এইচ পাওয়ার জারা ১০০ মোটরসাইকেল রিভিউ - মন্টু

মোটরসাইকেলর মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে যাতায়াত করা সম্ভব। এছাড়া দিন দিন মোটরসাইকেল এর দাম কম হওয়ায় ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। বাজারে বিভিন্ন ডিজাইনের মোটরসাইকেল লক্ষ্য করা যায়। কারন সকলের পছন্দ এক না। মোটরসাইকেল এর সিসি লিমিটের উপর ভিত্তি করে দাম কম বাড়া হয়। আমি গ্রামের মানুষ হওয়ায় ১০০ সিসির মোটরসাইকেল বেশি প্রাধান্য দিয়েছি। কারণ আমার ভাল মাইলেজ সমৃদ্ধ মোটরসাইকেল চাই। আমার নাম মোঃ মুন্টু । আমি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজে আমাকে এখানে ওখানে যাতায়াত করা লাগে। আমার বর্তমান মোটরসাইকেল এর নাম হচ্ছে জারা এইচ পাওয়ার ১০০ সিসি। জারা এইচ পাওয়ার মোটরসাইকেলটি আমার জীবনের দ্বিতীয় বাইক। এই মোটরসাইকেলটি নিয়ে আমি প্রায় প্রায় দিনই ১০০ কিমির মত রাইডিং করি। বলতে গেলে ব্যবসার বিভিন্ন কাজে আমাকে একটু বেশিই যাতায়াত করতে হয়। আমি আমার মোটরসাইকেলটি ১ বছর যাবত ব্যবহার করছি এবং এক বছরে প্রায় প্রায় ২৮,০০০ কিমি পথ চালিয়েছি। এই মোটরসাইকেল এর আগে আমি হীরো হুন্ডা ১০০ সিসি টি ব্যবহার করেছি। এখন আমার মোটরসাইকেল বিষয়ে কিছু তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। এই মোটরসাইকেলটি কিনার ক্ষেত্রে তথ্যগুলো আপনাদের অনেক কাজে লাগবে।

মোটরসাইকেলটির ডিজাইন দেখে আমি প্রথমে পছন্দ করি। ডিজাইনটি আমার খুব ভাল লেগেছে। আমি মোটরসাইকেল নিয়ে একদিন পড়ে গিয়েছিলাম। পড়ে যাওয়াতে আমার মোটরসাইকেল এর প্লাস্টিক এর কোন ক্ষতি হয় নাই। তখন আমি বুঝতে পারি এর বডির প্লাস্টিক গুলো অনেক মজবুত। এছাড়া মোটরসাইকেলটি যে কোন বয়সের মানুষের সাথেই মানানসই বলে মনে করি। তবে এই মোটরসাইকেলটি কিনার আগে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি মাইলেজ এর দিকে। কারণ আমি ভাল মাইলেজ সমৃদ্ধ মোটরসাইকেল চেয়েছিলাম। তবে আমার মোটরসাইকেল থেকে আমি লিটারে প্রায় ৬০ কিমির উপরে চালাইতে পারি। আমি যখন অনিক ট্রেডার্স, ঝলমলিয়া, পুঠিয়া, রাজশাহী থেকে মোটরসাইকেলটি কিনি তখন তারাও এমনটি মাইলেজের কথাই আমাকে বলেছিল। তাদের কথার সাথে আমি কাজের মিল পেয়েছি।

এদের নির্দিষ্ট কোন সার্ভিসিং সেন্টার না থাকায় একটু সমস্যা হয় বলে মনে করি। প্রতি মাসে দুই বার তারা সার্ভিসিং এর জন্য ঝলমলিয়া বাজারে আসে। তবে আমি কোন দিন তাদের কাছে সার্ভিসিং করাই নাই। আমার পরিচিত মেকানিক এর কাছে সার্ভিসিং করাই। আমার মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন খুব শক্তিশালী। এখন পর্যন্ত কোন বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেই নাই। আমি সর্বোচ্চ ৮০ গতি তুলেছি। ৮০ উপরে গতি তুললে মোটরসাইকেলটি ভাইব্রেট করে। তখন আমার হাত ঝিনঝিন করে। আমি মোটরসাইকেল নিয়ে এক দিনে নাটোর, বাগাতিপাড়া, লালপুর, পুঠিয়া, রাজশাহী ইত্যাদি এলাকায় যাতায়াত করেছি। ১ দিনে প্রায় ২৫০ কিমি পথ চালিয়েছি। দীর্ঘ যাতায়াতে আমার কোমরে, পিঠে ব্যথা অনুভূত হয়।

আমার মোটরসাইকেল এর সিট নরম হওয়ায় আমি আরামের সাথে রাইডিং করতে পারি। শুধু দীর্ঘ যাতায়াতে আমার সমস্যা হয়। আমি আমি হ্যান্ডেলবার ধরে রাইড করে ভাল অনুভূতি পাই। সুইচ গুলো ব্যবহার করতে আমার কোন সমস্যা হয় না। রাতে হেড লাইট থেকে অনেক আলো পাই, যা থেকে আমি পরিষ্কার রাস্তা দেখতে পাই। মোটরসাইকেলটির ব্রেক মোটামুটি ভাল আছে। চাকার গ্রিপ গুলোও অনেক ভাল। তবে সাসপেনশন নিয়ে আমার অভিযোগ আছে। কারন খারাপ রাস্তায় চালালে আমাকে অনেক বেশি পরিমানে ঝাঁকুনি লাগে। কিছু দিন আগে সাসপেনশনের ভিতর থেকে খারাপ একটা শব্দ অনুভূত হত। এটিও আমি আমার এলাকার মেকানিক এর কাছ থেকে ঠিক করে নিয়েছি। তবে অতিরিক্ত ঝাঁকুনি সমস্যাটি দূর হয় নাই। অন্যান্য ১০০ সিসি মোটরসাইকেল এর তুলনার এই বাইকের গ্লাস দুটো একটু নিম্ন মানের। সেজন্য আমি আমার মোটরসাইকেল এর গ্লাস দুটো খুলে রেখেছি। তবে আমি বলবো এই জারা এইচ পাওয়ার ১০০ সিসি মোটরসাইকেলটি অতি দ্রুত যাতায়াতের জন্য নয়। তবে এটি সাধারন যাতায়াতের জন্য একদম পারফেক্ট। এছাড়া মোটরসাইকেলটির দাম আমার কাছে একটু বেশি মনে হয়েছে।

পরিশেষে সাবার উদ্দেশ্যে বলবো, মোটরসাইকেলটির ভাল ও খারাপ দিক গুলো বিবেচনা করে এই মোটরসাইকেলটি কিনার জন্য মতামত দেবো সবাইকে। কেউ ১০০ সিসির মোটরসাইকেল কিনলে অবশ্যই এই মোটরসাইকেলটি কিনবেন। অল্প তেলে অনেক রাস্তা চলতে পারবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

All H POWER bike price in bd

H Power Zaara 100