হিরো বাংলাদেশের স্বনাধন্য প্রথম সারির ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে একটি। শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় যখন রিকশা কিংবা অটোরিকশা নিয়ে যাওয়া হয় তখন সেটা আমার কাছে বেশ সময় সাপেক্ষ মনে হয় এবং একজন ছাত্র হিসেবে আমার কাছে সময়ের মুল্য রয়েছে। পারিবারিক বিভিন্ন কাজ সহ ব্যাক্তিগত কাজে বাইক ব্যবহার করে আমি অনেক স্বাচ্ছন্দবোধ করছি।
আমি মোঃ শাহনেওয়াজ ইকবাল ।বর্তমানে আমি কম্পিউটার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করছি। বর্তমানে আমি ব্যবহার করছি হিরোর ১৫০ সিসি বাইক যার নাম এচিভার।আমি এই বাইকটি কেনার পূর্বে ব্যবহার করেছি হোন্ডা সিডি ৮০ সিসি ও এল এম এল ফ্রিডম। পূর্বের বাইকগুলো ভালো থাকা সত্ত্বেও আমি চেয়েছিলাম নতুন ও ১৫০ সিসির বাইক। এছাড়াও হিরো এচিভারের ডিজাইন এবং অন্যান্য সব কিছু দেখে কিনে ফেলি হিরো এচিভার। প্রায় ৩ মাস যাবত আমি ব্যবহার করছি এবং বাইকটি নিয়ে ৩৫০০ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে ফেলেছি। আজ আমি আপনাদের সাথে এই ৩৫০০ কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা তুলে ধরবো।
আমার কাছে বাইকটির গঠন বেশ মোটাসোটা মনে হয়েছে। ডিজাইনটা চমৎকার এবং মার্জিত যার ফলে বিভিন্ন বয়সের সাথে সহজেই মানিয়ে যায়। বড় আকারের ফুয়েল ট্যংকার আমার বাইকটিকে দেখতে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ডিজাইনের পাশাপাশি আমি অনেক মজবুত গঠন অনুভব করেছি এবং বিভিন্ন রাস্তায় চালিয়ে সব কিছু পার্টস আমার কাছে অনেক মজবুত বলে মনে হয়েছে।
ইঞ্জিনের পারফরমেন্স আমাকে ভালো লেগেছে। তবে আমি যখন বাইকটি নিয়ে ৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টার বেশী স্পীডে যায় তখন ভাইব্রেট অনুভব করি এছাড়া ইঞ্জিনে আর কোনো সমস্যা আমি লক্ষ্য করিনি।
আমি বিভিন্ন ভাবে বাইকটি চালিয়ে অনেক আরাম অনুভব করেছি । সিটিং পজিশন বেশ চওড়া যার ফলে বসে অনেক আরাম পাই এবং পিলিয়ন নিয়ে রাইড করতেও আমার কোনো সমস্যা হয় না। সিটিং পজিশনের সাথে মিল রেখে আমি অনেক ভালো হ্যান্ডেলবার পেয়েছি এবং হ্যান্ডেলবার ধরে আমি বেশ আরাম পাই।সুইচগুলোর মান আমার কাছে ঠিক মনে হয়েছে তবে আমার বাইকটিতে AHO প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যার ফলে আমি এক্সট্রা একটা সুইচ লাগিয়ে দিনের বেলায় হেডল্যাম্পটা অফ করে রাখি। আমি রাতে রাইড করার সময় একটা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি সেটা হল এর হেডল্যাম্পের আলোটা কম মনে হয়েছে। আমি মনে করি হেডল্যাম্পের আলো আরেকটু ভালো হলে রাতে চালিয়ে আরাম পাওয়া যেত।
বাইকটির নিয়ন্ত্রণ আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আমি যেকোনো পরিস্থিতিতেই খুব ভালো ভাবো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আমার কাছে যেটা খারাপ লেগেছে সেটা হল বাইকটি ৬০ কিমি এর বেশী চালালে অনেক ভাইব্রেট করে এবং আমি খুব বেশী স্পীডে বাইক চালায় না। ব্রেকিং সিস্টেমটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে সামনে পেছনে উভয় দিকের ব্রেকিং খুব ভালো। আমার কাছে সামনের সাসপেনশনটা ভালো মনে হলেও পেছনেরটা খুব খারাপ মনে হয়েছে। টিউবলেস টায়ার থাকার ফলে আমি খুব স্বাচ্ছন্দে রাইড করি এবং পেছনের টায়ারটা খুব কম স্কীড করে।
মাইলেজ আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। বর্তমানে আমি মাইলেজ পাচ্ছি ৫০ কিমি প্রতি লিটারে । ১৫০ সিসির বাইক হিসেবে মাইলেজটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
আমি এই পর্যন্ত তাদের সার্ভিসিং সেন্টারে মাত্র দুইবার গিয়েছি এবং তাদের আচরণ , ব্যবহার ইত্যাদি আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে ।
ভালো দিক
- টিউবলেস টায়ার
- সুন্দর ডিজাইন
মন্দ দিক
- ডিজিটাল মিটার নেই
- টায়ারটা আরেকটু চওড়া করলে ভালো হতো
বাইকটির দাম আমার কাছে সব দিক দিয়ে একদম ঠিক বলে মনে হয়েছে তবে আমি মনে করি দামটা একটু কম হলে অনেকের জন্যই সুবিধা হতো। যদি কেউ এই বাইকটি কিনতে চান তবে আমি বলবো যে আপনার বাজেট যদি এক লক্ষ ত্রিশ থেকে এক লক্ষ্য চল্লিশ এর মধ্যে হয়, তবে এই বাইকটি অবশ্যই কিনতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ।