সবাইকে স্বাগত জানিয়ে আমি আমার পরিচয় দিয়ে আমার মোটরসাইকেল সম্পর্কে কিছু মতামত তুলে ধরছি। আমার নাম মোঃ সাওন আলী। পেশায় আমি একজন ব্যবসায়ী। ছোটবেলা থেকেই আমি মোটরসাইকেল এর উপর খুব আকৃষ্ট ছিলাম। প্রথম মোটরসাইকেল চালানো শিখেছি আমি টিভিএস মেট্রো ১০০ সিসির মোটরসাইকেল দিয়ে। আমার বর্তমানের মোটরসাইকেলটির নাম হল এইচ পাওয়ার জারা ১১০ সিসি। এটি আমার জীবনের ২য় বাইক। এই মোটরসাইকেলটি ঝলমলিয়া বাজারের “অনিক মটরস” নামক শোরুম থেকে কিনেছি। মোটরসাইকেলটি আমি ৩ মাস যাবত ব্যবহার করছি। এই ৩ মাসে আমি প্রায় ২৫০০ কিমি পথ চালিয়েছি কোন প্রকারের দূর্ঘটনা ছাড়াই। আমার বন্ধুরা সবাই বলত এই মোটরসাইকেলটির পারফরমেন্স খুব ভাল। তাই ভাবলাম এটি কিনেই ফেলি। এক দিন হঠাৎ করে তাদেরকে সাথে নিয়ে শোরুমে গিয়ে মোটরসাইকেলটি কিনেছি।
এই মোটরসাইকেলটির ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি অসাধারণ। ৩ মাস ব্যবহার করার পরেও এখনো সেম নতুনই আছে। এই মোটরসাইকেলের বডির পার্টস ও প্লাস্টিক গুলো মজবুত মনে হয়েছে। মোটরসাইকেলটি থেকে আমি এখন পর্যন্ত ইঞ্জিন পারফরমেন্স খুব ভাল পাচ্ছি। আশা করি আগামীতেও ভাল পারফরমেন্স পাবো। মোটরসাইকেলটিতে এখনো বড় ধরনের কোন সমস্যা দেখা দেয় নাই। এর ইঞ্জিনটা আমার কাছে খুব শক্তিশালী মনে হয়েছে। এটি বেশিক্ষণ চললেও অন্যান্য মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিনের মত ওভার হীট হয় না। হাই স্পীডে চালালেও ইঞ্জিন থেকে অতিরিক্ত খারাপ কোন শব্দ শুনতে পাই নাই। ইঞ্জিন শক্তিশালী হওয়ায় কোন বাধাকে সে বাধা মনে করে না।
মোটরসাইকেলটির সিটিং পজিশন বেশ ভাল। মোটরসাইকেলটি তেমন উঁচু না হওয়ায় সিটে বসে আমি খুব সহজেই মাটিতে পা রাখতে পারি। আমি হাই রোডে একদিন সর্বোচ্চ ৯০ গতি তুলেছি। বেশি গতিতে এর মাথা ভাইব্রেট করে। মোটরসাইকেলটির ওজন আর একটু বেশি হলে খুব ভাল হত। আমি এক দিনে প্রায় ৮০ কিমি পথ চালিয়েছি। দীর্ঘক্ষন বসে চালালে আমার কাঁধে, পিঠে, কোমরে হালকা ব্যথা করে। এই মোটরসাইকেলটি কিনে আমাকে প্রায় দিনই দীর্ঘ যাতায়াত করতে হয়। এই মোটরসাইকেল এর সুইচ গুলো দেখতে খুব সুন্দর। এগুলো ব্যবহারে আমার কোন সমস্যা হয় না। আমি রাতে মোটরসাইকেলটি চালিয়েও দেখেছি এর হেড লাইটে অনেক আলো হয়। যা আমাকে পরিষ্কার রাস্তা দেখাতে সাহায্য করে। মোটরসাইকেলটির সাসপেনশন গুলো খুব ভাল কাজ করে। ব্রেক এর কথা বলতে গেলে মোটরসাইকেলটির ব্রেক খুবই ভাল কাজ করে। এই মোটরসাইকেলের সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক রয়েছে। সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক থাকায় আমি অনেক ভাল কন্ট্রোল করতে পারি। মোটরসাইকেলটির চাকা দুটো দেখতে অনেক সুন্দর এবং চাকার গ্রিপ গুলো অনেক ভাল। চাকার গ্রিপ গুলো ভাল হবার কারণে হাই ব্রেক করলেও এটি তেমন স্লিপ করে না। এর লুকিং গ্লাস থেকে পিছনের দৃশ্য পরিষ্কার দেখতে পাই। এখন পর্যন্ত এর সেল্ফটি সব সময় ভাল কাজ করে। এর ব্যাটারি কোয়ালিটি উন্নতমানের।
মোটরসাইকেলটি কিনার সময় শোরুম থেকে আমাকে বলেছিল এক লিটার তেলে ৬০ কিমি পথ চলবে। আমি এখনো মাইলেজ মেপে দেখি নাই। মাইলেজ যাই হোক না কেন মোটরসাইকেলটির পারফরমেন্স ভাল পেলেই আমি সন্তুষ্ট। আমার মোটরসাইকেলটি এক দিন মাত্র সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিসিং করিয়েছি। সব কিছু ঠিক-ঠাক আছে কিনা শুধু মাত্র সেটি দেখানোর জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। তাদের কাজের কাজের মান আমার ভাল লেগেছে। সার্ভিসিং সেন্টারের পরিবেশটিও বেশ ভাল। তবে এখনো আমার মোটরসাইকেলে বড় কোন সমস্যা বুঝতে পারি নাই। এছাড়া এই মোটরসাইকেলটির সকল পারফরমেন্স বিবেচনায় দামটা আমার কাছে সঠিক আছে বলে মনে হয়েছে।
সকলের উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ, কেউ যদি ১১০ সিসির মধ্যে ভাল মোটরসাইকেল কিনতে চান তাহলে আপনারা নিশ্চিন্তে এইচ পাওয়ার জারা ১১০ সিসি মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। আমি মোটরসাইকেলটি চালিয়ে অনেক ভাল অনুভূতি পাই। এর তেল খরচ অনেক কম এবং দামটাও সকলের সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। তবে মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন ভাল রাখতে সব সময় ভেজাল মূক্ত তেল ব্যবহার করতে হবে। কোম্পানির কাছে আমার দাবি, মোটরসাইকেলটির ওজন আর একটু বেশি হলে ভাল হত। সবাইকে ধন্যবাদ।