২১ শে আগস্ট, চীনে আন্তজার্তিক মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রি এক্সপো সাইট অনুষ্ঠানে হাউজুয়ে তাদের ১৬০ সিসি সেগমেন্টে ডিআর ১৬০এস বাইকটি সংযুক্ত করে। পাওয়ার এবং বৈশিষ্ট্য দিক দিয়ে জাপানিজ সহ অন্যান্য ব্র্যান্ডগুলোর থেকে কোন অংশেই কম নেই এই বাইকটিতে। হাউজুয়ের স্টাইলিশ বাইকের তালিকার মধ্যে আকর্ষণীয় হচ্ছে ডিআর ১৬০এস। বাইকটি স্টাইল এর দিক দিয়ে চোখ ধাঁধানো এবং অনেক এগ্রেসিভ লুক রয়েছে। ডিআর১৬০এস বাইকটির উদ্ভব হয়েছে হাউজুয়ের কিছু নিজস্ব প্রযুক্তি ও অভিনব কিছু কায়দায়।
প্রোডাক্টটির রিলিজ সারসংক্ষেপ থেকে যে তথ্য পাওয়া যায় যে, ডিআর১৬০এস হচ্ছে শুধু কঠোর মান অনুযায়ী উন্নত মডেল নয় বরং এটা একই ক্যাটাগরিতে একটি ফ্ল্যাগশিপ মডেল। স্পোর্টস এই বাইকটির লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে তরুণ প্রজম্ন যা তাদের সকল প্রয়োজনীয়তা দূর করবে। তাই এখন সময় হয়েছে বাইকটি সম্পর্কে সকলের জানার এবং কিকি বিষয় যুক্ত আছে সেগুলো নিয়ে একটু পর্যালোচনা করার।
হাউজুয়ে ডিআর ১৬০এস এ যে সকল ফিচারস রয়েছে:
-ইনভার্টেড ফ্রন্ট শক এবং সেন্ট্রাল শক এবজরবশন।
-সম্পূর্ণ বাইকের এলিডি লাইটের ছোঁয়া রয়েছে
-এইচযেআইএস যা চুরি রোধ করবে।
-সামনে এবং পেছনে সিবিএস ব্রেকিং।
ডিজাইন ও স্টাইল
হাউজুয়ে ডিআর১৬০এস হচ্ছে নেকেড স্পোর্টস মোটরসাইকেল যার রয়েছে অসাধারণ এবং নজরকাড়া ডিজাইন। স্প্লিট টাইপ লো হ্যান্ডেলবার, গ্রিপিং এবং কার্ভ সিটিং পজিশন বাইকটিকে স্পোর্টস লুক এনে দিয়েছে। বাইকটি সুন্দর চেসিসের সাথে অনেক হালকা এবং পূর্বের অন্যান্য বাইকের থেকে অনেক মজবুত গঠন করা হয়েছে। ঐতিহ্যগত অর্থে নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য নতুন বডি সিস্টেমটি ও স্পোর্টস লুক হাউজুয়েও অন্যান্য যে কোন বাইকের থেকে অনেক মজবুত। বাইকটি সব দিক থেকে দেখতে অনেক সুন্দর। যদি সামনের দিক থেকে লক্ষ্য করা যায় তবে দেখা যায় যে হেডল্যাম্পটি অনেক তীক্ষ্ণ এবং পেছনের গ্র্যাব রেল টাও অনেক তীক্ষ্ণ। বাইকটির যদি সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ধরা হয় তবে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে এর হেডল্যম্পের দিকটা । বাইকের হেডল্যাম্প অনেকটা রোবোটের মত এবং বাইকের ফুয়েল ট্যংকার ও অন্যান্য সব দিক মিলিয়ে অনেক সুন্দর একটা ডিজাইন ধারণ করেছে। এর পাশাপাশি বডি কিট ও কালার কম্বিনেশন ডিজাইনে বেশ প্রভাব ফেলেছে। এর পরে বাইকের যে সকল বিষয় ডিজাইনে প্রভাব ফেলেছে তার মধ্যে আছে স্টাইলিশ এলয়, ডিস্ক প্লেট, এয়ার স্কুপ সহ ইত্যাদি।
ইঞ্জিন ফিচারস
শুরু থেকেই হাউজুয়ে তাদের বাইকের সাথে উন্নত ইঞ্জিন নিয়ে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী। ডিআর১৬০এস বাইকটির শক্তি এখন বহুল আলোচিত। আফিশিয়ালি বলা হয়েছে যে এই বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে এয়ার কুল, সিংগেল সিলিন্ডার, দুই ভালভ, ৫ স্পীড ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিনের সর্বচ্চো শক্তি হচ্ছে ১১ কিলোওয়াট@৮০০০ আরপিএম এবং সর্বচ্চো টর্ক হচ্ছে ১৪ এনএম @ ৬৫০০ আরপিএম এবং ইঞ্জিনের কম্প্রেশান রেশিও হচ্ছে ৯:৬৫:১ । ডিআর১৬০এস বাইকটিতে এই ক্যাটাগরির অন্য বাইকের তুলনায় পাওয়ার টু ওয়েট বেশি লক্ষ্য করা যায়। ইএফআই প্রযুক্তির কারণে ইঞ্জিনের পারফরমেন্স, মাইলেজ এবং শক্তি অনেক স্মুথ হবে বলে ধারনা করা হয়।
