প্রথমেই আমি আমার পরিচয় দিচ্ছি। আমি মোঃ নাজমুল হোসেন। পেশায় আমি একজন ছাত্র । আমার মোটরসাইকেল এর নাম এইচ এফ ডিলাক্স ১০০ সিসি। সাধারণ যাতায়াতের জন্য এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। এটা আমার জীবনের প্রথম বাইক। মোটরসাইকেলটি আমি দেড় বছর আগে কিনেছি। যদিও আমার মোটরসাইকেল কিনার ইচ্ছা ছিল অনেক আগে থেকেই। বন্ধুদের মোটরসাইকেলে আমি প্রথম মোটরসাইকেল চালানো শিখেছি। তার পর থেকেই মোটরসাইকেল কিনার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। আমার এই মোটরসাইকেলটি তাহেরপুর বাজারের একটি শোরুম থেকে কিনেছি। বাইকটি দেড় বছরে আমি ১৪,০০০ কিমি পথ চালিয়েছি। এখন আমি আমার মোটরসাইকেল এর দেড় বছর ব্যবহারের অভিজ্ঞতা সবার সাথে শেয়ার করার জন্য হাজির হয়েছি। আমার আজকের এই রিভিউটি নতুন বাইক ক্রেতাদের বাইক কেনার জন্য অত্যান্ত গুরুতপূর্ণ। আশা করি রিভিউটি শেষ পর্যন্ত সবাই পড়বেন।
এই মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিনের কথা বলতে গেলে এর পারফরমেন্স আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে। আমি এখন পর্যন্ত এর ইঞ্জিনে কোন সমস্যা পাই নাই। ইঞ্জিনটা খুব শক্তিশালী এবং ইঞ্জিনের শব্দটাও অনেক সুন্দর। হাই স্পীডে চালালেও এর ইঞ্জিনে কোন প্রকার খারাপ শব্দ হয় না। দীর্ঘক্ষণ চললেও এর ইঞ্জিন ওভার হীট হয় না। ইঞ্জিন শক্তিশালী হওয়ায় কোন বাধাকেই এটি বাধা মনে করে না। এর ইঞ্জিন থেকে আমি ভাল মাইলেজ পাই। আমি মাইলেজ নিয়ে খুবই সন্তষ্ট। কারুণ শোরুম থেকে কেনার সময় আমাকে বলেছিল ১ লিটারে ৬০ কি মি পথ চলবে। এখন আমি বর্তমানে ১ লিটার তেলে ৬০ কি মি পথ চলতে পারি। তাদের কথার সাথে কাজের মিল পেয়ে আমি খুবই খুশি হয়েছি। ১০০ সিসি মোটরসাইকেল থেকে এমন মাইলেজ পাওয়াটা স্বাভাবিক।
মোটরসাইকেল কিনার আগে আমি এর ডিজাইন পছন্দ করেছিলাম। এই ডিজাইনটা আমার খুব প্রিয়। মোটরসাইকেলটি দেখতে খুব একটা বড় না। শোরুমে গিয়ে আমি সরাসরি এই ডিজাইনটা এক দেখাতেই পছন্দ করি। তবে ডিজাইনের পাশাপাশি আমার কাছে এর বিল্ড কোয়ালিটি অনেক মজবুত মনে হয়েছে। দেড় বছর পরেও এই মোটরসাইকেলটি দেখতে প্রায় নতুনের মতই আছে। মোটরসাইকেলটির বডির প্লাস্টিক ও পার্টস গুলো অনেক টেকশই ও মজবুত। এই মোটরসাইকেলটি চালালে আশা করি সকলেই অনেক ভাল অনুভূতি পাবেন। এর সিটিং পজিশনটা আমার খুবই ভাল লেগেছে। সিটটা বেশ বড় ও নরম কোয়ালিটির। আমার সিটে বসে খুব সহজেই মাটিতে পা রাখতে সুবিধা হয়। মোটরসাইকেলটির সুইচ গুলো অনেক সুন্দর ও এটি ব্যবহারে আমার কোন কষ্ট হয় না। এর হ্যান্ডেলবারটি আমাকে অনেক আরাম এনে দেয়। রাতের বেলায় হেড লাইটে পর্যাপ্ত পরিমানে আলো পাই। বাইকটির থেকে আমি বেশ ভাল কন্ট্রোল করতে পারি।
এর চাকা দুটো দেখতে অনেক সুন্দর। সামনের চাকায় এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক থাকায় আমার মোটরসাইকেলটি কন্ট্রোল করতে খুবই সুবিধা হয়। তবে দ্রুত স্পীডে বাইকটি হালকা ভাইব্রেট করে। আমার এই মোটরসাইকেলটি আমি সর্বোচ্চ ৭০ গতিতে তুলেছি। একদিনে প্রায় ১০০ কিমি পথ অতিক্রম করেছি। এর সাসপেনশন গুলো মোটামুটি ভাল। মোটরসাইকেলটিতে সেল্ফ থাকলে অনেক ভাল হত। এই বাইকের লুকিং গ্লাস দুটো থেকে আমি পিছনের রাস্তা পরিষ্কার দেখতে পাই।
তবে আমি যখন এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি তখন এর দাম একটু বেশি ছিল। কিন্তু এখন এই মোটরসাইকেল এর দাম অনেক কম। যদি কেউ ১০০ সিসি মোটরসাইকেল কেনার কথা ভাবেন, তাহলে হিরো এইচ এফ ডিলাক্স মোটরসাইকেলটি নিশ্চিন্তে কিনতে পারেন। কেননা, এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স চমৎকার এবং এর তেল খরচ খুবই কম।
আমি একবার সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিসিং করিয়েছি। শুধু মাত্র নাট বল্টু চেক আপ করা ও মবিল পরিবর্তন করার জন্য সেখানে গিয়েছি। সার্ভিসিং সেন্টারের পরিবেশটা মোটামুটি ভাল। তাদের কাজের মান আমার ভাল লেগেছ। কিন্তু আমার বাসা থেকে সার্ভিসিং সেন্টারটি দূরে হবার কারনে পরবর্তীতে সেখানে যাওয়া আর সম্ভব হয় নাই। সবাইকে ধন্যবাদ।