মোটরসাইকেলের সাথে আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল ক্লাস নাইন থেকে। এখন আমি ভার্সিটির ছাত্রী এবং একজন স্কুটার রাইডার। আমি নিজ স্বাধীনতার সাথে ভ্রমণ করতে পছন্দ করি এবং এর জন্য আমার প্রয়োজন সর্বদা নিজের একটি যানবাহন। যদিও আমি মোটরবাইক কিনতে চেয়েছিলাম তবে কিছু কারনে সেটি আর হয়ে উঠেনি।আমার নিয়মিত ভ্রমণের জন্য, ক্যাম্পাসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে, বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়াতে খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োজন ছিল একটি বাইক বা স্কুটারের এবং সব দিক ভেবেই আমি একটি স্কুটার কিনে ফেললাম। আমার কেনা স্কুটারটি হিরো কম্পানির তৈরি এবং এর নাম হিরো প্লেজার। ১৫০০ কিলোমিটার যাত্রা ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং এই দু'চাকার বাহনের সাথে আমার একটি ভাল অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছে। কয়েকটি বিরক্তিকর বিষয় ছাড়া ইঞ্জিন, ব্রেকিং, কন্ট্রোলিংয়ের মাধ্যমে আমি এই স্কুটারটি থেকে ভাল সাড়া পাচ্ছি এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এটি যেকনো পোশাক কিংবা পরিস্থিতিতে চালানোর জন্য আরামদায়ক। মূলত আমি শহরের রাস্তাতেই বেশি রাইড করে থাকি তাই বড় কোন সমস্যায় এখনও পড়িনি এবং আশা করি পারফরম্যান্স একই রকম থাকবে।
এই স্কুটারটি চালানোর সময় আমি যে ভাল দিকগুলো পেয়েছি:
- রাইডিং সীটের নীচে জিনিসপত্র রাখার জন্য যথেষ্ট জায়গা রয়েছে, এমনকি রাইডার যেখানে পা রাখে সামনেও অনেকটা প্রয়োজনিও জিনিসপত্র নেয়া যায়।
- দ্রুত স্পিড উঠে যা আমাকে আনন্দের সাথে রাইড করার অনূভুতি দেয়।
- জিনিসপত্র বহন সত্যিই সহজ।
- আমি যেকোন ধরণের পোশাক পরে এটি চালাতে পারি।
- মোটামোটি ভালই মাইলেজ পাচ্ছি।
- এখন পর্যন্ত ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স খুবই ভাল।
এই স্কুটারটি চালানোর সময় কয়েকটি খারাপ দিক যা আমি দেখেছি:
-মহিলা পিলিয়নদের জন্য এই স্কুটারটিতে ফুটরেস্ট নেই
-আমি সত্যিই এএইচও প্রযুক্তি বিশেষ পছন্দ করি না, কারণ এটি আমাদের দেশের জন্য হয়তো উপযুক্ত নয়।
-পেছনের সিটটি একটু বেশি প্রশস্ত আমার মনে হয়, বসার সময় বিশেষ করে পুরুষ পিলিয়ন অস্বস্তি বোধ করে।
হিরো প্লেজারই কেন?
মূলত আমি অল্প দামের মধ্যে সবসময় ব্যবহার জন্য একটি স্কুটার খোজার চেষ্টা করছিলাম। এটি খুজতে গিয়ে আমি হিরো প্লেজার দেখতে পায় এবং এটি আমার বাজেটের ভিতর ছিল সেই সাথে আমার পছন্দও হয়। আমার কাছে এই স্কুটারটির ডিজাইন এবং স্টাইল সত্যই পছন্দ হয় তাই আর দেরি না করে কিনে ফেলি।
এবার আমার স্কুটারটির সাথে আমার কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সেয়ার করার পালা। ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলার নেই কারণ আমি এই স্কুটারটি মাত্র ছয় মাসের মত ব্যবহার করছি এবং আমার অভিজ্ঞতা এখনও অবধি বলছে আমি সন্তোষ্ট। আমি ব্যক্তিগতভাবে ৭০ কিলোমিটার স্পিড এবং ৬০ কিলমিটার মাইলেজ পেয়েছি। যদিও আমাকে জানানো হয়েছিল যে এটি প্রায় ৭০ এর কাছাকাছি মাইলেজ দেবে তবে এটি যথেষ্ট বলে আমি মনে করি, এবং আমি মাইলেজটি নিয়ে খুশি তাই ইঞ্জিনটি আমাকে ভাল সাড়া দিচ্ছে বলে আমি মনে করছি। যদি আমি কন্ট্রোলিংয়ের বিষয়ে বলি তবে স্কুটারটি এই দিকেও আমাকে হ্যাপি করতে পেরেছে তবে, দ্রুতগতিতে চলার সময় আমি মনে করি হালকা ওজনের কারণে কিছুটা ভাইব্রেশন ফিল করেছি। কমফর্টের সম্পর্কে কোন অভিযোগ নেই, স্কুটারগুলির রাইডিং পজিশনের জন্য সবসময় আরামদায়ক হয়, কোন গিয়ার নেই,
ক্লাচ ধরার ঝামেলা নেই, কেবলমাত্র পিক আপ দাও আর যাও। টায়ার এবং সাসপেনশন দুটিই এখন পর্যন্ত ভাল পারফরম্যান্স দিচ্ছে এবং যেকনো রাস্তয় সব ধরণের পরিস্থিতিতে আমি মনে করি সেগুলি পারফেক্ট।
সবশেষে আমি বলতে চাই যে মাঝে মধ্যে আমি রাস্তায় অসুবিধার মুখোমুখি হয়েছি কারণ হয়তো আমি একজন মহিলা বা স্কুটার রাইডার তাই, যেমন অন্যেরা পাশ কাটিয়ে সব সময় এগিয়ে যেতে চায়, আমাকে রাস্তার একপাশে রাখার চেষ্টা করে ইত্যাদি তবে আমি আমার স্কুটারের সাথে ঘোরাঘুরির স্বাধীনতাও উপভোগ করি। সুতরাং আমি সমস্ত বাইক প্রেমীদের বলবো স্কুটার চালিয়ে দেখবেন দেখা যেতে পারে আপনি বাইকের থেকেও ভালো অনুভব করতে পারেন। আজ এই পর্যন্তই থাক, আশা করি আরও অভিজ্ঞতা নিয়ে আসব আপনাদের সামনে।
নিরাপদে রাইড করুন, নিরাপদ থাকুন, এবং হেলমেট পরুন।