মিটার এবং ইলেকট্রিক্যাল
মিটার প্যানলেটি ফুল ডিজিটাল এবং এখানে রয়েছে স্পীডো মিটার, রেভ মিটার, ফুয়েল ইনডিকেটর সহ অন্যান্য সকল ফিচারস।ইলেকট্রিক্যাল দিক নিয়ে কথা বলতে গেলে অবশ্যই অনেক কিছু বলার আছ । হাউজুয়ে ডিআর১৬০এস এর রয়েছে হাই কোয়ালিটির এলিডি লাইটের উৎস এবং রাতের বেলা রাইডের ক্ষেত্রে এর হেডল্যাম্প ও ইনডিকেটর আপনাকে অন্যরকম এক অনুভূতি দিবে। এ বাইকের হেডল্যাম্পটা দেখতে অনেকটা বর্মের মত । লাইট সোর্স কে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। নিচের লেভেলটা হচ্ছে লেন্স ডিজাইন। এইচযেআইএস চিপ এন্টি লক থিফ প্রযুক্তি হাউজুয়ের বাইকে নতুন আবির্ভাব হয়েছে। একটি উচ্চমানের বাইকে যে সকল কার্যক্ষমতা রয়েছে ঠিক তেমনিভাবে সেই সব প্রযুক্তি এই বাইকটিতে খুঁজে পাওয়া যায়।
সাসপেনশন এবং ব্রেকিং
রাইডিং এর ক্ষেত্রে সাসপেনশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। হাউজুয়ের এই বাইকটির সামনের সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে জাপানিজ ব্রান্ড KYB এর ইনভার্টেড ফ্রন্ট শক এবজরবার আপসাইডডাউন সাসপেনশন যা হাউজুয়ের বাইকে প্রথম লক্ষ্যনীয়। পেছনের দিকে একই ব্রান্ডের মনোশক সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। সাসপেনশন উন্নত করার কারণ হচ্ছে রাস্তায় রাইডারকে আরও বেশি কন্ট্রোল এবং আরও বেশি আত্মবিশ্বাস দেবার জন্য।
ব্রেকিং সিস্টেমের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে এখানে সিবিএস ব্রেকিং সামনে এবং পেছনে উভয় চাকাতেই ব্যবহার করা হয়েছে। সিবিএস ব্রেকিং হচ্ছে রাইডার যখন আলাদাভাবে সামনে কিংবা পেছনের ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করলে সেক্ষেত্রে দুই ব্রেকিং সিস্টেম একইসাথে কাজ করবে অর্থাৎ একটি ব্রেক ব্যবহার করলে একসাথে দুইটা ব্রেক কাজ করবে এটাই হচ্ছে সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম। সামনের ডিস্ক প্লেটের পরিমাপ হচ্ছে ২৭৬ মিমি এবং পেছনের ডিস্ক প্লেটের পরিমাপ হচ্ছে ২২০ মিমি । যদিও এই বাইকটিতে এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম নেই কিন্তু সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার জন্য এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম প্রয়োজন ছিলো।
হুইল এবং টায়ার
সামনের এবং পেছনের রিমের ডিজাইনটা হচ্ছে ১৭ ইঞ্চি এবং এটা বিশ্বব্যাপী অনেক জনপ্রিয় আর এই কারণে বাইকটির রিমে অনেক সুন্দর লুক লক্ষ্য করা যায়। সামনের চাকার পরিমাপ হচ্ছে ১০০/৮০আর১৭ এবং পেছনের চাকার পরিমাপ হচ্ছে ১৩০/৭০আর১৭।
পরিশেষে
হাউজুয়ে ডিআর১৬০এস এর কিছু অসাধারণ ফিচারস দেখার পর এটা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে এই সেগমেন্টের অনেক সুন্দর একটি বাইক। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে বাইকটি কেমন রাস্তায় পারফরমেন্স দিবে এবং এর গ্রাহকরা এই বাইক সম্বন্ধে কি মন্তব্য করে।