আমি মোঃ সায়েদ আলী, পেশায় একজন ব্যবসায়ী। আর তাই ব্যবসার জন্য এবং একটু ঘোরাঘুরির জন্য তার সাথে ব্যক্তিগত চলাচলের জন্য একটি বাইক কেনার প্রয়োজন হয়ে উঠে। ছোট বেলা থেকে বাইকের প্রতি আমার তেমন আকর্ষণ ছিল না। কিন্তু বর্তমানে আমি বাইক ছাড়া এক বিন্দুও চলাচল করতে পারি না। বলতে গেলে এটা এখন আমার জীবনের একটি অংশ। যার দ্বারা আমি আমার ব্যবসাকে আরো গতিশীল ও দূরন্তময় করে তুলতে পারি। তাই আমার একটি বাইক অতি প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। এটাই আমার জীবনের প্রথম বাইক। তাই আমি আমার বাইকটিকে অনেক ভালবাসি। আর প্রথম বাইকের জন্য আমি আমার প্রয়োজন, পছন্দ এবং বাজেট জানিয়ে বন্ধুদের কাছে জিজ্ঞাসা করি বাইক সম্পর্কে। বন্ধুরা ও আমার পরিবার এবং আমার নিজ পছন্দে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে বাজাজ প্লাটিনা ১০০ বাইকটি কিনি। তবে বাইকটি কেনার আগে কিছু ব্যবহারকারীর মতামত এবং অভিজ্ঞতায় জানতে পারি বাইকটি টেকসই, ফুয়েল খরচ কম, আরামদায়ক, ডিজাইনটিও বেশ সুন্দর, সর্বপরি বাজেটের মধ্যে হওয়াতেই আমি বাইকটি কিনি। প্রায় তিন বছর পার হয়ে গেছে এই বাইকটি আমার ব্যবহার করা। তাই আমার কাছে মনে হয়েছে যে, এই বাইকটি সম্পর্কে আপনাদের সাথে কিছু কথা শেয়ার করা যায়।
আমি মনে করি এই বাইকটির ইনজিন বেশ শক্তিশালী এবং ভাল।ইনজিনের এয়ার কুলারও বেশ ভাল। প্রথম থেকেই বাইকটি আমাকে ভালো সার্ভিস দিয়ে আসছে। আমাকে প্রায় প্রতিদিন অনেক রাস্তা যাতায়াত করতে হয়। আর তাই কমিউটার বাইক হিসেবে এই পথ পাড়ি দিতে আমাকে বেগ পেতে হয়নি। বিভিন্ন সময়ে এবং ভিন্ন পরিস্থিতিতেও বাইক আমাকে কখনও নিরাশ করেনি। আর এর ইনজিনও কোন সমস্যা দেখা দেয়নি। একদিনে ২০০কিমি পর্যন্ত আমি বাইক চালিয়েছি, তবুও কোন সমস্যা আমার কাছে মনে হয়নি। যদি শুধু ইনজিন নিয়ে বলতে হয় তবে আমি বলবো যে, যেকোন মানুষ এই বাইকের ইনজিন পারফর্মেন্স নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট থাকবে।
আমি যেহেতু প্রতিনিয়ত বাইক নিয়ে যাতায়াত করি তাই বাইক কেনার সময়েই মাইলেজের কথা মাথায় রেখেই বাইকটি পছন্দ করেছিলাম। আমাদের দেশে সকল প্রকার বাইকের জগতে বেশি মাইলেজ দেবার মত জনপ্রিয় একটি ব্রান্ড হলো বাজাজ প্লাটিনা ১০০ বাইকটি একটি অন্যতম। আমি লিটারে ৭০ কিমি পেয়েছি। গতির দিক দিয়ে বলতে গেলে আমার অতি প্রয়োজন ছাড়া আমি খুব বেশি গতিতে বাইক চালাই না। আমার সর্বোচ্চ ৮৫ কিমি/ঘন্টায় চালিয়েছি, আর এটাই আমার জন্য বেশ অনেক গতি বলে আমি মনে করি। যদিও এই বাইকে এর থেকেও বেশি গতি তোলা সম্ভব।
বাজাজ প্লাটিনা ১০০ বাইকটির কন্ট্রোল চমৎকার। বাইকটির ডিজাইন সুন্দর ও বীল্ড কোয়ালিটি অনেক মজবুত। তাই এই বিষয় নিয়ে আমার তেমন কিছু বলার নেই। বাইকটির সীট বড় হওয়াতে পেছনে দুজন নিয়ে ড্রাইভ করতে কোন সমস্যা হয় না এবং রাইডারের সিটিং পজিশন বেশ ভাল। সীটের সাথে এর হ্যান্ডেল ধরেও আমি বেশ আরাম অনুভব করি এবং হ্যান্ডেলের সুইচ গুলোও বেশ ভাল কাজ করে। ছোট খাটো সমস্যা ছাড়া তেমন কোন বড় সমস্যা দেখা দেয়নি। আমি আগেই বলেছি যে, আমি তেমন বেশি জোরে গাড়ি চালাই না তাই এর ঝাকুনি আমি তেমন বুঝতে পারি নাই। এর শকাপ গুলোও বেশ ভালো কাজ করে। এই বাইকটির চাকার টায়ার গুলোও আমার কাছে বেশ ভাল মনে হয়েছে এখন পর্যন্ত আমিসহ আমার বাইক কখনো স্লীপ খায়নি। কিন্তু বাইকটির তেল খরচ অনেক কম তাই আমার কাছে বাইকটি বেশ পছন্দ। সার্ভিসিং সেন্টারের মানও আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। তাই এই বিষয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই।
বাইকটির ব্রেকও ভালোই কাজ করে তবে বাইকটির ওজন একটু হালকা হওয়াতে হার্ড ব্রেক করতে ভয় লাগে কারণ স্কিডিং এর ভয় আছে। আর এর পিকআপ তেমন ভাল কাজ করে না এবং ইলেক্ট্রিক স্টার্ট নাই, গিয়ার থাকা অবস্থায় ক্লাচ ধরেও স্টার্ট হয় না। তাই এই সমস্যা গুলো আমার কাছে বড় সমস্যা বলে মনে হয়েছে। বাইকটির এই সকল সমস্যাগুলো না থাকলে আমার কাছে বেশ ভাল মনে হতো।
সবশেষে বলতে পারি আমার মনের দিক দিয়ে বাজাজ প্লাটিনা ১০০ বাইকটি শক্ত ও বেশ মজবুত একটি বাইক। সমমূল্যের দামের সাথে তুলনা করলে এই বাইকটির দাম হিসাবে ঠিক আছে এবং আমার কাছে সেরা বাইক বলে মনে হয়েছে। এটি দীর্ঘ ব্যবহারের উপযোগী একটি বাইক। তাই ছাড়া নতুন বাইক কেনার কথা ভাবছেন এবং মনের মত কোন বাইক খুজছেন তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলব এই বাইকটি কিনে কেউ ঠকবেন না। একবার কিনে এর ফলাফল যাচাই করতে পারেন। ধন্যবাদ