জিপিএক্স ডিমন জিআর১৬৫ আর ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা অলিউর রহমান খান

To Be Honest জিপিএক্স ডিমোন বাইকটা আমি কিনেছি শুধুমাত্র এর সুন্দর ডিজাইনের জন্য। আমি ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩ বাইকটা কেনার জন্য মনস্থির করেছিলাম কিন্তু এরই মাঝে বাংলাদেশের বাজারে স্পীডোজ লিমিটেড নিয়ে আসে জিপিএক্স ডিমোন ১৬৫ বাইকটি। বাইকটা দেখা মাত্রই আমার পছন্দ হয়ে যায় এবং আমার আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩ বাইকটা কেনার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করি এবং জিপিএক্স ডিমোন ক্রয় করি। বাইকটা ক্রয় করার আগে এই বাইকের রিভিউ ইউটিউবে দেখেছিলাম এবং আমি জানতে পারে যে এর পারফরমেন্সও অনেক ভালো। তাই সব মিলিয়ে বাইকটা কেনার সিদ্ধান্ত হয়ে যায়।
জিপিএক্স ডিমোন বাইকটা কিনে আমি বেশি রাইড করতে পারিনি। কারণ দেশের করোনা পরিস্থিতি এবং আমার ব্যাক্তিগত কিছু কাজের জন্য তেমন রাইড করার সময় হয়ে উঠেনি। আমি এখন এই বাইকটা ১০০ কিমি পর্যন্ত চালিয়েছি এবং এই ১০০ কিমি এর মধ্যে প্রথম কিছু অনুভুতি ও অভিজ্ঞতা পেয়েছি যেগুলো নিচে সংক্ষেপে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

এই বাইকের ভালো লাগার বিষয়ের মধ্যে আমি যা যা পেয়েছি

-প্রথমত বাইকের ডিজাইন অনেক সুন্দর সেটা শুরুতেও বলেছি এবং এখনও বলছি। বাংলাদেশের বাজারে এই বাইকের ডিজাইন আমার কাছে ইউনিক মনে হয়েছে। সামনের অংশ , পেছনের অংশ , সাইডের অংশ সব দিক থেকেই বাইকের ডিজাইনের মধ্যে আধুনিকতার ছোঁয়া আছে।
-দ্বিতিয়ত আমি এই বাইকের ইঞ্জিনের পারফরমেন্স নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। ১০০ কিমি রাইড করে আমি এর ইঞ্জিন থেকে যথেষ্ট ভালো টর্ক পেয়েছি এবং ইঞ্জিনের শক্তিটাও অনেক বেশি উপলব্ধি করেছি। আমার মনে হয় যে এই বাইকের টপ স্পীড অনেক বেশি হবে। অনেকেই নাকি ১৪৫ কিংবা তারও বেশি টপ পেয়েছেন । সেটা হলে তো ইঞ্জিনের শক্তি বলাই যায় অনেক ভালো। এদিকে আমি ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় বাইকের স্পীড কোন দিক দিয়ে যে ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা হয়ে গেছে তা টের পাইনি। এই বাইকের ইঞ্জিনের স্পীড অনেক স্মুথভাবে উঠে এবং বেশি স্পীড হলেও বুঝা যায় না।
-স্পীডোমিটার অনেক জোশ। এরকম ফিচারসের স্পীডোমিটার আমি বাংলাদেশে অন্যান্য বাইকের লক্ষ্য করিনি । অন্যান্য বাইকের স্পীডোমিটারও সুন্দর কিন্তু জিপিএক্স ডিমোনের স্পীডো মিটার অনেক বেশি সুন্দর।
-সামনের আপসাইড ডাউন সাসপেনশন এবং পেছনের মনোশক সাসপেনশন থেকে আমি খুব ভালো সাপোর্ট পেয়েছি। শুরু থেকেই সাসপেনশনগুলো অনেক নরম এবং এতে ভাংগা রাস্তা রাইড করলে খুব কম ঝাঁকুনি হয়।

মন্দ অভিজ্ঞতার মধ্যে আমি যা যা পেয়েছি

-আমার কাছে বাইকের সিটিং পজিশনের উচ্চতা একটু বেশি মনে হয়েছে। আমি বুঝতে পারলাম যে যাদের উচ্চতা ৫ ফিট ৬ এর কম তাদের জন্য বাইকটার সিটিং পজিশনে বসে রাইড করা অনেক কষ্টসাধ্য।
-ব্রেকিং সিস্টেম ডাবল ডিস্ক দেওয়া আছে এবং এখানে সিবিএস বা এবিএস কো ফিচারস নাই। ব্রেকিংগুলো সাধারণভাবে খুব ভালো কাজ করে কিন্তু এই দানবীয় বাইকের স্পীড স্মুথভাবে ও নিরাপদে থামানোর জন্য আমার মনে এবিএস ব্রেকিং দিলে খুব ভালো হত। তবে এখন যে ডাবল ডিস্ক আছে সেটাও কিন্তু খারাপ না। কাস্টমার হিসেবে একটু তো দাবি রাখাই যায়।
-রাতে আমি স্বল্প রাইড করেছি। এই স্বল্প রাইডে আমার কাছে হেডল্যাম্পের আলো একটু কম মনে হয়েছে। হেডল্যাম্প রাতের বেলা দূর থেকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে কিন্তু এর যে আলো সেটাতে আমি সন্তুষ্ট নই। লো বিমে আলো একদমই কম এবং হাই বিম দিলে কিছুটা উপকার পাওয়া যায়।
-আমি কেনার পর একটা বিষয়ের সম্মুখীন বার বার হতাম সেটা হল এই বাইকের টায়ার স্কীড নিয়ে। আমি বেশ কয়েকবার টায়ার স্কীড এর সম্মুখীন হয়েছি কিন্তু এখন ধীরে ধীরে ব্রেকিং এর সাথে এডজাস্ট হয়ে যাচ্ছি বিধায় আর স্কীড সমস্যা পাচ্ছি না। তবে টায়ার আরেকটু উন্নত করা দরকার বলে আমি মনে করি।

সব মিলিয়ে জিপিএক্স ডিমোন এই বাজেটে অনেক ভালো একটি বাইক। আমার কাছে তো এই বাইকের ডিজাইন অনেক ভাল লেগেছে আশা করি আপনারাও এর ডিজাইন পছন্দ করেছেন। আমি আশাবাদী যে এই বাইকটা আমাকে আরও অনেক ভালো পারফরমেন্স দিবে। ধন্যবাদ আমার রিভিউ পড়ার জন্য। সবাই সাবধানে রাইড করবেন।

All GPX bike price in bd

GPX Demon GR165R