সামপ্রতিক সময়ে বাজাজ এনেছে নতুন কমিউটার বাইক Bajaj V15. এটি মুলত তাদের নতুন সিরিজ V এর সূচনা বাইক। আশা করা যায় আগামিতে তারা হয়তো আরো বাইক আনবে যেগুলো হবে V20, V25 বা এরকমই কিছু । যাইহোক বাইকটি ভারতের বিমানবাহী রনতরী Ins Vikrant এর ধাতব অংশ গলিয়ে তৈরীর করা হয়েছে। মুলত এই কারনে বাইকটির সাথে ইতিহাস এবং গৌরবের সংমিশ্রন রয়েছে। বাইকটির গাঠনিক এবং টেকনিক্যাল বৈশিষ্ট্য দেখে বলা যায় বাজাজ তার নতুন V সিরিজকে পালসার এবং ডিস্কোভার সিরিজের মাঝখানে রেখেছে।
যদিও বাজাজ এটিকে কমিউটার বাইক বলছে কিন্তু বাইকটির মধ্যে কমিউটার, ক্যাফে রেসার এবং ক্রুজার এর মিশ্রন রয়েছে। তাই খুব সহজেই এই তিনধরনের বাইক লাভারকে সহজেই আকৃষ্ট করতে পারে। লাল এবং সাদা দুটি প্রধান রং এ পাওয়া যাচ্চে বাইকটি। গ্রাফি্ক্সেও রয়েছে গাম্ভীর্যের ছোয়া। গতানুগতিক বাইকের গ্রাফিক্স থেকে অনেক ভিন্ন। আসলে বাইকটি সকল দিক দিয়েই আর দশটা বাইক থেকে সম্পূর্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে এসেছে। ১৩৫কেজি ওজন বাইকটির কমফোর্টে অবশ্যই পজিটিভ ভূমিকা রাখে। ৭৮০মিমি উচ্চতার সীট হাইট মাঝারী উচ্চতার লোকদের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা দিবে।
ইনজিন: Bajaj V15 ১৪৯.৫ সিসির ১সিলিন্ডার বিশিষ্ট ইনজিন যেটি ১১.৮৩ BHP এবং ১৩Nm টর্ক তৈরী করতে পারে। ৫গিয়ার বিশিস্ট বাইকটি সর্বোচ্চ ১০৯কিমি স্পীড তুলতে পারে বলে দাবী বাজাজ এর। বাইকটি যেহেতু কমিউটার, তাই যথেষ্ঠ জ্বালানী সাশ্রয়ী। বাইকটি ৪৫-৫০কিমি/লিটার চলতে সক্ষম যা ১৫০সিসি বাইক হিসেবে যথেষ্ঠ ভালোই বলা যায়। ১৫০সিসি বাইক হিসেবে ১১.৮৩BHP পাওয়ার কিছুটা হতাশ করতেই পারে তরুনদের। কিন্তু কমিউটার বাইক হিসেবে শহরে চলতে প্রয়োজনীয় টর্ক খুব সহজেই পাওয়া যাবে। কাজেই বাইকটি কমিউটার হিসেবে যথেষ্ট ভালোই হবে। সাথে ভিন্ন ধারার গাঠনিক বৈশিষ্ট্য রয়েছেই।
জ্বালানি ট্যাংক: বাইকটির অন্যতম দর্শনীয় অংশ। বাইসনের মতো প্রশস্ত ট্যাংকের ধারনক্ষমতা ১৩লিটার। সাদা বা কালো জমিনে গাড় লাল রং এর গ্রাফিক্ম জ্বালানি ট্যাংককে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য এনে দিয়েছে। ট্যাংকের ঢাকনাতে Ins Vikrant এর লোগো অংকিত আছে। পূর্ন ট্যাংকে অন্তত একটানা ৬০০+কিমি চলার নিশ্চয়তা রয়েছে।
ইনস্ট্রুমেন্ট প্যানেল: একেবারেই ভিন্নধারা প্রিমিয়াম ইনস্ট্রুমেন্ট প্যানেল। সাথে রয়েছে রং পরিবর্তনশীল এলইডি লাইট। রয়েছে স্পীডোমিটার, ওডমিটার, ফুয়েলগজ।
হেডল্যাম্প: ১২ভোল্টের ৬০ওয়াট এর শক্তিশালী হেডলাইট শহরেতো বটেই হাইওয়েতেও পর্যাপ্ত উজ্বল আলো জোগান দিতে প্রস্তুত। এই সেগমেন্টে এমন আলোর জোগান সম্ভবত এই বাইকেই প্রথম।
সিট: বাইকটির সীট যথেষ্ট লম্বা, পেছনে রয়েছে সীটকাউল। যেটি দুটি স্ক্রু দিয়ে লাগানো থাকে। প্রয়োজনে একে খুলে ২সীট হিসেবে ব্যবহার করা যায় বা লাগিয়ে নিয়ে সিংগেল সীট করে ফেলা যায়। অর্থাত আপনি চাইলে খুব সহজেই সীটকাউলটি লাগিয়ে ক্যাফেরেসার লুক আনতে পারবেন। সীটকাউলের শেষপ্রান্তে V অক্ষরযুক্ত 3D লোগো রয়েছে।
পেছন: বাজাজ V15 এর পেছনের লুকটি সত্যি আকর্ষনীয়। লাল রংএর ভিন্ন ডিজাইনের আকর্ষনীয় ফ্লাট এলইডি টেইল ল্যাম্প বাইকটিকে পেছন থেকে দেখতে চমতকার লাগে।
এক্সজস্ট: মোটা গোলাকৃতি গাম্ভীর্জপূর্ন এক্সজস্ট পাইপের শেষপ্রান্তে রয়েছে ক্রোম করা। যা বাইকের অন্যান্য ক্রোমের সাথে মিলিয়ে চমতকার ম্যাচিং হয়েছে।
চাকা, ব্রেক ও সাসপেনশন: সামনে রয়েছে ২৪০মিমি ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনে ১৩০মিমি ড্রাম ব্রেক। যা স্বাভাবিকভাবে যে কোন অবস্থায় গতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সহায়ক। এছাড়াও সামনে রয়েছে ১৮ইঞ্চি এলয় হুইল সাথে ৩৩মিমি টেলেস্কপিক ফর্ক, আর পেছনে রয়েছে ১৬ইঞ্চি এলয় হুইল সাথে ডুয়েল স্পীং সাসপেনশন।
কেন বাইকটি কিনবেন?
প্রথমতই হলো আকর্ষনীয় এবং ভিন্ন ডিজাইন এবং গাঠনিক বৈশিষ্ট্য যে কাউকেই বাইকটি কেনার জন্য প্রলুব্ধ করবে। ১৫০সিসির কমিউটার সেকশনে এই ধরনের বাইক যে কারোরই মন কাড়বে। শহরের মধ্যে ৫০কিমি/লিটার জ্বালানী খরচ নি:সন্দেহে সাশ্রয়ী।
বাইকটির দাম ও বিস্তারিত