পরিচিত অনেকেই জানতে চায় এই মোটর-সাইকেলটা কেমন হবে, ইঞ্জিন কেমন, জিজ্ঞাস করে "ভাই লিটারে কত যায়" তাদের জন্য আজ আমার এই অনেস্ট রিভিউ। বলে রাখা ভাল আমি কোন কোম্পানির সাথে যুক্ত না বা আমার তাদের কোন স্পন্সর নেই বা কোন পেইজের এডমিন ও না, শো-রুমে গেলে মাঝে মাঝে কফি খেতে বলে, কিন্তু বেশিরভাগ সময় তাদের মেশিনে কফি থাকে না তাই না করে দেই।
বাইকের বয়স - ১১ মাস
চালানো হয়েছে - ১৩,০০০+ কিলোমিটার
মাইলেজ
লিটারে ৪২-৪৩ কিলো পাই ভদ্র অভদ্র মিলিয়ে
ভদ্র ভাবে চালালে - ৪৫-৪৬ কিলো/লিটার
অভদ্র ভাবে চালালে - ৩৮-৪০ কিলো/লিটার
হাইওয়েতে -
মোটামুটি মাথা ঠান্ডা করে চালালে - ৫০- ৫২ কিলো/লিটার
মাথা গরম করে চালালে - ৪৫-৪৬ কিলো/লিটার
বেস্ট পারফরম করে - ৬০ - ৭০ কিলোমিটার রেঞ্জে
ব্যালেন্স এন্ড ম্যানুভারিটি –এই সেগমেন্টের অন্য বাইকগুলোর তুলনায় বেস্ট।
সিটিং কম্ফোরট - ফুটপেগ সহ বেশ কমফোর্টেবল
হ্যান্ডেলবার - সিটিং পজিশানের সাথে এডজাস্ট করে নিলে এটা নিয়ে দ্বিতীয় বার ভাবা লাগে না।
টায়ার এন্ড ব্যালেন্স - সাইক্লিস্ট পাব্লিক, মুখের তুলনায় কোমরের ব্যালেন্স ভাল তাই ওটা নিয়ে চিন্তা করতে হয় না!! যদিও ১১০ থাকলে বেটার হত। হালকা বালু বা কাদাতে স্কিড করতো না।
হেডলাইট - হ্যালোজেন দেয়া থাকে, ওটা ফেলে হারিকেন লাগিয়ে নিলে আরো ভালো দেখা যাবে!! কেনার দিন-ই মটোলেড লাগিয়েছিলাম।
ভেপু বা হর্ন - চেঞ্জ করে ডুয়েল হর্ণ লাগানো, যেটা লাগানো থাকে ওটার শব্দের চেয়ে সোনা ব্যাং- এর ডাকার শব্দ বেশি!!
ব্যাটারি - কোন প্রব্লেম হয়নি, যতটুকু বুঝতে পারি এলিডি লাগানোর জন্য কিছুটা; কারন আমি সেল্ফ স্টারট দেই সবসময় এবং রেগুলার রাতে হাইওয়েতে লাইট প্লাস হর্ণ এর ব্যাপক ব্যবহার করি।
ইঞ্জিন - কম্প্যাকড এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন, পাওয়ার লস করেনা মোটেও। কিন্তু গিয়ার র্যাশিও কম, প্রতি গিয়ারে ৬০০০-৬৫০০ আরপিএমে ( RPM) এ টানলে প্রবল সম্ভবনা আছে ট্যাপিড লুজ হয়ে যাবার। অনেকে বলে ইঞ্জিন হাল্কা গরম হলেই নাকি ক্যাট ক্যাট ট্যাপিডের আওয়াজ বোনাস!! যদিও আমার বাইক ৮৫-৯০ কিলোতে টানলে পরে এই আওয়াজটা আসে, আদার ওয়াইজ ওকে। এর ক্লাচ প্লেট/ক্যাবল এডজাস্টমেন্টে আমি বিরক্ত, প্রোপারলি এডজাস্ট করলেও সপ্তাহে একবার এডজাস্ট করতেই হয়।
চেইন ড্রাইভ - ডব্লিং চালালে ৪-৫ দিনে চেন লুজ হয় তাড়াতাড়ি, একা চালালে ১৫ দিনে একবার এডজাস্ট করাই।
ব্রেক - আমার ডবল ডিস্ক, আসাধারন ব্রেকিং হাংক এর আই মাস্ট সে।
সাসপেন্সন - যেহেতু আমার আগের বাইকে ছিল মনোশক তাই হাংক নেয়ার পর মারাত্তক ঝাকি ফিল করতাম, ৭ মাস পর স্টকের টা বদলে ২০১৬ মডেলের হিরো এক্সট্রিম এর নন-রিভারস শক এবসরবার লাগিয়েছি। এখন যথেষ্ট ভালোই বলা যায়।
ফুয়েল – অকটেনে চালাই, ভাল জায়গা থেকে তেল নেই আর ইঞ্জিন অয়েলে হ্যাভলিন মিনারেল ইউজ করি, হাংক এ এটাই স্যুট করে ভাল। টেস্টেড।
এছাড়াও মটরবাইকটি আমি আমার নিজের মত করে সামান্য কিছু মডিফাই করেছি, বাহিরে এবং ভিতরে কিছু জিনিস বদলিয়েছি। ইঞ্জিনে হাত দেয়া লাগেনি একবার-ও। ব্যাস, কেনার একদিন পর দশ হাজার টাকা কমে যাওয়া বাইক্টা আমাকে সেই শোক মনে করায় নি কোনভাবে, যারা জানে বা দেখেছে আমার রাইডিং তারাই বুঝবে আমি কেন বলেছি, যদিও এখনকার বাইকগুলোতে অনেক কমপ্লেইন শুনি। আমি কিন্তু শুধুই বাইকে তেল ভরি আর চালাই না, হারিসের গ্যারেজে আমাকে দেখলেই ওর কাজ অনেক বেড়ে যায়!