এইচ পাওয়ার জারা ১০০সিসি মোটরসাইকেল রিভিউ - রাকিবুল ইসলাম

আমাদের দেশে বিভিন্ন ব্যান্ডের মোটরসাইকেল রয়েছে। এইচ পাওয়ার জারা ১০০ সিসি মোটরসাইকেলটি বাংলাদেশের বহুল প্রচলিত বাইকগুলোর মধ্যে একটি। সকল যাতায়াতের জন্য এই মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করে মজা আছে। সবাইকে স্বাগত জানিয়ে এখন আমি আমার পরিচয় দিচ্ছি। আমার নাম মোঃ রাকিবুল ইসলাম। পেশায় আমি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ের কাজের জন্যই মূলত এই মোটরসাইকেলটি আমি কিনি। ছোটবেলা থেকেই আমি মোটরসাইকেল এর খুব ভক্ত ছিলাম। অনেক বছর আগে থেকেই আমি মোটরসাইকেল ব্যবহার করি। আমার এই এইচ পাওয়ার জারা ১০০ সিসি মোটরসাইকেলটি ব্যবহারের আগেও আমি বিভিন্ন ব্যান্ডের ৪ টা মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছি। এই মোটরসাইকেল গুলোর পারফরমেন্স ভাল থাকলেও মাইলেজ এর দিক থেকে আমি খুব অসন্তুষ্ট ছিলাম। বর্তমানে আমি ভাল মাইলেজ পাবো এমন আশায় ১০০ সিসির এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। এটি আমার জীবনের পঞ্চম বাইক। এই মোটরসাইকেলটা আমি “অনিক ট্রেডার্স” ঝলমলিয়া বাজার, পুঠিয়া, রাজশাহীর শোরুম থেকে কিনেছি। এটি আমি এক মাস যাবত ব্যবহার করছি। এক মাসে প্রায় ৯৪০ কিমি পথ চালিয়েছি। ১ মাস চালিয়েই আমি মোটরসাইকেলটির ভাল-মন্দ দিক গুলো বুঝতে পেরেছি। এখন আমি এই দিকগুলো সবার সাথে শেয়ার করব।

প্রথমে ডিজাইন নিয়ে কথা বলতে চাই। জারা এইচ পাওয়ার ১০০ সিসি মোটরসাইকেল এর ডিজাইন ও ব্লিডিং কোয়ালিটি এক কথায় আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে। আমি অনেক গুলো মোটরসাইকেল দেখে এটি পছন্দ করেছি। এই মোটরসাইকেলটির বডির প্লাস্টিক গুলো আমার কাছে মজবুত মনে হয়েছে।

আমার এই মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন পারফরমেন্স খুব ভাল। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয় নাই। এর ইঞ্জিনটা আমার কাছে খুব শক্তিশালী মনে হয়েছে। এর শব্দটা অনেক সুন্দর। তবে আমি মোটরসাইকেলটি দ্রুত স্পীডে চালানোর সময় লক্ষ্য করে দেখেছি চেনের ভেতরে খারাপ শব্দ করে। কিন্তু ধীর গতিতে কোন সমস্যা বুঝতে পারি নাই।

মোটরসাইকেলটি কিনার সময় শোরুম থেকে বলেছিল ১ লিটার তেলে ৬০-৬৫ কিমি মাইলেজ পাবো। এখন আমি ঠিক সেই মাইলেজটিই পাচ্ছি। তেল খরচ কম হবে এই আশায় মোটরসাইকেলটি কিনেছিলাম। সেজন্য আমি এদিক থেকে খুবই খুশি।
এই মোটরসাইকেল এর সিটিং পজিশন বড় ও চওড়া। এজন্য আমি এক সাথে তিন জন নিয়ে চালাতে পারি। এছাড়া মোটরসাইকেলটি তেমন উঁচু না হওয়ায় সিটে বসে আমি খুব সহজেই মাটিতে পা রাখতে পারি। মোটরসাইকেল চালানোর সময় এর হ্যান্ডেলবারটি আমাকে ভাল অনুভূতি এনে দেয়। আমি হাই রোডে সর্বোচ্চ 60 কিমি/ ঘন্টায় গতি তুলেছি। এছাড়া এক দিনে প্রায় ৫০ কিমি পথ চালিয়েছি। তবে দীর্ঘক্ষন বসে চালালে আমার কাঁধে, পিঠে, কোমরে ব্যথা করে। আমি দীর্ঘ যাতায়াত খুব করি। প্রয়োজন ছাড়া আমি মোটরসাইকেল খুব কম চালাই। এছাড়া আমি বেশি স্পীডে চালানো পছন্দ করি না। এই মোটরসাইকেল এর সুইচ গুলো দেখতে খুবই সুন্দর, যা ব্যবহারে আমার কোন সমস্যা হয় না । রাতে হেড লাইটে পর্যাপ্ত আলো দেয়। যা আমাকে পরিষ্কার রাস্তা দেখাতে সাহায্য করে। তবে খারাপ রাস্তায় একা বাইকটি চালালে অতিরিক্ত ঝাঁকুনি লাগে। ব্রেক এর কথা বলতে গেলে ব্রেক খুবই ভাল কাজ করে। তবে ডিস্ক ব্রেক থাকলে আরো ভাল হত। তবুও আমি ভাল কন্ট্রোল করতে পারি। এছাড়া এর চাকার গ্রিপ গুলো অনেক ভাল। খুব সহজে চাকা স্লিপ করে না। এর লুকিং গ্লাস দুটিও দেখতে চমৎকার ।

আমার মোটরসাইকেলটি এক দিনও সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিসিং করাই নাই। কারণ সার্ভিসিং সেন্টার আমার বাসা থেকে অনেক দূরে হয়। আমি আমাদের বাজারের মেকানিক এর কাছে সার্ভিসিং করিয়ে নিই। তবে এখনো আমার মোটরসাইকেল এর তেমন কোন সমস্যা পাই নাই। এই মোটরসাইকেলটির বিক্রয়ের হার বাড়াতে হলে দামটা আরো কিছু কমাতে হবে। ১০০ সিসির বাইক হিসেবে আমার কাছে দাম বেশি মনে হয়েছে।

সকলের উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ এই যে, কেউ যদি ১০০ সিসির মধ্যে মোটরসাইকেল কিনতে চান তবে আপনারা নিশ্চিন্তে এইচ পাওয়ার জারা ১০০ সিসির এই মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। এটি কিনলে আমি মনে করি আপনারা ভাল অনুভূতি পাবেন। কারন মোটরসাইকেলটি সব দিক থেকেই অনেক ভাল। এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স তো অসাধারণ। সবাইকে ধন্যবাদ।

All H POWER bike price in bd

H Power Zaara 100