এক দশক আগে থাইল্যান্ডে জিপিএক্স তাদের যাত্রা শুরু করলেও অনেক অপ্ল সময়ের মধ্যেই তাদের বাইকগুলো সর্বত্র ছিড়িয়ে পরতে থাকে। তারা বিভিন্ন সেগমেন্টে এবং ক্যাটাগরিতে উন্নত মানের মোটরবাইক নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে এবং বাংলাদেশের জন্য তারা সম্প্রতি জিপিএক্স র্যাপ্টর ১৬৫ নামক একটি নেকেড স্পোর্টস বাইক বাজারে সরবরাহ শুরু করেছে। বাইকটি আসলেও স্পোর্টস টাইপ মোটরসাইকেল, যার রয়েছে আকর্ষনীয়স্পোর্টি ফিচার। এই বাইকের এরোডাইনামিক ডিজাইন থেকে শুরু করে প্রশস্ত র্যাাডিয়াল স্পোর্টস ট্র্যাক টায়ার সবকিছুই অন্যান্য নেকেড স্পোর্টস সেগমেন্টের বাইকগুলিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে। সম্প্রতি বাজারে আসা স্পোর্টস বাইক সকল বাইক প্রেমীদের জন্যই নিয়ে এসেছে অনেক কিছু। তাহলে চলুন আলোচনায় চলে যাই।
স্পোর্টস লুক এবং ডিজাইন:রেস ট্র্যাক থিমের চিন্তাভাবনা নিয়ে GPX RAPTOR 165 বাইকটি তৈরি করা হয়েছে, বাইকটি নেকেড টাইপ হলেও এই বাইকের টার্গেটেড ইউজার হচ্ছে স্পোর্টস বাইক লাভারগন। সামনে থেকে শুরু করলে, এর ডুয়াল স্প্লিট হেডল্যাম্প এবং মাস্কুলার ফুয়েল ট্যাঙ্কার বাইকটিকে স্পোর্টস বাইক লুক দেয়। মাঝের অংশের দিকে তাকালে এই বাইকের বিশালাকার ফুয়েল ট্যাঙ্কার যা স্টাইলিশ কীট দ্বারা আবদ্ধ, সেই সাথে স্পোর্টি স্প্লীট সীট বাইকটিকে আকর্ষনীয় করে তোলে। প্রশস্ত ডিস্ক, স্পোর্টি এক্সহস্ট, প্রশস্ত রেডিয়াল টায়ার, নম্বর প্লেট হোল্ডারের ডিজাইন সবকিছু মিলিয়ে রেয়ার ডিজাইনকে চোখ ধাধানো করে তুলেছে। এই সবকিছুই তৈরী করা হয়েছে ট্রেলিস ফ্রেমে যা দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।
EFI ইঞ্জিন: সময়ের চাহিদা অনুযায়ী বেশিরভাগ ব্যবহারকারীই তাদের বাইকে ভাল মাইলেজ, পারফরম্যান্স এবং স্থায়িত্ব বজায় রাখতে EFI ইঞ্জিনের ব্যাবহারকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। আর এই সমস্ত কারনেই জিপিএক্স GPX RAPTOR 165 বাইকের জন্য EFi ইঞ্জিনের ব্যাবহার করতে কোন আপোষ করেনি। আমরা যদি ইঞ্জিনটির স্পেসিফিকেশন দেখি তাহলে সেখানে রয়েছে, ১৬৪ সিসি ৪-স্ট্রোক, ১ সিলিন্ডার, ২ ভালভ, এসওএইচসি ইঞ্জিন এবং উন্নত EFi টেকনোলোজি। এই ইঞ্জিনটি ১৫ Bhp @ ৮০০০ rpm সর্বোচ্চ শক্তি এবং ১৪.০ Nm @ ৬৫০০ rpm সর্বাধিক টর্ক উৎপাদন করতে পারে। এই পাওয়ারের সাথে বাইকটি ৪.৫ সেকেন্ডে ০-৬০ গতিতে উঠতে সক্ষম। পাশাপাশি, ৬ স্পীড গিয়ার বক্স ট্রান্সমিশন এই বাইকটি ১৩০(কোম্পানির দাবি) কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্পীডে পৌছে দিবে অনায়াসে।
