আমি মো: হোসাইন। পেশায় চাকুরীজীবি। কর্মস্থলে যাতায়াত ছাড়াও নিজের ব্যক্তিগত ঘুরাঘুরির জন্য একটি আধুনিক ডিজাইন এবং ভালো ফীচার সমৃদ্ধ মোটরসাইকেল কেনার কথা ভাবছিলাম। ইতপূর্বে বাজাজ পালসার সহ অন্যান্য বাইক ব্যবহারের সুযোগ হয়েছে। কিন্তু আমার প্রয়োজন ছিলো আমার বাজেটের মধ্যে শক্তিশালী ইনজিন এবং আধুনিক ডিজাইনের কম্বিনেশন। বিভিন্ন ব্রান্ডের এবং মডেলের ভিড়ে আমার চোখে পড়ে যায় বিটল বোল্ট নামের একটি ব্রান্ডের নাম। শোরুমে তাদের বাইকগুলো দেখে ভালো লাগে। বিশেষ করে তাদের “করবেট” নামের মডেলটি আমার চোখে লেগে যায়। আমি বাইকটি টেস্ট রাইড দিয়ে মুগ্ধ হই। ইনজিনের ক্ষমতা এবং দুর্দান্ত কন্ট্রোল বাইকটি কিনতে আমাকে উদ্বুদ্ধ করে। আমি আর দ্বিতীয়বার চিন্তা না করে বাইকটি কিনে ফেলি। ঘটনাটি প্রায় ৬/৭ মাস আগের। ইতমধ্যেই আমি প্রায় ৭৫০০কিমি চালিয়েছি। আমি আজ আপনাদের কাছে শেয়ার করবো আমার ব্যবহারের অভিজ্ঞতার আলোকে বাইকটির ভালো এবং মন্দ দিক। আশা করি সাথে থাকবেন।
যে কোনো জিনিস কিনতে গেলে আমরা সবাই আগে ডিজাইনটি দেখি। আমিও তাদের ব্যতিক্রম নই। সত্যি কথা বলতে বাইকটি প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে যায়। বাইকটির দিকে তাকালেই আপনার চোখে পড়বে এর মাসকুলার এবং ব্যতিক্রমী লুক। যে কারোরই চোখ জুড়িয়ে যাবে। উজ্জল রং, আধুনিক গ্রাফিকস এবং এরোডাইনামিক ডিজাইন সব মিলিয়ে অসাধারন। বাইকে ব্যবহৃত কিট এবং যন্ত্রাংশগুলো আমার কাছে যথেষ্ট মজবুত মনে হয়েছে।
বাইকটির ইনজিন আমার কাছে যথেষ্ট শক্তিশালী মনে হয়েছে। আমি স্পীড প্রেমিক নই কিন্তু পরীক্ষার উদ্দেশ্যে স্পীড তুলেছিলাম। ১২৬কিমি/ঘন্টা উঠার পরে আর আগাইনি নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে। তবে বুঝতেই পারছিলাম বাইকটির ইনজিন আরো স্পীড তুলতে সক্ষম। যদিও তেল খরচটি একটু বেশি, লিটারে ৩৫-৪০কিমি এর মতো। কিন্তু বাইকটির ওজন, মোটা চাকা এবং স্পীডের কথা ভাবলে এমন জ্বালানি খরচ আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়েছে।
বাইকটির সিটিং পজিশন আমার জন্য বেশ আরামদায়ক। খুব সহজেই হ্যান্ডেলবারটি আরামের সাথেই ধরতে পারি। সামনের চাকায় ২টি এবং পেছনের চাকায় ১টি ডিস্ক ব্রেক, সেই সাথে ১৫০মিমি পেছনের টায়ার হওয়াতে বাইকটির কন্ট্রোল এবং ব্রেকিং অসাধারন। ব্রেকিংয়ে কখনও স্কীডের সম্মুখিন হয়নি। পেছনে মনোসাসপেনশন হওয়াতে বাইকটি ড্রাইভ করে খুবই আরামদায়ক মনে হয়। ছোটখাটো ঝাকুনি টের পাওয়া যায় না। রাতের রাইডে হেডলাইটের আলো আমার কাছে পর্যাপ্ত মনে হয়েছে।
বাইকটির প্রয়োজনেই আমাকে সার্ভিসিং সেন্টারে যেতে হয়েছে। তাদের কাজের মান ভালো, আচরন যথেষ্ট আন্তরিক।অন্তত আমার দিক থেকে তাদের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই।
সবশেষে আমি একথাই বলবো যারা ডিজাইনের সাথে শক্তিশালী ইনজিনের বাইক খুজছেন তারা “বিটলবোল্ট করবেট” এর কথা ভাবতে পারেন। আমার বিশ্বাস বাইকটি আপনাকে হতাশ করেব না।