প্রথমেই আমি আমার পরিচয় জানিয়ে শুরু করছি। আমার নাম আব্দুল আল মামুন। পেশায় আমি একজন ছাত্র। আমার স্কুটার এর নাম এইচ পাওয়ার সুপার আর ১০০ সিসি। বর্তমান যুগে চলাচল করার জন্য স্কুটারের তুলনা হয় না। অনেকেই মনে করেন স্কুটার শুধু মেয়েদের জন্য। কিন্তু না, এটা ভুল ধারণা। যদিও এটা মেয়েরাও চালায়, তবে এটা ছেলেদের ব্যবহারের জন্যই। আমি প্রথম মোটরসাইকেল চালানো শিখেছি ডায়াং ৮০ সিসির মোটরসাইকেল থেকে। আমার স্কুটারটি কিনার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো আমাকে প্রতিদিন প্রাইভেট পড়তে যেতে হয়। সেই কারণে লেখাপড়া করার সুবিধার্থে বাবা আমাকে এই স্কুটারটি কিনে দেন। এই স্কুটারটি ঝলমলিয়া বাজারের “অনিক মটরস” শোরুম থেকে কিনেছি। স্কুটারটি আমি ১ মাস যাবত ব্যবহার করছি। এই ১ মাসে প্রায় ৭০০ কিমি পথ চালিয়েছি। আমি একদিনে সর্বোচ্চ ৫০ কিমি পথ চালিয়েছি। এমন দীর্ঘ যাতায়াত করে আমি খুব ভাল অনুভূতি পেয়েছি। এই স্কুটারটিতে সেল্ফ থাকায় এটি আমার একটু বেশিই ভাল লাগে।
এই বাইকটির ডিজাইন অনেক ভাল। এর বডির প্লাস্টিক আমার কাছে খুব হালকা বলে মনে হয়েছে। অল্প আঘাতে ভেংগে যেতেও পারে। তবে এর গ্রাফিক্স ডিজাইন বেশ ভাল। এর বিল্ড কোয়ালিটি মজবুত আছে। রংটাও অনেক উজ্জ্বল আছে। বাইকটির আউট লুক অনেক সুন্দর। স্কুটারটির ইঞ্জিন মমোটামুটি শক্তিশালী। এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স ভাল। সব চেয়ে মজার বিষয় এই যে, এই বাইকে কোন গিয়ার নেই। তাই গিয়ার কমা-বাড়া করার কোন ঝামেলা নেই।
অন্যদিকে এই বাইকের ইঞ্জিন পারফরমেন্স আমার খুব ভাল লেগেছে। ১ মাস চালিয়ে বাইকটি থেকে আমি ভাল অনুভূতি পেয়েছি। আমি এখন পর্যন্ত বাইকটির কোন সমস্যা বুঝতে পারি নাই। তবে আমার একটা বিষয় খারাপ লেগেছে। সেটি হলো এই বাইকটি ওজনে খুব পাতলা ও হালকা। এর ওজনটি আর একটু বেশি হলে অনেক ভাল হত। আমি বাইকটি সর্বোচ্চ ৫৫ গতিতে তুলেছি। আমি বেশি গতিতে আমি বাইক চালাই না। আমি রাতে বাইকটি চালিয়ে দেখেছি, এর হেড লাইটে পর্যাপ্ত পরিমানে আলো হয়। বাইকের সুইচ গুলো খুবই সুন্দর। এগুলো ব্যাবহার করতে আমার কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। বাইকটির সিটিং পজিশন খুব ভাল। দুই জন খুব আরামেই বসা যায়। বাইকটি ছোট হওয়ার কারনে আমি খুব সহজেই বাইকে বসে মাটিতে পা রাখতে পারি। বাইকটির সাসপেনশন আমার তেমন ভাল লাগে নাই। খারাপ রাস্তার খুব বেশি পরিমানে ঝাঁকুনি অনুভব করি। এই স্কুটারের ব্রেকিং সিস্টেম মোটামুটি ভাল। এর দুই চাকাতেই ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এর চাকা গুলো আর একটু মোটা হলে ভাল হত।
আমি এযাবৎ কোন দিন সার্ভিসিং সেন্টারে যাই নাই। কারণ আমার বাসা থেকে সার্ভিসিং সেন্টার অনেক দূরে হয়। এছাড়া এখনো কোন সমস্যাও চোখে পড়ে নাই।
আমার বাইকের মাইলেজ নিয়ে আমি খুশি আছি। কারন আমি ১ লিটার তেলে ৬০ প্লাস কিমি পথ যেতে পারি। তাই এই দিক থেকে আমি খুবই সন্তুষ্ট। মাইলেজ নিয়ে আমার কোন প্রকারের অভিযোগ নেই।
দামের কথা বলতে গেলে এই স্কুটারটির দাম মোটামুটি সঠিক ও সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। তবে আমি একটি অফার চলাকালীন সময়ে কিনেছি। এই অফারে আমার বাইকের রেজিস্ট্রেশন ফ্রি পেয়েছি। মাইলেজ ও দামের কথা বিবেচনা করে এই মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন।
ভাল দিকঃ ১/ তেল খরচ খুব কম, ২/ দাম সঠিক আছে, ৩/ এর সিটিং পজিশন ভাল, ৪/ ডিজাইন ও পারফরমেন্স ভাল, ৫/ ইঞ্জিন মোটামুটি শক্তিশালী, ৬/ সুইচগুলো দেখতে সুন্দর, ৭/ রাতে হেড লাইটে পর্যাপ্ত পরিমানে আলো হয়, ৮/ সেল্ফ আছে।
খারাপ দিকঃ ১/ সাসপেনশন ভাল না, ২/ এর বডির প্লাস্টিক গুলো হালকা, ৩/ মোটরসাইকেলটির ওজন খুব কম।
কেউ যদি অল্প দামের মধ্যে স্কুটার কিনার কথা ভাবছেন, তাহলে এর ভাল দিক গুলো বিবেচনা করে এইচ পাওয়ার সুপার আর ১০০ সিসির বাইকটি কিনতে পারেন। আশা করি আমার মত আপনারাও এটি থেকে ভাল অনুভূতি পাবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।