আমার পেশাগত প্রয়োজনে আমাকে এদিয়ে ৩য় বার আমার মোটরসাইকেল পরিবর্তন করতে হলো। আমি স্বাস্থ্যবিভাগের একজন কর্মী আর আমার কর্মের প্রয়োজনে আমাকে প্রতিদিন গড়ে ৩৫ – ৪৫ কিলোমিটার পথ মোটরসাইকেল নিয়ে পাড়ি দেওয়া লাগে যা পুর্বে ছিল সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটারের মত। তাই আমার প্রয়োজন বিবেচনায় হিরোর মাইলেজের স্পেশালিস্ট এইচএফ ডিলাক্স মডেলটা ক্রয় করি আজ থেকে প্রায় ১০ আগে আর এই ১০ মাসের মধ্যে আমি হিরো এইচএফ ডিলাক্স বাইকটা চালিয়েছি প্রায় ১১০০০ কিলোমিটার। যেহেতু আমার প্রয়োজনটাই ছিল হিরো এইচএফ ডিলাক্স পছন্দ করার মুল কারন তাই আমি অনেক সময় বেশ মনযোগ দিয়ে আমার বাইকটা পারফরমেন্স খেয়াল করে থাকি। যদি এমনটা হতো যে আমি শুধুমাত্র আমার বাড়িতে যাওয়া আসা বা সাধারন যাতায়াতের জন্যে হিরো এইচএফ ডিলাক্স কিনেছি তাইলে হয়তো আমি সেভাবে এর পারফরমেন্সের দিকে নজর দিতাম না।
আমার হিরো ডিলাক্সের বয়স আমি আগেই উল্লেখ করেছি যে প্রায় ১০ মাস এবং একটি নামকরা ব্রান্ডের নামকরা মডেল অনুযায়ী আমি মনে করি যে এই বয়সটা খুবই কম। এই অল্পসময়ে আমার এইচএফ ডিলাক্স বাইকে বেশকিছু বিষয় আমার নজরে এসেছে যা সাধারন আমি বা কোন আমার উদ্দেশ্য নিয়ে কেনা কোন বাইকারই আশা করে না।
আমি সেই ব্যাপারগুলা উল্লেখ করার আগে বলে রাখতে চায় যে হিরো এইচএফ ডিলাক্স এর দাম বিবেচনায় এটা অনেক ভাল একটা বাইক কিন্তু হিরো ব্রান্ড বিবেচনায় আমার মত ব্যবহারকারীরা ডিলাক্স এইচএফ থেকে একটু বেশিই আশা করে।
প্রথমত আমি মাইলেজের বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে চায় কারন হিরোর এইচএফ ডিলাক্স মডেল মাইলেজের জন্যে সবার কাছে সমাদৃত। আমি বর্তমানে হিরো এইচএফ ডিলাক্স থেকে পথের ধরনভেদে গড়ে মাইলেজ পাচ্ছি ৫০ – ৫৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার। এখন ১০ মাস বয়সি আমার হিরো এইচএফ ডিলাক্সকে আমি কিভাবে মাইলেজের স্পেশালিস্ট বলি। এই একই মডেলে আমারটার থেকে অনেক পুরনো বাইকে কেউ কেউ মাইলেজ পাচ্ছে ৬৫+ কিলোমিটার। সুতরাং আমারটায় কোন সমস্যা থাকার কারনে আমি হয়তো এমন মাইলেজ পাচ্ছি।
১০ মাসের মধ্যে আমাকে চাবির পোর্ট নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে এটা আশা করিনি। চাবি ঢোকানোর পর আমাকে বেশ কয়েকবার চেষ্টার পরে বাইকটা অন মুডে নিতে পারছি।
এই অল্প সময়ের মধ্যে মিটার ক্যাবল কেটে গিয়েছিল, আমি নিজের খরচে সেটা ঠিক করে নিয়েছি।
তাছাড়া এই সেগমেন্টের পার্য সকল বাইকেই কমন একটা সমস্যা হলো চেইন ঢিলা হয়ে যাওয়া। বিশেষত আমরা যারা দুরের পথে বাইক নিয়ে যাওয়া আসা করি তাদের এই ব্যাপারটা সহ্য করাই লাগে। হিরো ছাড়াও আরও অনেক নামকরা ব্রান্ডেও এই সমস্যা খুবই সাধারন বলেই আমি শুনেছি।
আমার হিরো এইচএফ ডিলাক্স বাইকের ইঞ্জিনের পারফরমেন্স নিয়ে আমি বেশ সন্তুষ্ট কারন মাইলেজের ব্যাপারটা আর সামান্য গরম হউয়া ছাড়া ইঞ্জিনের কোন ব্যাপারে আমি ঘাটতি দেখতে পায় নি। অন্যদিকে ডিলাক্স এইচএফ এর মুল্য বিবেচনাত আমি এতে আরামও অনেক ভাল পেয়েছি। বলা বাহুল্য যে আমি বেশিরভাগ সময়ে বাইক চালায় মফস্বল অঞ্চলে বা গ্রামের পথে যেখানে পথের অবস্থার কারনে আমি কখনই ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার চেয়ে বেশি গতি উঠাতে পারিনি এবং এই ধরনের পথেও আমি আরাম নিয়ে কোনরকম সমস্যা বুঝতে পারিনি।
সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন যে বিষয়টা পুর্বেই উল্লেখ করা দরকার ছিল হয়তো, তা হলো আমি আমার হিরো এইচএফ ডিলাক্স মোটরসাইকেলটার যে কয়েকটা ফ্রি সার্ভিসিং ছিল তার একটাও গ্রহন করি নি। এখন অনেকেই হয়তো বলতে পারেন যে ফ্রি সার্ভিসিং ছেড়ে দেওয়ার কারনে আমি হয়তো আমার বাইকে এত রকমের সমস্যা ফেস করছি কিন্তু, আমার কাছে যে ব্যাপারটা সবসময় মাথায় ঘুরে তা হলোঃ
আমার বাইকটা হলো স্বনামধন্য হিরো ব্রান্ডের আর এই ব্রান্ডের মোটরসাইকেল সবসময়ই অল্প দামে সেরা মোটরসাইকেল সকল শ্রেনীর বাইকারদের দিয়ে আসছে আর আমিও এই চিন্তা নিয়েই বাইকটা কিনেছিলাম কারন এই একই মডেল ব্যবহারকারী অনেকেই আমাকে জানিয়েছিল তাদের হিরো এইচএফ ডিলাক্স সাবলীলভাবে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে।
তাদের কথা মেনে নিয়ে হিরো এইচএফ ডিলাক্স কিনে সাবলীল পারফরমেন্স আশা করাটা নিশ্চয় কোন গুরুতর অপরাধ না।