বডি ডাইমেনশনঃআমরা ইতিমধ্যে উল্লেখ করেছি যে এটি একটি স্পোর্টস বাইক, অতএব বডি ডাইমেনশনগুলোও তেমন হবে আসাই করা যায়। এই নতুন GPX RAPTOR 165 জন্য বডি ডাইমেনশন রাখা হয়েছে বাংলাদেশের অন্যান্য নেকেড স্পোর্টস টাইপ বাইকের থেকে কিছুটা আলাদা। এই বাইকের দৈর্ঘ্যটি অন্যান্য ১৬৫ সিসি বাইকের তুলনায়কিছুটা বেশি, যা ২০২০ মিমি, এর প্রস্থ ৮০০ মিমি এবং সামগ্রিক উচ্চতা ১৩১০মিমি। নেকেড স্পোর্টস বাইকের হিসাবে সীট হাইট সামান্য বাড়ানো, যা ৮২০। এই সমস্ত কিছু মিলিয়ে বাইকের মোট ওজন ১৩৫ কেজি।
ওয়াই-এস-এস এডজাস্টবেল রেয়ার এবং আপসাইড ডাউন রেয়ার সাসপেনশন:ওয়াই-এস-এস হচ্ছে একটি সুপরিচিত মোটরবাইক পার্টস প্রস্তুতকারক এবং জিপিএক্স তাদের র্যাপ্টর বাইকের জন্য তাদের শীর্ষ মানের মনো শক এডজাস্টবেল সাসপেনশন ব্যবহার করেছে। ভাল স্টেবিলিটি এবং রেস ট্র্যাক টাইপ পারফর্মেন্সের জন্য GPX RAPTOR 165 বাইকের সামনের দিকে রয়েছে আপসাইড ডাউন সাসপেনশন।
ব্রেক এবং টায়ার:সময়ের চাহিদা অনুযায়ী GPX RAPTOR 165 – বাইকে ABS বা সিবিএসব্রেকিং সিস্টেম নেই। তবে উভয় দিকেই কার্যকর ডিস্ক ব্রেক দেখা যায়।টায়ার সেকশনের জন্য জিপিএক্স ১০০/৮০ টায়ার ফ্রন্ট এবং ১৩০/৭০ রেয়ার টায়ার ইনস্টল করেছে এবং উভয়ই টিউবলেস। টায়ারগুলি শক্তিশালী অ্যালয় হুইলের উপরে স্থাপন করা হয়।
মিটার ক্লাস্টার এবং ইলেক্ট্রিকালঃGPX RAPTOR 165 বাইকে রয়েছে সম্পূর্ণ ডিজিটাল মিটার এবং ব্ল্যাক স্ক্রিন প্যানেল। এই নতুন মিটার প্যানেলে, স্পিডোমিটার, ক্লক, ফুয়েল গেজ, আরপিএম কাউন্টার এবং গিয়ার কাউন্টারের মতো প্রয়োজনীয় সমস্ত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই সমস্ত ফিচারস সফ্ট টাচ সেটিং সিস্টেম বাটনের মাধ্যমে অনেক সহজেই নিজের মত করে সেট করে নেয়া যাবে। এছাড়াও এই বাইকের প্রতিটি লাইটিং এর জন্য থাকছে এলইডি লাইটিং। এগুলি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে জিপিএক্স 12v 6.3Ah মেইনটেনেন্স ফ্রি ব্যাটারি দিয়েছে এই বাইকে।
শেষকথাঃভায়োলেট, ব্ল্যাক এবং রেড হল GPX Raptor 165 বাইকের তিনটি কালার। নতুন এই নেকেড স্পোর্টসের সমস্ত ফিচারস দেখার পর এটিকে একটি প্রিমিয়াম মোটরসাইকেল হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে, কারণ বডি পার্টেসের বেশিরভাগ অংশ এবং ফিচারস অত্যন্ত ভাল মানের এবং জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলি থেকে কালেক্টেড। তবে যেটাই হোক, এই বাইকের ব্যবহারকারীদের সন্তুষ্টি এবং পারফরম্যান্স নির্ধারণ করবে এটির সাফল্য।