জীবন সহজ করার স্বার্থে সখের দোহায় দিয়ে অনেকেই সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে অনেক ধরনের সৌখিন বস্তু ক্রয় করে ব্যবহার করে থাকে যার মধ্যে অনেক দামী মোটরসাইকেল বর্তমান প্রজন্মের ছেলেদের পছন্দ তালিকায় শীর্ষে। কিন্তু আমি সখ এবং প্রয়োজন দুইটাকেই বিবেচনায় রেখে আমার বাজটের মধ্যে সবচেয়ে ভাল একটা মোটরসাইকেল খুজছিলাম যেটা আমি খুজে পাই হিরো হাংক ১৫০ সিংগেল ডিস্ক বাইকটার মধ্যে। প্রথমত হিরো বাংলাদেশের অনেক নামকরা একটা মোটরসাইকেল ব্রান্ড আর হাংক এর ওভার অল পারফরমেন্সের ব্যাপারে আমি অনেক ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এই মোটরসাইকেলটা কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।
আমার নাম তানভীর হায়দায়। আমি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। আমি গত ১৫ মাস যাবত হিরো হাংক ১৫০ সিংগেল ডিস্ক বাইকটা ব্যবহার করছি যা আমি এখন পর্যন্ত চালিয়েছি ১৭০০০ কিলোমিটার। বলা বাহুল্য যে একটা মোটরসাইকেল ১ বছরের বেশি সময় এবং ১৭০০০ কিলোমিটারের দুরুত্ব অতিক্রম করলে একটা বাইকের ভালমন্দ অনেক কিছুই সামনে চলে আসে।
হিরো হাংক থেকে পাওয়া আমি আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে আজ শেয়ার করবো তবে আমি আগে উল্লেখ করবো আমার বাইক থেকে পাওয়া কিছু নেতিবাচক অভিজ্ঞতা এবং এই ক্ষেত্রে আমি বলে রাখতে চায় যে কমবেশি সবাই বাইক সম্পর্কে জানতে গেলে আগে জানতে চায় খারাপ কি কি পেয়েছেন কারন আমরা সবাই ই জানি যে খারাপগুলা জানলে আপনা আপনি ভাল দিকগুলা জানা হয়ে যায়।
প্রথমত যে সমস্যাটাকে আমআর কাছে সবচেয়ে বিরক্তিকর মনে হয়েছে তা হলো হিরো হাংকের চেইন সেট যা কোনভাবেই ঠিকঠাক রাখতে পারছি না। চেইন ঢিলা হয়ে এমন বাজে শব্দ করে যা চলতি পথে চরম বিরক্তি অনুভব করায়।
মাইলেজে আমি রীতিমত হতবাক। মোটরসাইকেল যারা চালায় তাদের বেশিরভাগই অকটেন ব্যবহার করেন তাই আমিও অকটেনের দিকেই বেশি আগ্রহী ছিলাম কিন্তু ব্যাপারটা আজব কারন আমি অকটেনে মাইলেজ পাচ্ছি ৩০ কিলোমিটার প্রতি লিটারের চেয়েও কম। আর পেট্রোলে মাইলেজ পাচ্ছি ৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটারের কাছাকাছি। পার্থক্যটা এতটা কমবেশি কিভাবে হয় আমি কোনভাবেই বুঝি না।
সমস্যা আগে উল্লেখ করেছি তারমানে এই না যে আমি শুধু সমস্যাই পেয়েছি। যেমনটা আমি আগে উল্লেখ করেছি যে আমি আমার বাজেটের মধ্যে সবচেয়ে ভাল বাইকটা খুজছিলাম আর আমি তার সবকিছুই হিরো হাংক ১৫০সিসি সিংগেল ডিস্ক বাইকটার মধ্যে পেয়েছি। বর্তমানে হিরো হাংকের সিংগেল ডিস্কের দাম ১,৫৬,৯৯০ টাকা তবে আমি যখন হিরো হাংক কিনি তখন বেশ ভাল এম্যাউন্টের টাকা এর ওপর ছাড় ছিল যার কারনে আমি ব্রান্ড এবং মডেলের সুনাম বিবেচনায় অন্য কোন বাইকের কথা চিন্তা করিনি আর এখন পর্যন্ত বাইকটা ব্যবহার করে আমার কাছে যা মনে হয়েছে তা হলো আমার বাজেটের মধ্যে হিরো হাংক সিংগেল ডিস্ক বাইকটা হলো সবচেয়ে ভাল বাইক।
গেল ১৫ মাসের মধ্যে আমি আমার হাংক একদিনে একটানা চালিয়েছি ৩৩০ কিলোমিটার যেখানে আরাম নিয়ে কোন ধরনের অভিযোগের সুযোগ আমাকে আমার হাংক দেয় নি। অনেকেই শুনি ১০০-১৫০ কিলো বাইক চালালেই কোমর পিঠ ধরে আসে হাত ঝিনঝিন করে এবং ক্লান্তি বোধ আসে সেখানে আমার হিরো হাংকে আমি এসবের কোনকিছুই টের পায় নি। এতকিছু বিবেচনায় আমি আমার বাজেটের পাওয়া বাইকটার প্রশংসা না করে কিভাবে পারি। অন্যদিকে সর্বোচ্চ গতির কথা বলতে গেলে আমি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গতি উঠিয়েছি ১০৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা এবং এখানেও আমাকে বলতে ভাল লাগছে যে ইঞ্জিন পারফরমেন্সসহ বাইকের কন্ট্রোলিং ব্যালেন্সিং বা অন্যান্য কোন বিষয়ে কোনরকম ঘাঠতি টের পায় নি।