যেহেতু মোটরসাইকেল এখন অন্যতম একটি জনপ্রিয় এবং অতিসাধারন ব্যক্তিগত বাহন এবং আমি নিজেও এই সময়ের রীতি অনুভব করে মটরসাইকেল ব্যবহার করছি। পাঠকদের স্বাগতম জানায় আমার বাইকটাকে আমার চোখ দিয়ে দেখার জন্যে। আমার নাম মোঃ সাত্তার আলি এবং আমি একজন ব্যাবসায়ী। আমার বর্তমান ঠিকানা বাশবাড়িয়া গ্রাম, বাগাতিপাড়া উপজেলা এবং নাটোর জেলা। গত ৮ মাস ধরে আমি “বাজাজ প্লাটিনা ১০সিসি” ব্যবহার করে আসছি। উল্লেখ করা ভাল যে এটাই আমার জীবনের প্রথম বাইক। আমি আমার এই বাইকটা মুলত ব্যবসা সামলানোর কাজে বেশি ব্যবহার করে থাকি একই সাথে পারিবারিক বিভিন্ন কাজ কর্ম সম্পাদন করাও আমার কাছে এখন খুব সহজ এবং অতি অল্প সময়েই শেষ করা যায়। যা আগে কেমন ছিল তা আপনারা খুব সহজেই ধারনা করতে পারেন। আজকে আমি এখানে মুলত আমার বাইকের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার জন্যে। আমি মনে করি আমার এই অভিজ্ঞতা শুধু ক্রেতার জন্যেই সহায়ক হবে না বরং কোম্পানীর জন্যেও যথেষ্ট সহায়ক হবে এর আধুনিকায়নের জন্যে। চলুন দেখে নিই “বাজাজ প্লাটিনা ১০০সিসি” বাইকের কোয়ালিটি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে।
প্রথমে আমরা দেখে আসি এর ডিজাইন এবং আউটলুক কতটা মানানসই। কারণ বেশিরভাগ বাইকারই আগে বাইরের দর্শন বিচার করে, গুন পরে। পরবর্তীতে আমি এর মাইলেজ এবং অন্যান্য পারফরমেনস নিয়ে আলোচনা করব এবং আমি আশা করি যে আপনার এখান থেকে পরিপুর্ন একটি ধারনা পাবেন। বলা বাহুল্য যে আমি একজন সাধারন বাইকার, কোন বাইক স্পেসালিস্ট না। কাজেই আমার মতামত সম্পুর্নভাবেই আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি এবং আপনার সাথে আমার নাও মিলতে পারে।
এর ডিজাইনটা আমার দৃষ্টিতে এককথায় অসাধারন। আমার জন্যে বোঝা সহজ যে, এই বাইকটা এমন এক ডিজাইন দিয়ে তৈরি যা যে কোন বয়সের বাইকারদের সাথে মানায়। এই বাইকটা চালাতে গিয়ে কাউকে কখনই তার বয়স এবং মানান নিয়ে চিন্তা করতে হবে না এই কথা আমি বলতেই পারি। একই সাথে এর অসাধারন কালার কম্বিনেশন এর সৌন্দর্য বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে যা অতি সুন্দর রুপে প্রকাশিত হয়েছে গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে। বিল্ড কোয়ালিটি এতটাই শক্তিশালী যা আমাকে আমার মত করে বাইক চালানোর আত্মবিশ্বাস এনে দেয়।
এই বাইকটার কম্ফোর্টের সার্ভিসটাও অসাধারন। সিটিং পজিশনটা দারুন এবং সিটিং পজিশনে থেকে হ্যান্ডেলবার ধরেও বেশ মজা আছে। দুটোর কম্বিনেশন ফিল করার মত আরামদায়ক। সুইচ গুলাও বেশ ভাল কাজ করে করছে এখন পর্যন্ত, বলার মত খারাপ কিছু এখনো অনুভব করিনি। হেডলাইটের লাইট ভাল বলতে গেলে তবে এটা আরো ভাল হতে পারত।
কন্ট্রোল হল আরেকটি গুরুত্বপুর্ন প্রশ্ন যা বাইকাররা অনেক সময় করে থাকে। এবং আমার বাইকের ব্যাপারে বলতে গেলে আমি খুব কম এমনকি কখনই কন্ট্রোল নিয়ে সমস্যাই পড়িনি। যে সময় ধরে আমি এই বাইক ব্যবহার করছি তাতে আমি হাই স্পিডে হালকা ভাইব্রেশন ফিল ব্রেকের পারফরমেনস বেশ ভাল রোডের অবস্থা অথবা আমার বাইকের গতি যা ই হোক না কেন। সাসপেনশন যথেস্টই উন্নত যা আমাকে রাস্তার অবস্থা খুব সামান্যই অনুভব করতে দেয়। টায়ারগুলাও উল্লেখ করার মত ভাল যার কারনে আমি এখনো কোন স্কিডিং বুঝতে পারিনি।
এবার আসি বহুল আলোচিত এবং জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ইঞ্জিন পারফরমান্স এবং মাইলেজ নিয়ে কথা বলতে। বলা ভাল যে, এই অংশটাই ক্রেতাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় মুখ্য হয়ে যায়। বিশেষশত ব্যাপারটি যখন ভারতীয় উপমহাদেশের আলোকে তখন অবশ্যই মাইলেজটাই সবার আগে বিবেচনা করা হয় কারণ বেশির বাইকারই তাদের যোগাযোগের জন্যে বাইক ব্যবহার করে থাকে। এখন পর্যন্ত এর ইঞ্জিনে কোন সমস্যা বা পারফরমেন্সে কোন ঘাটতি আমি অনুভব করি নি। প্রশ্ন যখন মাইলেজের? আমার বলতে ভাল লাগছে যে ১০০সিসি বাইক হিসেবে এর থেকে ভাল মাইলেজ আর আশা করা উচিত হবে না। বর্তমানে আমি ৭০ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পাচ্ছি যা আমার কাছে যথেষ্ট এবং তার থেকেও ভাল। আমার মনে হয় যারা সাধারন ব্যবহারের জন্য এই বাইক কিনেছে তারাও বেশ খুশি এই মাইলেজ নিয়ে। মাইলেজ এবং ইঞ্জিনের পারফরমান্স অতি আকাঙ্ক্ষিত বাজাজের মত ব্রান্ডের কাছে।
আমি তাদের সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি এবং আমি তাদেরকে তাদের ক্রেতাদের প্রতি যথেস্টই আন্তরিক পেয়েছি এবং দেখেছি। তাদের কর্মকৌশল সত্যিই প্রশংসার যোগ্য আমার দৃষ্টিতে।
ভাল দিকসমুহঃ
মাইলেজ এককথায় অসাধারন
ইঞ্জিনের শব্দটা খুবই স্মুদ
আউটলুকটা এমন যা সবার পছন্দ হবে এবং এটাকে ক্লাসিক লুক বললে ভুল হবে না।
নেতিবাচক দিকসমুহঃ
চেইন এবং এর পুরো সিস্টেমটাই সমস্যা আছে বলে আমার মনে মনে হয় যা বিরক্তিকত শব্দ করে।
এর কোয়ালিটি পারফরমান্স এবং ফিচার বিবেচনা পুর্বক এর দাওম নিয়ে কথা বলতে গেলে আমার মতে এর দামটা ঠিকই আছে। আওইনি যদি একই সেগমেন্টের বাইক কেনার কথা চিন্তা করেন তবে আমি এই বাইকটাকে আপনার পছন্দ তালিকার ওপরের দিকে রাখার পরামর্শ দিবো। আমি মনে করি আপনিও আমার মতই এনজয় করবেন এই বাইক চালিয়ে।
ধন্যবাদ সবাইকে।