হোন্ডা সিবি হরনেট ১৬০আর সিবিএস ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা ১৫০০০কিমি অন্তু

Honda Hornet 160R CBS আমার অনেক সখের বাইক। বাংলাদেশের বাজারে যখন এটি প্রথম এসেছিল তখন থেকেই বাইকের প্রতি আমার একটা ভালোবাসা ছিল এবং মনে মনে সংকল্প করেছিলাম যে যদি কোন দিন বাইক কিনি তাহলে এই বাইকটা কিনব। আমার জীবনে সর্ব প্রথম বাইক হচ্ছে Honda Hornet 160R CBS। কেন জানিনা এই বাইকটির প্রতি অন্য রকম একটি ভালোবাসা ও মায়া কাজ করে। আমি অনেক বাইক রাইড করেছি কিন্তু এই Honda Hornet 160R CBS বাইকের মত মজা কোন বাইকেই পাইনি। বিশেষ করে এই সেগমেন্টের মধ্যে যে বাইকগুলো আছে সেগুলোর মধ্যে আমার কাছে Honda Hornet 160R CBS বাইকটাই বেশি ভালো লাগে। যখন বাইকটা কেনার ইচ্ছা ছিলো তখন বাজেট ছিলো না এবং এখন আমার বাজেট হয়েছে এবং স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি এখন হোন্ডার লেটেস্ট সিবিএস ব্রেকিং সমৃদ্ধ বাইক Honda Hornet 160R CBS কিনতে সক্ষম হয়েছি। গত ১ বছর যাবত আমি এই বাইকটি ব্যবহার করছি এবং এই সময়ের মধ্যে আমি রাইড করেছি ১৫ হাজার কিলোমিটার।

আমি যে জন্য বাইক কিনেছি সেগুলো আমাকে পুরোপুরি দিতে সক্ষম হয়েছে কি না এবং এই বাইক থেকে আমি কি কি সমস্যা পাচ্ছি সেগুলো স্বল্প আকারে মোটরসাইকেলভ্যালীর মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন।

ভালো দিকের মধ্যে আমি যা যা পেয়েছি

বাইকের সবচেয়ে ভালো দিক আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে তা হল ব্রেকিং সিস্টেম। বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেম খুবই চমৎকার এবং আমি ব্রেকিং করে খুবই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। সিবিএস ব্রেকিং থাকার কারনে আমি ফিডব্যাকটা সামনে এবং পেছনের চাকা থেকে খুব ভালোই পাচ্ছি। যে কোন খারাপ পরিস্থিতিতে বাইকটি ব্রেকিং করে আমি আমার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারি।

ব্রেকিং এর পরে আরেকটি যে বিষয় আমার ভালো লেগেছে তা হল এ বাইকের কন্ট্রোলিং। সামনে এবং পেছনের মোটা চাকা, মনোশক সাসপেনশন ইত্যাদির সমন্বয়ে আমি খুব ভালো কন্ট্রোলিং পাচ্ছি। এই সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের সাথে কন্ট্রোলিং নিয়ে তুলনা করে দেখেছি যে এই বাইকের কন্ট্রোল আমার কাছে বেশি ভালো মনে হয়েছে।

এর পরে আমার কাছে এ বাইকের ডিজাইনটাও অনেক বেশি ভাল মনে হয়েছে। বাইকের যে সুন্দর গ্রাফিক্যাল বিষয় গুলো রয়েছে তা চোখ ধাঁধানো এবং বডির সাথে পুরোপুরি ম্যাচিং করেছে।

সিটিং পজিশন থেকে আমি খুব ভালো আরাম অনুভব করি। এক দিনে আমি প্রায় ৩০০ কিলোমিটার রাইড করেছি এবং এই রাইড করে আমার কাছে সিটিং পজিশনের ফিডব্যাক চমৎকার মনে হয়েছে। সিটিং পজিশনের পাশাপাশি হ্যান্ডেলবারটাও অনেক সুন্দরভাবে স্থাপন করা হয়েছে যার ফলে কোন ব্যাকপেইন বা দীর্ঘ রাইডে কোন অস্বস্তি বোধ হয় না। আমি মনে করি যে সকল বয়সের রাইডারের জন্য এই বাইকটি একদম পারফেক্ট।

এইবার বলি এই বাইক নিয়ে আমার মন্দ অভিজ্ঞতা

প্রথমে আসি এ বাইকের চেইন সেটের বিষয়ে, আমার কাছে মনে হয়েছে যে বাইকে যে চেইন সেট দেওয়া আছে সেটা একটু পরিবর্তন করা উচিৎ কারণ আমি যখন বাইকটি রাইড করি তখন সেই থেকে একটি অস্বস্তিকর শব্দ আসে এবং আমার কাছে একটু খারাপ অনুভব হয়। ওরিং চেঞ্জ হওয়া সত্বেও বাইকের ট্রেন থেকে শব্দ আশাটা একটু অস্বস্তি কর। তবে এক্ষেত্রে পারফরমেন্সে কোন কমতি হয় না।

আরেকটি যে বিষয়ে আমার খারাপ লেগেছে তা হল এ বাইকের মাইলেজ। ১৬০সিসির বাইক হিসেবে আমার কাছে মাইলেজ একটু কম মনে হয়েছে। শহরের মধ্যে আমি বাইক থেকে মাইলেজ পাচ্ছি ৩৫ কিলোমিটার প্রতিলিটার এবং হাইওয়েতে মাইলেজ পাচ্ছি ৪০ কিলোমিটার প্রতিলিটার। আমার মতে এইবাইকের মাইলেজ ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার গড়ে হলে খুবই ভালো হতো।

বাইক থেকে আমি টপ স্পীড পেয়েছি ১১৯ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। ইঞ্জিনের পাওয়ার ও শক্তি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং আমি আশাবাদী যে এই ইঞ্জিন অনেক দিন টেকসই হবে। যেহেতু হোন্ডার ইঞ্জিন সম্পর্কে আমাদের সকলের একটি ধারণা আছে তাই সে ধারণা থেকেই বলা যায় যে এই ইঞ্জিনটি অবশ্যই অনেক লংলাস্টিং হবে। আমার জীবনের প্রথম বাইক হচ্ছে এই Honda Hornet 160R CBS তাই আমি এই বাইকটি খুব যত্ন করে রেখেছি এবং আমি মনে মনে সংকল্প করেছি যে এই বাইকটি আমি কোন দিন বিক্রি করবো না। আমার পরবর্তী যে বাইক কেনার ইচ্ছায় থাকুক না কেন এই বাইকটি একটি স্মৃতি হিসেবে রেখে দিব।

আশা করি আপনারা Honda Hornet 160R CBS নিয়ে খুব ভালো ধারণা পেয়েছেন এবং বাইক সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আমি আমার স্বল্প অভিজ্ঞতা থেকেই আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। সবাই ভালো থাকবেন।