বাংলাদেশের মোটরসাইকেল মার্কেট পর্যবেক্ষণ করে আমরা দেখতে পাই এটি খুব দ্রততার সাথে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। রাইডারদের রাইডিং সুবিধাগুলো মাথায় রেখে বিভিন্ন মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক কোম্পানি তাদের মোটরসাইকেলগুলো বাজারে নিয়ে আনছে। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড গুলো আমাদের দেশের মোটরসাইকেল প্রেমিকদের তাদের মোটরসাইকেল গুলো অফার করছে এবং তারা বাইকারদের কাছ থেকে ভাল সাড়া পাচ্ছে। নতুন মোটরসাইকেল ব্রান্ডগুলোর আগমনের মধ্যে বিটল বোল্ট কে লক্ষ্য করা যার কারণ তারা সদ্য তাদের শো-রুম বাংলাদেশে উদ্বোধন করেছে। এটি একটি আমেরিকান ব্র্যান্ড এবং তাদের বেশ খ্যাতি আছে।বিটল বোল্টের মিশন হল তারা দুনিয়া ব্যাপি প্রত্যেক গ্রাহকদের মন জয় করা এবং গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় চাহিদা গুলো পূরণ করা।বাংলাদেশে তাদের একমাত্র পরিবেশক অটোপ্লেক্স লিমিটেড দাবি করে যে,তাদের বাইকগুলো বাইকাদের মন জয় করবে। এই মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড কিছু ভাল মানের বাইক প্রস্তুত করে থাকে যেগুলো অন্যান্য বাইকগুলো থেকে আলাদা।
বিটল বোল্টের ফ্যাশানেবল এবং ভাল কনফিগারেশন ১৫০ সিসি বাইকগুলোর কথা বলতে গেলে বিটেল বোল্ট করবেট বাইকটির কথা চলে আসে। বাইকটি অন্যান্য ১৫০ সিসি বাইকের তুলনায় দেখতে অসাধারণ এবং এর চমৎকার লুক বাইকারদের সহজেই আকৃষ্ট করবে। আসুন এই বিটল বোল্ট করবেট কে নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক।
বাইকটির লুক
বিটল বোল্টের এই বাইকটি স্পোর্টস লুক দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই নেকেড ১৫০ সিসি বাইকটির ভিন্ন ধরনের বডি শেপ রয়েছে যেটা বাইকটি দেখতে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।চোখ ধাদানো বডি কিটের সাথে বড় আকারের ফুয়েল ট্যংকার, স্লীট সিট, মার্জিত রেয়ার ফেন্ডার, স্টাইলিশ টেল ল্যাম্প, ভাল ডিজাইনের ডিস্ক ব্রেক সাথে এলয় রিমস বাইকটিকে দেখতে একদম আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
ডিজাইন এবং ডাইমেশন
ডিজাইন এবং ডাইমেনশন একে অন্যের সাথে সম্পর্ক যুক্ত কারণ ডাইমেশন সুন্দর হলে ডিজাইন সুন্দর হবে এবং সামগ্রিক দিক দেখে বাইকটি দেখতে সুন্দর লাগবে। এই বাইকটিতে নেকেড স্পোর্টস ডিজাইন এবং ডাবল লেয়ার কালার কম্বিনেশন রয়েছে। বাইকটির সামগ্রিক ডাইমেনশন বার বার মনে করিয়ে দেয় যে বাইকটি এক্সপার্টদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছে। বডি মেজারমেন্ট এর কথা বলতে গেলে এখানে লম্বায় ২০৩০ মিমি, চওড়ায় ৭০৯ মিমি এবং উচ্চতায় ১১২৭ মিমি রয়েছে এবং সিট হাইট ৮০০ মিমি রাখা হয়েছে। এছাড়াও গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৮০ মিমি এবং হুইলবেজ ১৩৬৯ রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে করবেটের কার্ব ওয়েট ১৫০ কেজি তে রাখা হয়েছে।
