বর্তমান সময়ে বাজাজ পালসার সিরিজের কোন পরিচিতির প্রয়োজন পড়ে না, বছরের পর বছর ধরে এই সিরিজটি নতুন ডিজাইন এবং ফিচার পরিবর্তনের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ হৃদয় জয় করেছে। Pulsar NS 160 তাদের মধ্যে একটি, যা একটি ফুল প্যাকেজ নেকেড স্পোর্টস বাইক এবং স্পীড, লুক এবং পালসার ডিএনএ সহ সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য হয়েছে বটে। এখন পালসার এনএস সিরিজের সহজাত ভাই, কিন্তু বেশ অনেকআংশেই অন্যান্য পালসার মডেলের চেয়ে আলাদা একটি মেশিন বাজারে নিয়ে এসেছে বাজাজ ১৬০ সিসি সেগমেন্টে। সম্পূর্ণ নতুন নেকেড স্ট্রিট ফাইটার, Bajaj Pulsar N160 । কিছু আকর্ষনীয় ফিচারস সহ সম্পূর্ণ ভিন্ন চেহারা এবং ডিজাইনের সাথে পাওয়া যাবে এই বাইকটি।
Bajaj Pulsar N160 বাইকের যে ফিচাগুলো অন্যান্য বাইক থেকে আলাদাঃ
ডিজাইন এবং লুকঃ
বাজাজ এই স্ট্রিট ফাইটারের জন্য নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছে। তবে, ডিজাইনের দিক থেকে, পালসার N160 কে তৈরী করেছে, পালসার N250 এর সাথে সাদৃশ্য রেখে। যদিও এই কনসেপ্ট 150-160cc সেগমেন্টে সম্পূর্ণ নতুন। এই বাইকে থাকছে সামনে শার্প কাউল যাতে এবং রয়েছে প্রজেক্টর হেডলাইট এবং LED DRL। বিফি ট্যাঙ্ক এক্সটেনশনগুলি এটিকে একটি মাস্কুলার লুক দেয়, যা আপ্রেইজড টেইল সেকশনের সঙ্গে বেশ ভালভাবেই মিলে যায়। প্রিমিয়াম মেটালাইজড ডুয়াল কালারগুলো বেশ আকর্ষনীয় যা সামনের দিকে গাঢ় এবং পিছনের দিকে হালকা শেডে পেইন্ট করা। এই নতুন বিস্ট তৈরী করার ক্ষেত্রে এর ডিজাইনে বেশ জোর দেয়া হয়েছে। বডি ডিজাইনের দিকে তাকালে এই বাইকটির হেডল্যাম্প অ্যাসেম্বলি উল্লেখযোগ্য যা এই বাইকটিকে এগ্রেসিভ করে তোলে। এখানে থাকছে Bi-functional সিঙ্গেল LED প্রজেকশন ল্যাম্প এবং ডাবল LED DRL অ্যাসেম্বলি যা বাইকটিকে বেশ রোবোটিক দেখাতে সাহায্য করে। উপরন্তু, N160 এর জন্য থাকছে বিস্তৃত পাইপ হ্যান্ডেলবার যা বাইকটির সাম্নের অংশলে নেকেড স্পোর্টস লুক দিতে সক্ষম।
ডুয়াল চ্যানেল ABS ব্রেকিং প্রযুক্তি:
সম্পূর্ণ নতুন Bajaj Pulsar N160 বাইকে থাকছে চমৎকার সেইফটি ফিচারস যা আগে তেমনভাবে দেখা যেত না। আধুনিক দিনের বাইকারদের প্রয়োজনীয়তা ভেবেই এই ফিচারগুলো যোগ করা হয়েছে এই নতুন এডিশনে। Pulsar N160 বাইকটিকে আত্মবিশ্বাসের সাথে জরুরি ব্রেকিংয়ের জন্য সর্বদা প্রস্তুত রাখতে টুইন-চ্যানেল ABS ফিচার রাখা হচ্ছে, যাতে চাকা লক না হয় বা পরবর্তীতে কোনোভাবেই স্কিড না হয়।
Bi-functional LED প্রজেক্টর হেডল্যাম্পঃ
এই নতুন Bajaj Pulsar N160 বাইকে থাকছে Bi-functional LED প্রজেক্টর হেডল্যাম্প। এই সেগমেন্টে পালসার বাইকের জন্য স্টক লাইট হিসেবে কখনও ব্যবহার করা হয়নি এই ধরনের লাইটিং। এই নতুন মেশিনটি সিগনেচার নেকেড উলফ এলইডি ডিআরএল-এর সাথে এমন লাইটিং নিরাপত্তার জন্য অতুলনীয় এবং সুনির্দিষ্ট কন্ডিশনে বেশ ভাল আলো প্রদান করে থাকবে।
গিয়ার ইন্ডিকেটরঃ
গিয়ার ইন্ডিকেটর এক নজরে ব্যবহারকারীদের জানাবে যে তারা কোন গিয়ারে বাইক চালাচ্ছেন, যাতে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন রাস্তায় রাইডিং অপ্টিমাইজ করতে পারে।
