Yamaha Banner
Search

English Version
2016-06-12

Bajaj Pulsar 150 motorcycle ownership review by Shirsho Khan


Bajaj Pulsar 150এমন কেউ কি আছেন যার কখনোই বাইক ভালো লাগেনি ! কি জানি হয়তো আছেন? এমন একজন মানুষের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর খুব ইচ্ছা আমার, কারণ বাইক ছাড়া এক মুহুর্ত ভাবতে পারি না আমি। আমি তো স্বপ্নেও বাইক চালাই। বাইক আমাদের সবারই মোটামুটি প্রিয় বাহন, একটি ছেলে তার স্কুল জীবন থেকে স্বপ্ন দেখে কলেজে, বা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবার পরে সে একটি বাইক কিনবে। বাইকের বহুবিধ সুবিধা আছে। একাই চালানো যায়, ড্রাইভার লাগেনা,
দাম তুলনামূলক সস্তা অন্তত কারের তুলনায় তো বটেই, মেন্টেনেস খরচ কম, কারের তুলনায় জ্বালানী কম লাগে, বাংলাদেশের যেকোনো রাস্তায় চালানোর উপযোগী আর আমার মতো তরুণদের কাছে তো তারুণ্যের প্রতীক। আর কি কিছু চাওয়া পাওয়ার বাকি থাকলো? ছোট থাকতেই বাইকের প্রতি আকর্ষণ ছিল দুর্দান্ত আর ইউনিভার্সিটিতে ভর্তী হবার পরে মনে হলো এটা ছাড়া আমি কেমন করে চলছি? এর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাইক Pulsar 150 কিনে ফেলি । তিন বছর হতে চলল বাইকটি চালাচ্ছি। আমার অনুভূতি যদি জানতে চান তবে বলবো আমি অভিভূত, সন্তুষ্ট এবং এই ফ্যান্টাস্টিক বাইকের মালিক হতে পেরে গর্বিত। বাইকটি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা তুলে ধরার আগে বাইকটি আমি কেনো পছন্দ করেছিলাম তা যদি আগে তুলে ধরি তা হলে হয়তো কষ্ট করে আর বাকি টুকু পড়তে হবে না বা বলাও লাগবে না।


প্রযুক্তি
DTSi মানে Digital Twin Spark Ignition, বাজাজ অটোর ট্রেড মার্ক। একমাত্র বাজাজ অটোরই ইন্ডিয়াতে এই টেকনোলোজির প্যাটেন্ট করা আছে। এটি এমন একটা টেকনোলোজি যা তুলনামূলক বড় ক্যাপাসিটির শক্তিশালী ইঞ্জিনে ব্যবহার করা হয়। DTSi টেকনোলজিকে The Alfa Romeo Twin-Spark engine ও বলা হয়। এই প্রযুক্তি প্রথম ১৯১৪ সালে কারে ব্যবহার করা হয় এবং ১৯৬০ এর দিকে রেস কারে ব্যবহার শুরু হয়। এই প্রযুক্তির মূল দিক হলো ইঞ্জিন এর সমস্ত শক্তি নিংড়ে বের করে আনা। BMW F650 Funduro, the Rotax motorcycle এবং Honda এর iDSI Vehicle engine গুলিতে এই একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। বাজাজ পালসারের মতো ছোট ক্যাপাসিটির ইঞ্জিনে এই প্রযুক্তির এতো চমৎকার সফল ব্যবহারে উদাহরণ আপনি আর খুঁজে পাবেন না।

