এইচ পাওয়ার জারা ১০০ মোটরসাইকেল রিভিউ - সাজেদুল ইসলাম

ব্যক্তিগত বাহন হিসেবে মোটরসাইকেলের বিকল্প আরামদায়ক কিছু খুঁজে পাওয়া খুব দুষ্কর। আমাকে আমার ব্যবসা এবং পারিবারিক বিভিন্ন কাজ কর্ম সময়মত সম্পন্ন করতে হয় আর এই কারণে বাইকের থেকে ভাল কোন বাহন আমার দৃষ্টিতে নাই। আমি খুব সাধারন একটি বাইক পছন্দ করেছি এই সকল বিষয় সমাধান করার জন্যে এবং আমার বাইকের নাম হল “এইচ পাওয়ার জারা ১০০সিসি”। গত ২ বছর যাবত আমি এই বাইক ব্যবহার করছি এবং এই সময়ে এই বাইকের ভাল এবং খারাপ দুটো দিকের ব্যাপারেই বেশ ভাল অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। আমি মনে করি আমার সেই অভিজ্ঞতা যদি আমি কোন মাধ্যম দিয়ে মোটরসাইকেল ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে শেয়ার করি তবে সেটা তাদের জন্য অনেক সুবিধাজনক হবে বিশেষত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে।

যেহেতু বেশির ভাগ বাইকারই আউটলুকের ব্যাপারটা সামনে রেখে বাইক পছন্দ করে তাই আমি মনে সেটা নিয়ে আগে কথা বলাই ভাল হবে। আমার বাইকের ডিজাইন তেমন ভাল না তবে এর বডিতে যে প্লাস্টিক গুলা ব্যবহার করা টা অনেক মজবুত বলে মনে হয় আমার কাছে এবং আমি মনে সেগুলা অনেকদিন পর্যন্ত সাপোর্ট দিবে। আমি মনে করি কোম্পানির উচিত আরও কিছু কালারের মোটরসাইকেল বাজারে নিয়ে আসা। লাল রঙ এর বাইক আমার খুব ভাল লাগে এবং আমি খুব খুশি হতাম এই রঙের বাইক পেলে।

আমি যদি বেশির মানুষের পছন্দের কথা চিন্তা করি তবে ইঞ্জিন এবং এর পারফরমান্স আসবে ২য় নম্বরে। শুরুতেই বলা উচিত বলে আমি মনে করছি যে, নতুন ব্র্যান্ড হিসেবে এর ইঞ্জিনের পারফরমান্স বেশ ভাল। সহজে গরম হয় না এবং খুব অল্প সময়েই বেশ ভাল গতি তুলতে পারে। আমি মনে করি ১০০সিসির একটা বাইক টা বার এমন ব্র্যান্ড হিসেবে এর ইঞ্জিনটা বেশ ভাল বলার জন্য যথেস্ট। কিন্তু আমি এর মাইলেজ নিয়ে খুশি না। আমি বর্তমানে মাইলেজ পাচ্ছি ১০০সিসি বাইক হিসেবে এর থেকে কিছুটা হলেও বেশি মাইলেজ পাওয়া উচিত।

আপনি যখন একজন মোটরসাইকেল চালক তখন আপনি অবশ্যই এর আরাম নিয়ে চিন্তা করবেন কারণ যখন আপনার মোটরসাইকেল আছে খুব স্বাভাবিক তখন আপনি লং ট্যুর এবং দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার কথা চিন্তা করবেন। আপনার জন্য এসব কিছু খুব বেদনাদায়ক হতে পারে যদি আপনার বাইক আপনাকে আরামের দিক দিয়ে সাপোর্ট না দেয়। আমার বাইকের আরামের কথা বলতে গেলে শুরুতেই বলা ভাল যে এর সিটিং পজিশনটা বেশ নরম এবং এর উপরে বসাকালীন আমি কোন সমস্যা বোধ করি না লং রাইডে ছাড়া। সিটিং পজিশন থেকে খুব সহজেই মাটিতে পা দিতে পারি। যেমনটা আমি একটু আগেই উল্লেখ করেছি যে লং রাইডে সমস্যা হয় আবার উচ্চ গতিতে হাতেও সমস্যা অনুভব করি। অনেক্ষন রাইড করার পর হাতে পিঠে এবং ঘাড়ে ব্যাথা হয়। আমি একদিনে সর্বোচ্চ ১৫০ কিলোমিটার রাইড করেছি এবং সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটারত প্রতি ঘন্টা তুলেছি। এই বাইক নিয়ে এমন গতি এবং লম্বা পথ পাড়ি দেওয়া অনেক কঠিন বলে মনে হয় আমার কাছে।

ব্রেকিং সিস্টেমটা ভাল যেমনটা ঠিক হওয়ার কথা। তবে স্বাভাবিক গতিতেও আমি পেছনের চাকা পিছলাতে দেখেছি যা আমার কছে ভাল লাগে নি। আবার, এর সাসপেনশনটা আমার কাছে ভাল লাগেনি কারণ ভাল রাস্তাতেও আমাকে ঝাকি সামাল দেওয়া লাগে। সব মিলিয়ে বলতে গেলে আমি বলবো যে আমার বাইকের আরামের ব্যাপারটা তেমন ভাল না।

আমি কয়েকবার সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি এবং তাদেরকে আমি তাদের কাজের প্রতি আন্তরিক পেয়েছি কিন্তু তারা তাদের কাজে তেমন দক্ষ না। আমার কাছে তাদের কাজের কৌশল ভাল লাগে নি। আমার মনে হয় কোম্পানির উচিত এই ব্যাপারটায় বিশেষ নজর দেওয়া।

এর দাম নিয়ে মন্তব্য চাইলে আমার কাছে এই বাইকের দাম বেশি বলে মনে হয়েছে এর পারফরমান্স বিবেচনা করে। কোম্পানির উচিত হবে হয় তাদের পন্যের দাম কমানো না হয় গুনগত মানের দিকে অতিরিক্ত নজর দেওয়া।

মোঃ সাজেদুল ইসলাম
নাটোর

All H POWER bike price in bd

H Power Zaara 100