বাইকের ব্যাপারে ভাবতে গেলে আমাকে মন খুলেই বলতে হবে যে আমার কাছে মোটরসাইকেল হলো আমার সখ, আবেগ এবং ভালবাসার আরেক নাম কারন বাইকের প্রতি আমার দুর্বলতা অনেক ছোট থেকেই। মোটরসাইকেল চালানো শিখেছিলাম হোন্ডা কোম্পানির ছোট মোটরসাইকেল দিয়ে আর আমার পরিবারে বেশিরভাগ হোন্ডা কোম্পানির মোটরসাইকেলই বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে তাই এইদিক দিয়ে আমার হোন্ডা বাইকের প্রতি আগ্রহ বেশি।
তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হোন্ডার পন্য তালিকায় এমন কিছু বাইক এবং মডেল যুক্ত হয়েছে যা ব্রান্ড হিসেবে হোন্ডাকে অনেক ভাল পর্যায়ে নিয়ে এসেছে বলে আমি মনে করি। কারন একজন তরুন অথবা সিনিয়র পার্সন, যে ই হোন্ডার শোরুমে বাইক কেনার উদ্দেশ্যে যাক না কেন হোন্ডার পন্য ভ্যারাইটি থেকে নিজের পছন্দমত মোটরসাইকেল পাবেনই।
আমি যখন আমার বাইক কেনার কথা চিন্তা করছিলাম সেসময় হোন্ডা তার স্বনামধন্য মডেল হোন্ডা হর্নেট বাজারে কেবলমাত্র নিয়ে এসেছে কিন্তু সেসময় আমি বাইক কেনবার কথা ভাবলেও বাইক কেনার জন্যে পুরোপুরি প্রস্তুত না তাই ভাবলাম আমার প্রস্তুতি নিতে নিতে হয়তো এই মডেলের নতুন আপডেট চলে আসবে।
হলোও ঠিক তাই, আমি আমার হর্নেট ডিলাক্স সিবিএস নেওয়ার আগে এই হর্নেটেরই দুয়েকটা মডেল বাজারে চলে এসেছিলো।
যাহোক আমার সিবি হর্নেট ১৬০আর ডিলাক্স সিবিএস আমি এখন পর্যন্ত চালিয়েছি প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার আর আমার মোটরসাইকেলের বয়স প্রায় ৩ মাস। বলাবাহুল্য যে আমি এখন পর্যন্ত আমার বাইকে খারাপ বলার মত কোনকিছুই খুজে পাইনি। বরং আমি খুশি মনেই বলতে চায় যে আমি যে আশা নিয়ে হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ডিলাক্স সিবিএস কিনেছিলাম তার অনেকটাই বাস্তব রুপ আমি বাইকের পারফরমেন্সে দেখতে পাচ্ছি।
এখন পর্যন্ত একটা বিষয়ে আমি একটু অস্বস্তিকর অনুভব করেছি আর তা হলো পিলিয়ন নিয়ে বাইক চালানোর সময় ব্রেক করলে রাইড করা অবস্থায় আমাকে ফুয়েল ট্যাংকের সাথে ঠেসে যাওয়া লাগে।
গেল ৩ মাসের মধ্যে আমার বাইকটা আমি একদিনে একটানা চালিয়েছি ১৪০ কিলোমিটার আর সর্বোচ্চ গতি উঠিয়েছি ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। এই সময় আমি সর্বোচ্চ গতি উঠিয়েইঞ্জিন হালকা গরম হউয়া ছাড়া কোন সমস্যা পাই নি। বলা যায় আমি হোন্ডা কোম্পানীকে যেভাবে চিন্তা করি ঠিক সেভাবেই চরম পর্যায়ে বাইকের পারফরমেন্স পেয়েছি। ইঞ্জিনের পারফরমেন্স এককথায় হোন্ডা বাইকে যেমন হউয়ার কথা ঠিক তেমনই। একটানা রাইড বা সর্বোচ্চ গতি আমি ইঞ্জিনের পারফরমেন্সে কোন ঘাটতি পাইনি তবে যেটা পেয়েছি অর্থাৎ গরম হউয়া, এটা আমার কাছে স্বাভাবিক বলেই মনে হয়েছে। তাছাড়া সময়ের সাথে সাথে ইঞ্জিনের পারফরমেন্স আরও ভাল হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
অন্যদিকে মাইলেজ নিয়ে বিস্তারিত বলতে গেলে আমি কখনই মাইলেজ নিয়ে ভাবি না কারন আমি জানি বাইক যত শক্তিশালী হবে, যত বেশি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন হবে মাইলেজ তত কম হউয়াটাই স্বাভাবিক। হর্ণেটের মত একটা বাইকে যদি ৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পাওয়া যায় তাতেই আমি অনেক খুশি যদিওবা মাইলেজের প্রকৃত হিসাব আমি কখনও পরীক্ষা করিনি তবে বুঝতে পারি যে আমার বাইকটা আমাকে মাইলেজ বেশ ভালই দিচ্ছে।
যদি প্রশ্ন করা হয় যে একই সেগমেন্টের আরও অনেক বাইক থাকার পরেও কেন আমি হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ডিলাক্স সিবিএস নিলাম? এই প্রশ্নের উত্তরের কিছু অংশ আমি ওপরের অংশে দিয়েছি, তারপরেও বলে রাখি যে হোন্ডা আমার অনেক পুরনো দুর্বলতা যার কারনে বাইক কেনার কথা যখন চিন্তা করি তখন হোন্ডা ছাড়া অন্য কোন ব্রান্ডের কথা আমার মাথায় আসে নি। তাছাড়া হোন্ডা ব্রান্ডের বাইকের সাম্প্রতিক পারফরমেন্স, ব্রান্ড ভ্যালু ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমাকে চিন্তা করতে হবে না ভেবেই এই বাইক কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া।