ডিজাইন
ডিজাইনের কথা বলছেন? শহরের সবচেয়ে সুদর্শন বাইক এটি । এর সামনের দিকের রাশভারী, অভিজাত দর্শন আপনাকে মুগ্ধ করে দিবে। এর ডবল কার্ডিয়াল টাইপের চেসিস বাইকটির রাশভারী, অভিজাত দর্শনকে যেনো অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। এর দেহের প্রতিটি অংশই এতো যত্ন নিয়ে তৈরি করা হয়েছে যে, কোন কিছুই আপনার কাছে অবাঞ্ছিত মনে হবে না। এর তুলনামূলক লম্বা সিটের পেছনের অংশ সামনের থেকে কিঞ্চিৎ উঁচু হবার কারণে চালাকের পক্ষে বাইকটি চালানো যেমন অনেক সহজ হয়ে যায়, তেমনি যিনি পেছনে বসে থাকবেন তার জন্যেও অনেক আরামদায়ক হয়ে ওঠে ভ্রমণ। আসলে পালসারের নির্মানে বাজাজ অটো কোন কার্পন্য করেনি। এর প্রোটোটাইপ তৈরিতেই প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয় । অন্তত উইকিপিডিয়া আমাদের সেরকমের তথ্যই দেয়। ডিজাইনের ক্ষেত্রে Tokyo এর R&D সাথে মিলে বিখ্যাত মোটরসাইকেল ডিজাইনার ব্রিটিশ Glynn Kerrদিয়ে বাইকটির ডিজাইন করা হয় । যিনি BMW, Ducati, Honda, Triumph, Aprilia, Harley-Davidson, Kymco, Voxan Kawasakiমতো কোম্পানির বাইক ডিজাইন করেছেন । বাজাজ বহুদিন যাবত এই বাইকের মডেলের সেরকম কোন পরিবর্তন আনেনি। যা করেছে শুধু রঙের কিছুটা ভিন্নতা ব্যাস আর কিছু না। এই বাইকটা বাজাজের অন্যতম সৃষ্টি। এটি এমন একটি বাইক, যেই এর ওপরে বসবে বা চালাবে তাকেই মানাবে।

ইনজিন
যারা ১৫০ সিসির বাইক চালান তারা স্বাভাবিকভাবেই তুলনামূলক শক্তিশালী ইঞ্জিনের বাইক চান। বাজাজ অটো ইন্ডিয়ান মার্কেটকে বিবেচনাতে নিয়েই পালসার তৈরি করেছিলেন, আর ইন্ডিয়াতে ১৫০ সিসির বাইককে পারফর্মেন্স বাইকের এন্ট্রি লেভেল হিসাবে ধরা হয় । আগেই বলেছি DTSi প্রযুক্তির মূল দিক হলো ইঞ্জিন এর সমস্ত শক্তি নিংড়ে বের করে আনা। বাজাজ তার প্রথম জেনারেশানের পালসার ১৫০ এ যে পাওয়ার আউটপুট রেখেছিলো তার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রেখেছে।


ইঞ্জিন ১৪৯ সিসি, ৪-স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার ডিটিএস-আই এয়ার কুলিং ইঞ্জিন।
ইঙ্গিন ক্ষমতা ১৪.৮ বিএইচপি, ৯০০০ আরপিএম।
৫টি ম্যানুয়াল গিয়ার।
সামনের চাকায় আছে ডিস্ক ব্রেক, পেছনে চাকায় ড্রাম আর সাথে আছে প্যারালাল সাস্পেনশন।

ফীচার
বাজাজের প্রতিটি বাইকই ফিচারের দিক থেকে অনন্য , পালসারই বা বাদ যাবে কেনো ! Bajaj Pulsar 150 এর পার্ট-এনালগ পার্ট-ডিজিটাল instrument console আপনাকে এক অন্য ভুবনে নিয়ে যাবে। ক্লিপ অন হ্যান্ডেল বার, ইঞ্জিন কিল সুইচ, টিউব সেল ট্যায়ার, ডিসি হেড ল্যাম্প, শেল্ফ ক্যান্সেলিং টার্ন ইনডিকেটর সাথে ব্যাক লাইট সুইচ। অত্যান্ত মার্জিত এলইয় হুইল, ডিস্ক ব্রেক , ইলেকট্রিক স্টার্ট বাইকটির ফিচারকে এক ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।

