ব্যাক্তিগত ব্যবহারের জন্য একটি বাইকের খুব দরকার। আমি বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য বাইকের প্রয়োজন খুব অনুভব করি। একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আমাকে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয় । এই যাতায়াত কালে আমার বাইকের খুব দরকার। আমি বাইক কেনার আগে অনেক রিভিউ দেখে এবং নিজে রাইড করে দেখেছি। আমার কাছে আমার গঠন অনুযায়ী ভালো লেগেছে হিরো হাংক। এই বাইকটি অনেক বছর হল বাংলাদেশের বাজারে আছে এবং বেশ দাপটের সাথে রাস্তা কাপিয়ে আসছে। নতুন এই হিরো হাংক ম্যাট কালার সংযোজন করার ফলে আরও সুন্দর লাগছে এবং আমার কাছে পূর্বের থেকে আরও অনেক বেশি ভালো লাগছে ডিজাইনের দিক থেকে। অন্যদিকে বাইকটি কেনার আগে রাইড করে আমার কাছে এর ইঞ্জিনের স্মুথ পারফরমেন্স এবং কন্ট্রোল খুবই ভালো লেগেছে । তাই মনে মনে সিদ্ধান্ত নিই যে এই বাইকটাই কিনবো। বাইকটা কেনার পর এখন পর্যন্ত আমার প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার হয়ে গেছে এবং বাইকের ছোটখাটো কিছু সমস্যা ছাড়া আমি আর কোন সমস্যা পাইনি। আজকে আমার এই হিরো হাংক ম্যাট বাইকটি নিয়ে স্বল্প কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রথমে বাইকের ভালো দিক নিয়ে শুরু করা যাক
- বাইকের ডিজাইন অসম্ভব ভালো। আমার কাছে এই ম্যাট রঙ খুব ভালো লেগেছে এবং এই কালার কম্বিনেশন ও বাইকের গঠন আমার সাথে আমার বাইকের সুন্দর কম্বিনেশন করেছে।
- এক্সেলেরশন অনেক ভালো কিন্তু বাইকের ইঞ্জিনের শক্তি শেষের দিকে তেমন পাওয়া যায় না ।
- চালিয়ে অনেক আরামদায়ক। সিটিং পজিশন ও হ্যান্ডেলবারের কম্বিনেশন দারুণ হওয়ার ফলে আমি দীর্ঘক্ষন রাইড করে কোন ক্লান্তি অনুভব করি না এবং আমার কাছে এই বাইকটি লং রাইডের জন্য মনে হয়েছে।
- পূর্বের হাংকের থেকে এই হাংকের সাসপেনশন অনেক ভালো করেছে। আমি এই বাইকের সাসপেনশন থেকে অনেক ভালো ফিডব্যাক পেয়েছি । ভাঙ্গা বা অন্য যে কোন রাস্তায় সাসপেনশনের ফিডব্যাক অনেক ভালো।
- টায়ারের সাইজ চিকন হলেও ব্যালেন্স খুব ভালো পাওয়া যায়। আমি এই বাইকের ব্যালান্স অনেক ভালো পেয়েছি এই টায়ার নিয়ে এবং টায়ারের গ্রিপগুলো অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে।
- একদিনে টানা ১৭০ কিমি রাইড করে কোন ক্লান্তি অনুভব করিনি। আমার কাছে খুবই আরামদায়ক মনে হয়েছে।
এতক্ষণ ব্যাখ্যা করছিলাম বাইকের ভালো দিক। এখন বাইকের মন্দ দিক নিয়ে আলোচনা করবো।
- বাইকের এক্সেলেরেশন ভালো মনে হলেও টপ স্পীড অনেক কম পেয়েছি। আমি এখন পর্যন্ত টপ স্পীড পেয়েছি ১০৩ কিমি প্রতি ঘণ্টা।
আমার কাছে টপ স্পীড কম মনে হয়েছে। আমার মতে বাইকের তেলের লাইন একটু কমানো আছে এবং এর ফলে অন্যান্য হাংকের থেকে ভাইব্রেশন অনুভব বেশি হয়। তেলের লাইন একটু বাড়ালে আমার মনে হয় স্পীড আরও বেশি পাওয়া যাবে।
সব বাইক ১০০ তেঁ ১০০ পারফেক্ট হয় না। বাইকের দাম, ফিচারস, ইঞ্জিন পারফরমেন্স ইত্যাদি মিলিয়ে আমার কাছে এই বাইকের দাম পারফেক্ট মনে হয়েছে। অন্যান্য ব্রান্ডের থেকে ১৫০ সিসি সেগমেন্টের মধ্যে বেস্ট বাইক মনে হয়েছে এই বাইক। আমার সাজেশন থাকবে যে , যারা হিরো হাংক বাইকটি কিনবেন তারা অবশ্যই এই বাইকটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকবেন কারণ বাজেটে এই বাইকটি সেরা মনে হয়েছে এবং অন্যান্য সব পারফরমেন্স অনেক ভালো। মেইনটেইন করে রাইড করলে এই বাইকটি আপনাকে ১ যুগেরও বেশি সময় সাপোর্ট দিবে।
এই ছিলো আমার মতামত হিরো হাংক নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।