নতুন ইনফিনিটি ডিসপ্লে কনসোলঃ
নতুন ইনফিনিটি কনসোল আধুনিক ডিজিটাল রিডআউট এবং ক্লাসিক এনালগ ট্যাকোমিটারের নান্দনিক মিশ্রনে তৈরী। অ্যানালগ পড টাইপ টেকোমিটারকে সাথে করে, এলসিডি স্ক্রিন স্পিডোমিটার, ট্রিপ মিটার, ফুয়েল লেভেল রিডআউট, গিয়ার পজিশন ইন্ডিকেটর এবং ঘড়ি থাকছে এই মিটার কনসোলে। অল-এলইডি ব্যাকলিট ছাড়াও, ব্যবহারকারীরা এখন USB চার্জিং পোর্টও পাবেন এই বাইকে।
লেটেস্ট রিডিফাইন্ড ইঞ্জিনঃ
Bajaj Pulsar N160 – বাইকে পাওয়ারফুল এক্সেলেরেশন এবং দৈনন্দিন রাইডে ভাল পাওয়ার অউটপুটের জন্য বাজাজ এই বাইকে দিয়েছে অত্যাধুনিক রিডিফাইন্ড ইঞ্জিন। নতুন পালসার N160 বাইকে থাকছে 164.82cc সিঙ্গেল-সিলিন্ডার এয়ার-অয়েল-কুলড টুইন স্পার্ক, DTS-i ইঞ্জিন যা যথাক্রমে 16PS এবং 14.65Nm সর্বোচ্চ শক্তি এবং টর্ক উৎপন্ন করে। এটি একটি ফাই-স্পিড গিয়ারবক্সের সাথে যুক্ত। এখনও শেষ হয়নিকরা হয়নি, এই বাইকে রয়েছে টর্ক-অন-ডিমান্ড প্রযুক্তি যা কখনই এক্সেলেরেশন পাওয়ার কমতে দিবে। ব্রড টর্ক ব্যান্ড এই বাইকে হাই রেভ রেঞ্জে 85% পিক পাওয়ার অফার করে - উৎপাদনকারী কোম্পানির মতে এই সেগমেন্টের অন্যান্য মোটরসাইকেলের চেয়ে তা অনেক বেশি। সব কিছুকে একত্রিত করে, মোটরসাইকেলটি পাওয়ার ডেলিভারিতে অত্যন্ত ভাল দেখা যাচ্ছে এবং সেই সাথে ফুএল কস্ট কম হবে সেটিও নিশ্চিত করছে বাজাজ।
বডি এট্রিবিউটঃ
Bajaj Pulsar N160 একটি পেরিমিটার ফ্রেমের উপর নির্মিত এবং মধ্যেই ভার্টিকাল পেট্রোল ইঞ্জিন স্থাপিত। হুইলবেস 1358 মিমি এবং গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স 165 মিমি। এই N160 বাইকে রাইডিং সীট বেশ মার্জিত রাখা হচ্ছে যা NS সিরিজের মতো এত বেশি বা কম নয়, যার পরিমাপ 795 মিমি। এই বাইকটির মাস্কুলার ফুয়েল ট্যাঙ্ককে ১৪ লিটার ফুলে ধারন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
ব্রেক এবং হুইলঃ
ব্রেকিং হার্ডওয়্যারে Bajaj Pulsar N160 -এর দুটি ভ্যারিয়েন্ট থাকছে, সিঙ্গেল এবং ডুয়াল-চ্যানেল ABS সহ ডিস্ক থাকছে এই বাইকে। এগুলো 17 ইঞ্চি অ্যালয় হুইলের সাথে এডজাস্টেবল। টায়ার সেগমেন্টের পরিমাপ সামনের দিকে 100/80-17 এবং পিছনে 130/70-17।
সাসপেনশনঃ
সাসপেনশন সিস্টেমের ক্ষেত্রে, নতুন পালসার N160 সামনে এবং পিছনে যথাক্রমে রেগুলার হাইড্রোলিক টেলিস্কোপিক ফর্ক সাসপেনশন এবং স্প্রিং-লোডেড নাইট্রোক্স-গ্যাস চার্জযুক্ত মনো শক সাসপেনশন দিয়ে তৈরি। উভয় সাসপেনশন বেশ চমৎকার স্টেবিলিটি, কমফোর্ট এবং লিন এঙ্গেল পারফর্মেন্স নিশ্চিত করতে পারবে।
শেষ কথাঃ
Bajaj দুটি ভেরিয়েন্টে সম্পূর্ণ নতুন এই Pulsar N160 সিরিজ বাজারে নিয়ে এসেছে। সিঙ্গেল-চ্যানেল ABS এডিশনে মোট তিনটি কালার স্কীম থাকছে- রেসিং রেড, টেকনো গ্রে এবং ক্যারিবিয়ান ব্লু। এদিকে, ডুয়াল-চ্যানেল ABS মডেলটি শুধুমাত্র ব্রুকলিন ব্ল্যাক কালার স্কীমে পাওয়া যাবে। ফিচার অনুযায়ী এই বাইকটি একটি নিখুঁত স্ট্রিট ফাইটার হতে পারে, তবে পারফরম্যান্স এবং ইউজার ফিডব্যাক চূড়ান্ত গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণ করে দিবে এই বাইকের।