তেল সাশ্রয়ী
আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে জ্বালানী সাশ্রয়ী ইঞ্জিন , বাইকের জন্য একটা অন্যতম গুন হিসাবে ধরা হয়। আর ১৫০ সিসির বাইকের দুর্বলতা এখানেই। সেখানে পালসারের তুলনামূলক জ্বালানী সাশ্রয়ী দিকটি বাইকারদের ভীষণ প্রিয়। বাজাজ অটো অফিসিয়ালি দাবী করে পালসার ১৫০ এর মাইলেজ ৬৫ কিমি/লিটার। আসলে এই সংখ্যাটি নির্ভর করে অনেক কিছুর উপরে। যেমন আপনি কিভাবে বাইকটি চালাচ্ছেন , ট্রাফিক কন্ডিশান, সমতল না পাহাড়ি রাস্তা, আবহাওয়া ইত্যাদির উপরে। এই সমস্ত বিষয়গুলি মাথায় রেখে পালসারের গড় মাইলেজ ৫৫ কিমি/লিটারের নীচে নামবে না। ফুয়েল ট্যাঙ্কে আপনি একবারে ১৫ লিটার তেল নিতে পারবেন।


শেষ কথা
আমি আগেই বলেছিলাম আমি বাইকটি কেনো পছন্দ করেছিলাম তা বলার পরে আর কিছু বলার বাকি থাকবে না। কিছু সীমাবদ্ধতা থাকবেই। নিখুঁত বলে এই পৃথিবীতে কি সত্যই কিছু আছে? চাঁদেরও কলঙ্ক আমরা খুঁজে ফিরি ! আমি মনে করি মৃত্যু ছাড়া একেবারে নিখুঁত আর কিছুই হতে পারেনা। অনেকেই পালসারের গিয়ার বক্স নিয়ে অভিযোগ করেন। গিয়ার চেঞ্জ করা কঠিন বা ফলস গিয়ার পড়ে। এটা আসলে অভ্যাসের ব্যাপার আপনি অভ্যস্ত হয়ে গেলে এই সমস্যায় আর পড়তে হবে না। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে গিয়ার চেঞ্জ করার সময় শব্দ জোরেই হয়। আর একটা সমস্যার কথা অনেকেই বলেন । বাইক চলতে চলতে হঠাত বন্ধ হয়ে যায় আর স্টার্ট নিতে চায়না। এই সমস্যার একটা সমাধান দেই ইগ্নিশান বন্ধ করে ফুয়েল বন্ধ করে দেন এর পরে আবার ফুয়েল অন করে পাঁচ সেকেন্ড অপেক্ষা করে স্টার্ট দেন বাইক চালু হয়ে যাবে। আসলে অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় ফুয়েল এয়ার লক হবার কারণে এই সমস্যা হয়। তবে হ্যা আমার কাছে মনে হয়েছে ইঞ্জিন একটু যেনো বেশীই গরম হয়ে যায়। উঁচা থেকে নীচে নামার সময় অনেকেই ডিস্কম্ফোর্ট ফিল করেন পালসার নিয়ে আমার মতে এটাও অভ্যাসগত সমস্যা। এই রকমের ছোটখাটো কিছু সমস্যা যে পালসারের নাই তা বলবো না । তবে এই ছোটখাটো সমস্যা যদি মানিয়ে নিতে পারেন তবে আমার মতো আপনিও বলবেন ফ্যান্টাসটিক বাইক।



Rate This Review

Is this review helpful?

Rate 1
Rate 2
Rate 3
Rate 4
Rate 5

More reviews on Bajaj Pulsar 150

2016-08-07

...

English
2016-06-12

এমন কেউ কি আছেন যার কখনোই বাইক ভালো লাগেনি ! কি জানি হয়তো আছেন? এমন একজন মানুষের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর খুব ইচ্ছা...

Bangla English
2016-05-28

...

English
2015-09-03

...

English
2015-06-06

...

English
2015-05-13

...

English
2014-11-29

...

English
2016-08-07
2016-06-12
2016-05-28
2015-09-03
2015-06-06
2015-05-13
2014-11-29
Filter