হিরো গ্ল্যামর বনাম টিভিএস ফিনিক্স
আধুনিক দিনে মানুষের জন্য আরও ভাল পরিবহনের জন্য বিভিন্ন ধরণের এবং আকারের যানবাহন পাওয়া যায়। এই প্রয়োজনীয় যানবাহনের মধ্যে মোটরসাইকেল তাদের স্থায়িত্ব, ছোট আকার এবং আড়ম্বরপূর্ণ আউটলুকের কারণে সবসময়ই তালিকার ওপরে থাকে। মোটরসাইকেলের বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল এবং বিভিন্ন দেশের কোম্পানী পাওয়া যায়। তারমধ্যে হিরো মোটো কর্পোরেশন এবং টিভিএস মোটরসাইকেল উত্পাদনকারী কোম্পানী ভারতীয় ব্রান্ডের মধ্যে অনেক বেশি জনপ্রিয়। এই উভয় কোম্পানীরই মোটরসাইকেলের বিভিন্ন ধরণের এবং সেগমেন্ট পাওয়া যায়। আমাদের দেশের প্রয়োজনের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের মোটরসাইকেলের চাহিদা আছে। এই বিভাগে এই দুটি উৎপাদনকারী কোম্পানীর বেশভাল মানের মোটরসাইকেল রয়েছে। তাদের মধ্যে হিরো গ্ল্যামার ১২৫ এবং টিভিএস ফিনিক্স ১২৫ তাদের বর্তমান সময়ের অন্যতম। এ কারণেই মাঝেমধ্যে চালক বা ক্রেতারা বিভ্রান্ত হন যে কোনটি সবচেয়ে ভাল। সুতরাং এই দুটো মোটরসাইকেলের বৈশিষ্ট্যগুলির তুলনা করি নিম্নের লাইনগুলি থেকে যা রাইডারদের পক্ষে দুটির মধ্যে কোনটি কেনা ভাল হবে তা সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হবে।
লুক এবং ডাইমেনশনঃ চেহারা এবং ডাইমেনশনে এই উভয় মোটরসাইকেলই নিখুঁতভাবে সজ্জিত এবং ডিজাইন করা হয়েছে। এগুলি কমিউটার বিভাগের মোটরসাইকেল তবে তাদের আউটলুকগুলি খুব স্পোর্টি বিশেষত হিরো গ্ল্যামার। ডাইমেনশনে হিরো গ্ল্যামারের দৈর্ঘ্য ১০০৫ মিমি, ৭৩৫ মিমি প্রস্থ এবং ১০৭০ মিমি উচ্চতা রয়েছে। এতে ১২৬৫ মিমি হুইলবেস এবং ১৫০ মিমি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রয়েছে। অন্যদিকে টিভিএস ফিনিক্স আকারে আরও বড় কারণ এটি ব্যবহারে খুব আরামদায়ক। এটির ১৯৮৫ মিমি দৈর্ঘ্য, ১০৬৫ মিমি প্রস্থ এবং ৭৪০ মিমি উচ্চতা রয়েছে। এই বাইকের গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬৫ মিমি এবং হুইলবেস ১২৬৫ মিমি। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে এই দুটি বাইকে বেশ ভাল ডাইমেনশন রয়েছে।
ইঞ্জিন এবং পারফরমেন্সঃ ইঞ্জিন একটি গাড়ির হার্ট হিসাবে পরিচিত তাই ভাল ইঞ্জিন ছাড়া সাইকেল এবং মোটরসাইকেলের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। এই দিকদিয়ে এই মোটরসাইকেল দুটিই বেশ ভাল ইঞ্জিন রয়েছে এবং তাদের পারফরম্যান্সে রাইডাররা যথেষ্ট সন্তুষ্ট। হিরো গ্ল্যামারে ১২৪.৭সিসি ৪-স্ট্রোক একক সিলিন্ডার ওএইচসি ইঞ্জিন রয়েছে। এই ইঞ্জিনটি সর্বোচ্চ শক্তি ৭২ কিলোওয়াট (৯ বিএইচপি) @ ৭০০০ আরপিএম এবং ১০.৩৫ এন-এম @ ৪০০০ আরপিএম সর্বোচ্চ শক্তি উত্পাদন করতে পারে। এই ধরণের ইঞ্জিনটি একটি কমিউটার বাইক হিসাবে ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা সর্বোচ্চ গতি দিতে পারে যা বেশ ভাল। অন্যদিকে টিভিএস ফিনিক্সে ১২৫ সিসি ইকো থ্রাস্ট ইঞ্জিন রয়েছে যা ১০.৫ বিপিপি @ ৭৫০০ আরপিএম সর্বোচ্চ শক্তি এবং ১০ এনএম @ ৬০০০ আরপিএম সর্বোচ্চ টর্ক উত্পাদন করতে পারে। এই ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ গতিটিও ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা এবং মাইলেজের পরিধিও উল্লেখযোগ্য।
ব্রেক এবং সাসপেনশনঃ এই দুটি জিনিস খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ রাইডারদের নিরাপত্তা এই দুটি জিনিসের উপর নির্ভর করে। সাসপেনশনগুলিতে হিরো গ্ল্যামারটির সামনের অংশে টেলিস্কপিক হাইড্রোলিক শক এবজরভার রয়েছে এবং পিছনের দিকে ৫ স্টেপের সামঞ্জস্যযোগ্য হাইড্রোলিক শক অ্যাবসবার সহ আয়তক্ষেত্রাকার সুইং আর্ম রয়েছে। ব্রেকগুলিতে এটিতে ডিস্ক এবং ড্রাম ব্রেকের সংমিশ্রণ রয়েছে। এই ধরণের সাসপেনশন এবং ব্রেকগুলির জন্য এই মোটরসাইকেলের ব্যবহার অত্যন্ত আরামদায়ক। অন্যদিকে টিভিএস ফিনিক্সে একই ডিস্ক এবং ড্রাম ব্রেক সমন্বয় রয়েছে তবে সাসপেনশনগুলি কিছুটা কম তবে মানে প্রায় গ্ল্যামারের মতই।
এইগুলিই হলো এই দুটি বাইকের সাধারণ বৈশিষ্ট্য যা বাইক কেনার আগে একজন রাইডার জানতে চায়। সুতরাং সবকিছু বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া না নেওয়া চালক বা ক্রেতাদের উপর নির্ভর করছে।
সাবধান থাকুন,
নিরাপদে রাইড করুন।