি।
আমি আমার মোটরসাইকেলটা প্রতিদিন গড়ে ৩০ – ৪০ কিলোমিটার চালিয়ে থাকি। একবার একদিনে ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত চালিয়েছিলাম যেখানে আমি আরাম নিয়ে কোন সমস্যা পায় নি সাথে ব্রেকিং সিস্টেমটাও বেশ ভাল সাপোর্ট দিয়েছে।
মোটকথায় কয়েকটা সমস্যা বাদে আমার মোটরসাইকেলটা আমাকে বেশ ভালভাবেই সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। এই দামের মধ্যে আমি আমার বাইকটা থেকে যে সার্ভিস পাচ্ছি তা দিয়ে আমি মোটের ওপর সন্তুষ্ট কারন একটা মোটরসাইকেল থেকে তো আর সবকিছু ঠিকঠাক আশা করাটা বোকামী ছাড়া আর কিছু না।