প্রত্যহিক জীবনে চলার পথে মোটরসাইকেল একটি অপরিহার্য জিনিস বিশেষ যখন তরুন কাউকে তার কর্মের প্রয়োজনে অনেক বেশি দৌড়াদৌড়ি করা লাগে। আমার প্রয়োজন বিবেচনার সাধারন একটি মোটরসাইকেল হলেও আমার চলতো কিন্তু আমি চেষ্টা করি সবসময় ভালটা নেওয়ার তাই সর্বশেষ প্রযুক্তি এফআই এবিএস সম্বলিত হিরো থ্রিলার বাইকটা আমার মনে ধরে কারন এই বাইকটা উক্ত প্রযুক্তি সম্পন্ন এবং এফআই এবিএস সম্পন্ন হউয়ার পরেও উক্ত সেগমেনটের বাইকের মধ্যে সবচেয়ে কম দাম হলো এই বাইকটার। এখন কমদাম শুনলে আমাদের বাংগালী জাতির একটা মানসিকতা হলো “কম দাম মানে কম গুনমান”। আসলে আমরা সবাই ব্যস্তবতা দেখে দেখেই অভ্যাস্ত তাই এমন চিন্তায় নেতিবাচক কিছু বলার নেই কারন আমি নিজেও এই ব্যাপারটা নিয়ে ভেবেছিলাম কিন্তু ব্রান্ড যখন হিরো তারমানে কম দামে সবসময় ভাল কিছু।
এখনকার মোটরসাইকেলের বাজারে হিরোই হলো একমাত্র ব্রান্ড যা সবচেয়ে কমদামে ভাল জিনিস দিচ্ছে তাই আমি তাদের থ্রিলার বাইকটা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনরকম দ্বিধাবোধ করিনি। আজ প্রায় ৫০ দিন হলো আমি বাইকটা ব্যবহার করছি আর এখন পর্যন্ত চালিয়েছি প্রায় ১৯০০ কিলোমিটার।
মজার ব্যাপার হলো নতুন অবস্থায় এখন পর্যন্ত এই বাইকটার সবকিছুই আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে। শুধুমাত্র কয়েকটা দিক আমার কাছে মনে হয়েছে যেগুলা আরও ভাল হতে পারতোঃ
-এই বাইকটার আউটলুক এমনিতে অনেক সুন্দর কিন্তু আমার মনে করি এর গ্রাফিক্যাল আউটলুক কোম্পানী চাইলে আরও ভাল হতে পারতো। প্লেইন লাল/সাদা/নীল না দিয়ে তার ওপর কিছু ডিজাইন দিলে এর সৌন্দর্য অনেক বাড়ানো সম্ভব ছিল।
-ফুয়েল ট্যাংকের ডিজাইনটা অবশ্যই আরও সুন্দর করা সম্ভব।কোম্পানি হয়তো এই বাইকের পরের ভার্শনগুলাই এই পরিবর্তন আনবে।
-কিছু স্মার্ট ফীচার যেমন ব্লুটুথ কানেকশন বা এমনকিছু থাকলে খুব ভাল হতো যা দিয়ে ফোনের সাথে কানেক্ট করা যায়।
আসলে কাস্টমার হসেবে চাহিদার তো শেষ হবে না আবার কোম্পানীকেও দামের সাথে পন্যের মান ফীচারের সাথে সামঞ্জস্য করতে হবে তাই আমি আশা করবো পরবর্তীতে হিরো কতৃপক্ষ যেন স্মার্ট ফিচারের দিইকে বেশি মনযোগ দেয়।
মাইলেজ নিয়ে বিস্তারিত বলতে গেলে আমি এখন সেভাবে খেয়াল করিনি যে মাইলেজ ঠিক কতটা পাচ্ছি কিন্তু আমার ধারনা আমি ১৬০সিসি বাইক হিসেবে যে মাইলেজটা পাচ্ছি তার থেকে কিছুটা বেশি হলে ভাল হতো। আমার ধারনা আমি বর্তমানে মাইলেজ পাচ্ছি ৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটার এখন এফআই প্রযুক্তি সম্পন্ন একটা বাইকে যদি ৪৫-৫০ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ না পাই তবে সেটা প্রশংসার দাবী রাখে না।
বাইকটা নতুন অবস্থায় থাকার পরেও আমি আমার গুরুত্বপুর্ন প্রয়োজনে একদিন ৩৫০ কিলোমিটার চালিয়েছি এবং বলা বাহুল্য যে সেসময় অনেক শীত ছিল তাই আমি বেশ কয়েকবার ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়া টের পেয়েছি যা এখন হচ্ছে না বললেই চলে। সে যাত্রাতেই আমি সর্বোচ্চ গতি উঠিয়েছিলাম ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা যেখানে আমি সবকিছু ঠিকঠাক মতই ম্যানেজ করতে পেরেছি।
এখন পর্যন্ত ব্যবহার করে আমি আমার অতীত অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু বুঝতে পারছি যে সামনের দিনগুলাতে অনেক ভাল পারফরমেন্স এই বাইক থেকে পাবো। সর্বোপরি হিরোর বর্তমানে যে নামকরা মডেল গুলা আছে তার থেকেও ভাল পারফরমেন্স পাওয়ার আশা করছি।