প্রথমেই আমার পরিচয় জানাচ্ছি। আমি মোঃ মিনারুল ইসলাম। পেশায় আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার ব্যবসার কাজের জন্য ও ব্যক্তিগত কাজের উদ্দেশ্যে এই মোটরসাইকেলটি মূলত আমি কিনি। আমার মোটরসাইকেল এর নাম এইচ পাওয়ার জারা ১১০ সিসি। এই মোটরসাইকেলটি আমি “অনিক ট্রেডার্স” ঝলমলিয়া বাজাররের একটি শোরুম থেকে কিনেছি। এই মোটরসাইকেলটি আমি ১ বছর যাবত ব্যবহার করছি। এই ১ বছরে প্রায় ৬০০০ কিমি পথ চালিয়েছি কোন প্রকারের দূর্ঘটনা ছাড়াই। এটা আমার জীবনের প্রথম বাইক। আমার চাচার হিরো হোন্ডা মোটরসাইকেলে আমি সর্বপ্রথম চালানো শিখেছি।
আমি এই মোটরসাইকেলটি শুধু পারফরমেন্স বিবেচনা করে কিনি নাই। বরং বাইকের ভাল মাইলেজ পাবার আশায় কিনেছি। কারন আমি মাটির রাস্তাতে মোটরসাইকেলটি বেশি চালাই। ১ লিটার তেলে আমি ৫২ থেকে ৫৫ কিমি পথ চলতে পারি। এমন মাইলেজ পেয়ে আমি সন্তুষ্ট আছি। এছাড়া মোটরসাইকেলটির ডিজাইনটা আমার কাছে পারফেক্ট মনে হয়েছে। আমি এত দিন চালিয়ে বুঝতে পেরেছি যে, এর বডির প্লাস্টিকগুলোও অনেক মজবুত। যা হালকা আঘাতে ভেংগে যাবে না। ১১০ সিসির মোটরসাইকেল হিসেবে এর ইঞ্জিনটি অনেক ভাল শক্তি উৎপন্ন করতে পারে। এটি খুব শক্তিশালী। মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিনের শব্দটা অনেক সুন্দর। তবে বেশিক্ষণ চললে বাইকটির ইঞ্জিন হালকা গরম হয় এবং চেনের ভিতরে শব্দ করে। কিন্ত এর ইঞ্জিনের পারফরমেন্স আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে। মোটরসাইকেলটির কন্ট্রোল অনেক ভাল। ডিস্ক ব্রেক বা হাইড্রোলিক ব্রেক থাকায় আমি আরো ভাল কন্ট্রোল করতে পারি। ৭০ গতির উপরে তুললে মোটরসাইকেলটির মাথা কাপে। তবে এটি আমি আমলে নেই নি। কারণ আমি বেশি স্পীডে মোটরসাইকেল চালাই না।
আমার মোটরসাইকেলে বড় কোন সমস্যা নেই। আমার মোটরসাইকেলটি ১ বার সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিসিং করিয়েছি। চেনে একটু সমস্যা ছিল। সেখানে সার্ভিসিং করানোর পরে সেই সমস্যাটি আর দেখা দেয় নি। তখন আমি বুঝলাম তাদের কাজের মান ভাল। সেখানকার পরিবেশটিও অনেক ভাল। সেখানে যথেষ্ট পরিমানে যন্ত্রপাতিও লক্ষ্য করেছিলাম। আমার একটি বিষয় কাছে খারাপ লেগেছে, সেটি হল এই মোটরসাইকেল এর দাম অনেক বেশি। এর সকল পারফরমেন্স বিবেচনা করে দামটা আর একটু কম হলে খুব ভাল হত।
এই মোটরসাইকেলটির সিটিং পজিশন খুব ভাল। সিট নরম হওয়ায় সিটে বসে আরাম আছে। এক সাথে ২ জন বসে আরামের সাথে চালানো যায়। আমি আমার পরিবার নিয়ে এক সাথে চলাচলের জন্য এমন সিটিং পজিশন দেখেই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। সিটে বসে আমি খুব সহজেই মাটিতে পা রাখতে পারি। কারন এটি বেশি উঁচু না। এর সুইচ গুলো দেখতে সুন্দর ও এগুলো ব্যবহার করতে আমার কোন সমস্যা হয় না। রাতে হেড লাইট থেকে প্রচুর আলো পাই। আমি মোটরসাইকেলটি হাই রোডে সর্বোচ্চ ৮০ গতিতে তুলেছি। তবে বেশি গতিতে আমার হাত ঝিনঝিন করে। ৭০ গতির উপরে তুললে বাইকের মাথা ভাইব্রেট করে। এক দিনে প্রায় ১০০ কিমি পথ চালিয়েছি। দীর্ঘক্ষণ বসে চালালে আমার হাতে, পিঠে, কোমরে ব্যথা করে। এই মোটরসাইকেলটির সাসপেনশন আমার পছন্দ হয় নাই। কারণ খারাপ রাস্তায় এক থাকলে খুব ঝাঁকুনি অনুভব করি। তবে এর কন্ট্রোল খুব ভাল। সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক থাকায় আমি ভাল কন্ট্রোল করতে পারি। এর লুকিং গ্লাস থেকে আমি খুব সহজেই পিছনের দৃশ্য পরিষ্কার দেখতে পাই। ১ বছর পার হয়ে গেছে কিন্তু এর সেল্ফ স্টার্ট এ কোন সমস্যা হয় নাই। এর ব্যাটারি বেশ টেকসই।
পরিশেষে বলতে চাই, যারা ১১০ সিসির মধ্যে মোটরসাইকেল কিনার কথা ভাবছেন, তারা ভাল মাইলেজ বিবেচনা করে এইচ পাওয়ার জারা ১১০ সিসির এই মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। কারণ এই মোটরসাইকেল এর তেল খরচ খুব কম। এছাড়া, মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন পারফরমেন্স খুবই ভাল। কোম্পানির কাছে আমার সেই রকম কোন দাবি নেই। শুধু চাই দামটা আর একটু কম হলে ক্রেতাদের জন্য খুব ভাল হত। সবাইকে ধন্যবাদ।