বাংলাদেশের মোটরসাইকেল মার্কেটে বর্তমানে অনেকগুলো মানসম্মত ব্রান্ড এবং তাদের বিভিন্ন মডেলের মোটরসাইকেল রয়েছে যারা গুনগত মানে উন্নত এবং আস্থাযোগ্য। আমরা তাদের মানসম্পন্ন প্রোডাক্টের ফলে তারা সাফল্যের সাথে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি বাজারে এসেছে বিটল বোল্ট ব্রান্ডের কিছু মোটরসাইকেল। আমরা তাদের দুটি সুন্দর বাইক নিয়ে ইতমধ্যেই আলোচনা করেছি যেটা তারা বাংলাদেশের বাজারে খুব সম্প্রতি নিয়ে এসেছে। আজকে আমরা বিটল বোল্টের আরেকটি সুন্দর মোটরসাইকেল নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি যার নাম দেয়া হয়েছে Beetle Bolt Stinger । আগের দুটি বাইকের মতো এই Beetle Bolt Stinger বাইকটি তৈরি করা হয়েছে স্পোর্টস DNA দিয়ে এবং নতুন নতুন কিছু ফিচার দিয়ে।আসুন জেনে নেই বাইকটিতে কি কি নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে এবং বাইকটির ভাল মন্দ কিছু দিক।
আউটলুক
আগের দুটো মডেলের মতো এই বাইকটি এগ্রেসিভ স্পোর্টস DNA দ্বারা তৈরি করা হয়েছে । এই বাইকটি অন্য দুটি বাইকের থেকে দেখতে আলাদা এবং সব মিলিয়ে বাইকটিতে দুর্দান্ত লুক দেওয়া হয়েছে। Beetle Bolt Stinger এর বডি শেপ হচ্ছে ফুল নেকেড বডি শেপ স্ট্রাকচার এবং বড় আকারের ফুয়েল ট্যংকারের সাথে অসাধারণ বডি কিট, বডির থেকে তুলনামুলক ছোট হেডল্যাম্প, স্প্লিট সিট, স্টাইলিশ টেল ল্যাম্পের সাথে রেয়ার ফেন্ডার বাইকটিতে বেশ আকর্ষণীয় করে তুলেছে। বিটল বোল্টের একটি বিশেষ দিক হল তাদের ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম। তাদের ডিস্ক ব্রেক গুলো অনেক ভাল মানের এবং অন্যান্য বাইকের থেকে দেখতে অনেক সুন্দর। সুন্দর ডিজাইনের ডিস্ক ব্রেকিং এর সাথে এলয় রিম বাইকটিকে দেখতে অনেক সুন্দর করে তুলেছে।
ডাইমেনশান এবং ডিজাইন
আমরা আগে থেকে বলে আসছি যে বাইকের আউটলুক কম বেশী নির্ভর করে বাইকের ডাইমেনশানের উপর। নিঃসন্দেহে এই বাইকটির ডিজাইন অনেক সুন্দর এর কারণ হলো স্পোর্টস ক্যাটাগরির বাইক হিসেবে বডি ডাইমেনশান একদম পারফেক্ট। যদিও এই বাইকটির ডাইমেনশান এর কোম্পানির অন্য দুটি বাইকের বেশ কাছাকাছি কিন্তু এই বাইকটিতে নেকেড স্পোর্টস একদম মানিয়েছে। এক্সট্রা বডি কিট ট্যংকারের সাথে সুন্দর ভাবে স্থাপন করা হয়েছে । বাইকটির ডাইমেনশান যথাক্রমে ,লম্বায় 2061mm , চওড়ায় 730mm , উচ্চতায় 1106mm এবং বাইকটির সিট হাইট 800mm আছে। পাশাপাশি 180mm
গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এবং 1384mm হুইলবেজ রয়েছে। বাইকটির ডিজাইন এবং ডাইমেনশান সব দিক দিয়ে অনেক সুন্দর এবং ফ্যাশনেবল স্টাইলিশ স্পোর্টস লুক বাইকটিকে চোখ ধাঁধানো করে তুলেছে।
ইঞ্জিন
ইঞ্জিনের দিকটা প্রত্যেক মোটরসাইকেলে জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিক যেটা সম্পর্কে প্রস্তুতকারকরা সব সময় সচেতন এবং এই কোম্পানীর অন্য দুটি মডেলের মতো ১৫০ সিসির উন্নতমানের ইঞ্জিন দিয়ে গঠিত। বাইকটিতে ১৪৯.৫ সিসির এয়ারকুল্ড, সিংগেল সিলিন্ডার, ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এই ইঞ্জিনের ম্যাক্স পাওয়ার হচ্ছে 13.5 PS @ 8000 RMP এবং ম্যাক্স টর্ক হচ্ছে 11.5 Nm @ 6000 RMP। বাইকটির কম্প্রেশন রেশিও ৯:৩:১ এবং ৫টি ট্রান্সমিশন স্মুথ গিয়ার বক্স।ইঞ্জিন চালু করার জন্য বাইকটিতে রয়েছে ইলেকট্রিক স্টার্ট অপশন । এই ধরনের ইঞ্জিন পাওয়ার এবং টর্ক পাওয়ার এর ফলে একজন রাইডার এই বাইকটি থেকে সুন্দর সাউন্ড, বেটার মাইলেজ, স্পীড এবং ভাল পারফরমেন্স আশা করতে পারে।
মিটার কনসোল এবং ইলেক্ট্রিক্যাল
বিটল বোল্টের এই বাইকটিতে রয়েছে স্টাইলিশ হ্যান্ডেল বার এবং একদম আধুনিক মিটার কনসোল ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটির মিটার কনসোলে RPM ইন্ডিকেটর বাদে সম্পূর্ণ ডিজিটাল। এছাড়া রয়েছে স্পিডোমিটার, ফুয়েল ইন্ডিকেটর, ডিজিটাল ঘড়ি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সকল কিছু মিটার কনসোলে রয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল সাইডের কথা বলতে গেলে বাইকটিতে সকল প্রয়োজনীয় ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি রয়েছে যেমন, পাস লাইট, লেড ইন্ডিকেটর, পাওয়ারফুল ব্যাটারি, হাই বিম, লো বিম সুইচ এবং পাওয়ারফুল হেডল্যাম্প ইত্যাদি।
সাসপেনশন
বাইকটির সামনে এবং পেছনের দিকে ভাল মানের সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটির সামনের দিকে টেলিস্কোপ সাসপেনশন এবং পেছনের দিকে মনোশক সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু সামনের দিকের সাসপেনশন প্যানেল অন্য যে কোন বাইকের থেকে একদম আলাদা যেটা খুব ভাল পারফরমেন্স দিবে। ১৫০ সিসির বাইক হিসেবে বাইকটির সাসপেনশন যে কোন রাস্তার ক্ষেত্রে অনেক আরামদায়ক এবং অনেক স্মুথ রাইডিং নিশ্চিত করবে।
টায়ার এবং ব্রেকিং
টায়ার এবং ব্রেকিং একে অন্যের সাথে বেশ সম্পর্কিত কারণ ভাল টায়ার নিশ্চিত করে ভাল ব্রেকিং এবং এই দুটি জিনিস সেফটি ফিচার হিসেবে পরিচিত। বাইকটির সামনে এবং পেছনে উভয় দিকেই ডিস্ক ব্রেক। ব্রেকিং এর পাশাপাশি এর টায়ারে বেশ চমক রয়েছে । সামনের টায়ার 110/70-17 রয়েছে এবং পেছনের টায়ার 140/70-17 ।
শেষকথা
বাইকটির সমস্ত ফিচার আলোচনা করার পর বলা যেতে পারে যে গ্রাহকদের সামগ্রিক চাহিদা পুরন করবে এবং আশা করা যায় যে এই বাইকটি কোন গ্রাহককে নিরাশ করবে না। ডাইমেনশন, ডিজাইন,ব্রেকিং, ইত্যাদি বলতে গেলে বেশ চমৎকার।বাইকটির ওজন প্রায় ১৩৯ কেজি যেটা অনেক ভাল কন্ট্রোলিং এনে দিবে এবং ১২ লিটারের চোখ ধাঁধানো ফুয়েল ট্যংকার বাইকটির আউটলুকে বেশ প্রভাব ফেলেছে। সব মিলিয়ে ডিজাইন এবং পারফরমেন্সে বাইকটি তরুনদের আকর্ষন করবে এটি সুনিশ্চিত।