ইঞ্জিন
ইঞ্জিনের বিষয়টা একটি বাইকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেটা একজন রাইডার চায় সব সময় সুন্দর হোক। বিটল বোল্ট সর্বদা চেষ্টা করে তাদের ইঞ্জিনটা উন্নতমানের দেওয়ার এবং করবেটে তারা সর্বোত্তম চেষ্টা করেছে ভাল ইঞ্জিন দেওয়ার। করবেটে ১৪৯.৫ সিসির এয়ার কুলড, সিংগেল সিলিন্ডার এবং ৪ স্ট্রোকের ইঞ্জিন রয়েছে। এই ইঞ্জিন ১৩.৫ পি এস ম্যাক্স পাওয়ার দিয়ে ৮০০০ আর পি এম এবং ১১.৫ এন এম দিয়ে ম্যাক্স টর্ক ৬০০০ আর পি এম দিয়ে থাকে। বাইকটির কম্প্রেসান রেশিও ৯:৩:১ এবং ৫ টি স্মুথ গিয়ার বক্স রয়েছে। ইঞ্জিন চালু করার জন্য এই বাইকটিতে ইলেকট্রিক স্টার্ট অপশন রয়েছে। সমস্ত ফিচার দেখার পর বোঝা যাচ্ছে যে এর ইঞ্জিন অনেক ভাল পারফরমেন্স দিবে।
মিটার কনসোল এবং ইলেক্ট্রিক্যাল
এই বাইকটির মিটার কনসোল এবং ইলেক্ট্রিক্যাল দিক গুলো খুবই উন্নত ফিচার দ্বারা গঠিত। মিটার প্যানেল সম্পূর্ণ ডিজিটাল, স্পিডোমিটার, আরপিএম ইনডিকেটর, ফুয়েল ইনডিকেটর, ঘড়ি এবং যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস এখানে রয়েছে। ইলেক্ট্রিক্যাল দিক বলতে গেলে এর সাথে রয়েছে পাস লাইট, লিড ইনডিকেটর, পাওয়ারফুল ব্যাটারি, হাই বিম লো বিম সুইচ, পাওয়ারফুল হেডল্যাম্প রয়েছে।
সাস্পেনশন
সাস্পেনশনের কথা বলতে গেলে অন্যান্য হাই পারফরমেন্স ১৫০ সিসির বাইকগুলোতে যে সাস্পেনশন ব্যবহার করা হয়ে থাকে ঠিক এই বাইকটিতে একই সাস্পেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। সামনের দিকে টেলিস্কোপ সাস্পেনশন এবং পেছনের দিকে মনোশক সাস্পেনশন রয়েছে। এই ধরনের সাস্পেনশন ভাল রাইডিং কন্ট্রোলের পাশাপাশি ভাল কম্ফোরট নিশ্চিত করে।
টায়ার এবং ব্রেকিং
অন্যান্য আকর্ষণীয় পার্টস গুলোর মধ্যে এই বাইকটির মনোমুগ্ধকর দুটি পার্টস হল ব্রেকিং এবং টায়ার। এই বাইকটির সামনে ওবং পিছনে উভয় দিকেই ডিস্ক ব্রেক রয়েছে এবং বিশেষ করে সামনের চাকায় দুটি ডিস্ক ব্রেক আছে যেটা ১৫০ সিসি সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের থেকে একদম ভিন্ন। ব্রেকিং ছাড়াও বাইকটির টায়ার এক কথায় বলতে গেলে অসাধারণ। সামনের চাকা ১১০/৭০-১৭ মিমি এবং পেছনের চাকা ১৫০/৭০-১৭ মিমি যেটা বলতে গেলে ১৫০ সিসির সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের তুলনায় বেশ চওড়া। ব্রেকিং এবং টায়ার এই দুটি দিক বাইকটি রাইডিং এর ক্ষেত্রে আরো উপভোগ্য করে তুলবে।
শেষ কথা
বাইকটির সমস্ত ফিচার দেখার পর আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে সব কিছু ঠিক থাকলে বাইকটির পারফরমেন্স হবে অসাধারণ। তবে করবেটের ইঞ্জিনের আরও ভাল পারফরমেন্স এর জন্য লিকুয়েড কুল ইঞ্জিন হলে ভাল হত। বাইকটির সামগ্রিক দিক যেমন আউটলুক, ফিচারস, বেশী মোটা টায়ার, ব্রেক এবং চোখ ধাঁধানো ডিজাইন বেশ সন্তোষজনক। আশা করা যায় বাইকটি তরুনদের হতাশ করবে না।